Advertisement
২৬ নভেম্বর ২০২৪
India

Tibet-China: তিব্বতি ধর্মে চিন নাক গলাতে পারে না: গ্যাংবুং

বৌদ্ধধর্মের আঁতুড়ঘর হিসেবে ভারত শান্তি বজায় রাখতে চায়। সেটাই স্বাভাবিক। কিন্তু প্রয়োজনে ভারতকেও চিনের আগ্রাসী মনোভাবের বিরুদ্ধে কড়া হতে হবে।

তাওয়াং মঠের প্রধান লামা গ্যাংবুং রিনপোচে।

তাওয়াং মঠের প্রধান লামা গ্যাংবুং রিনপোচে। নিজস্ব চিত্র।

নিজস্ব সংবাদদাতা
গুয়াহাটি শেষ আপডেট: ২৬ অক্টোবর ২০২১ ০৮:৩৪
Share: Save:

পরবর্তী দলাই লামা কে হবেন, তা ঠিক করার কোনও অধিকার কমিউনিস্ট ও নাস্তিক চিনের নেই বলে দাবি করলেন তাওয়াং বৌদ্ধ মঠের প্রধান লামা তথা অ্যাবট। তাওয়াংয়ের গাদেন নামগিয়াল লাৎসে এশিয়ার সবচেয়ে বড় বৌদ্ধ মঠ। তার অ্যাবট অর্থাৎ প্রধান ভিক্ষু গ্যাংবুং রিনপোচের মতে, তিব্বতিদের প্রধান ধর্মগুরু কে হবেন, তা একেবারেই তিব্বতি বৌদ্ধদের আধ্যাত্মিক ও ধর্মীয় বিষয়। চিন, যারা ধর্মেই বিশ্বাস রাখে না, তাদের এ ক্ষেত্রে কোনও ভূমিকাই থাকার কথা নয়।

তাওয়াংয়ের অ্যাবটের বক্তব্য, চিন নিজেকে সুপার পাওয়ার হিসেবে দেখতে চায়। সে ক্ষেত্রে ভারত সবচেয়ে বড় বাধা বলে মনে করে বলেই চিন ভারতের সীমান্তে অস্থিরতা বজায় রাখতে চাইছে। বৌদ্ধধর্মের আঁতুড়ঘর হিসেবে ভারত শান্তি বজায় রাখতে চায়। সেটাই স্বাভাবিক। কিন্তু প্রয়োজনে ভারতকেও চিনের আগ্রাসী মনোভাবের বিরুদ্ধে কড়া হতে হবে।

বর্তমান চতুর্দশ দলাই লামার উত্তরসূরি নিয়ে বিতর্ক অনেক দিনের। ২০০৪ সালে দলাই লামা বলেছিলেন, এই প্রথা অব্যাহত থাকবে কি না, তা তিব্বতের মানুষের ইচ্ছার উপরে নির্ভরশীল। ২০০৭ সালে তিনি বলেছিলেন, বুদ্ধের পরবর্তী অবতার হিসেবে পঞ্চদশ দলাই লামা হতে পারেন কোনও মহিলা। আবার ২০১১ সালে দলাই লামা তাঁর উত্তরসূরি কী ভাবে চিহ্নিত হবেন, তার বিবরণ প্রকাশ করেন। ২০১৫ সালে তিব্বত পিপল্‌স কংগ্রেসের স্ট্যান্ডিং কমিটি বলে, বুদ্ধের পরবর্তী অবতারের আবির্ভাব হবে কি না, তা ঠিক করার অধিকার বর্তমান দলাই লামার নেই। সুপ্রাচীন আধ্যাত্মিক ও ঐতিহাসিক ধারা মেনেই পরের দলাই লামাকে খুঁজে বার করা হবে। ২০১৯ সালে চতুর্দশ দলাই লামা ফের বলেন, এই পুনর্জন্ম প্রথার মধ্যে কোথাও সামন্ততান্ত্রিক মানসিকতা রয়েছে, যা যুগোপযোগী নয়। ভারতের বৌদ্ধদের মধ্যেও পুনর্জন্মের প্রথা নেই। তাই বুদ্ধের পুনর্জন্ম প্রথার অবসান দরকার। তিনি আরও জানিয়েছিলেন, দলাই লামা আর তিব্বতের সামগ্রিক শাসনযন্ত্রের প্রধান থাকবেন না, তিনি হবেন শুধুই আধ্যাত্মিক শীর্ষগুরু।

চিন ২০০৭ সালেই ঘোষণা করেছে তিব্বত যেহেতু তাদের অধীনে, তাই তিব্বতি বৌদ্ধধর্মের সব প্রধানের নির্বাচন হতে হবে চিনা সরকার স্বীকৃত। অন্যথায় তা অবৈধ ঘোষণা করা হবে। ইতিমধ্যে বেজিং পরের দলাই লামা নির্বাচনের প্রক্রিয়া শুরু করেছে। কিন্তু বিশ্বজুড়ে তিব্বতিরা যে চিনের ‘চাপিয়ে দেওয়া’ বুদ্ধের অবতারকে মেনে নেবে না, সেটা বেজিংও বুঝতে পারছে।

১৬৮০-৮১ সালে মেরেক লামার তৈরি তাওয়াং মঠের প্রধান মনে করেন, ১৩৯১ সালে প্রথম দলাই লামার আগমন থেকে শুরু হওয়া পুনর্জন্ম প্রথা চলবেই। সাংবাদিকদের সঙ্গে মত বিনিময়ের সময়ে গ্যাংবুং রিনপোচে বলেন, “তিব্বতিদের ধর্মাচারে হস্তক্ষেপ করার কোনও অধিকার নেই চিনের। তারা দলাই লামার পদের রাজনীতিকরণ করে আমাদের ধর্ম ধ্বংস করতে চাইছে। তিব্বতি ধর্ম ও সংস্কৃতি রক্ষায় ভারতের সাহায্য তাই খুব প্রয়োজন।”

তিব্বতের পোতালা প্রাসাদের পরেই তিব্বতিদের কাছে তাওয়াং মঠের গুরুত্ব। কারণ ষষ্ঠ দলাই লামা এখানে জন্মেছিলেন। চিন তিব্বতের দখল নেওয়ার পরে ১৯৫৯ সালে বর্তমান দলাই লামা তাওয়াং হয়ে পালিয়ে ভারতে আশ্রয় নেন। তখন থেকেই চিন তাওয়াং-সহ অরুণাচলকে নিজেদের অংশ বলে দাবি করছে।

অন্য বিষয়গুলি:

India China Dalai Lama Tibet
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy