ভারাভারা রাও। ফাইল চিত্র।
অশীতিপর কবি স্মৃতিভ্রংশে আক্রান্ত। কথাবার্তা বন্ধ। মুত্রথলিতে সংক্রমণ বাড়ায় বিছানা ছেড়ে উঠে বসতেও পারেন না। সম্প্রতি কোভিডেও আক্রান্ত হয়েছিলেন তিনি। ভীমা-কোরেগাঁও মামলায় অভিযুক্ত এই ভারাভারা রাওয়ের বিরুদ্ধে কঠোরতম সন্ত্রাস-দমন আইন প্রয়োগ করেছে এনআইএ। মুম্বইয়ের কাছে তালোজা কারাগারে তিনি বন্দি। শারীরিক পরিস্থিতির জন্য তাঁর স্ত্রী জামিনের আবেদন করলেও এ দিন তা মঞ্জুর করেনি হাইকোর্ট। এর পরে বৃদ্ধ ও অশক্ত ভারাভারাকে একটি সুপার স্পেশালিটি হাসপাতালে ভর্তি করানোর নির্দেশ চেয়ে আবেদন জানানো হলে, ২৪ ঘণ্টার মধ্যে ভিডিয়োর পর্দায় তাঁকে পরীক্ষা করে ডাক্তারি রিপোর্ট দিতে বলেছে হাইকোর্ট।
সম্প্রতি একটি ফৌজদারি অপরাধে প্রধান অভিযুক্ত হিসেবে শাসকদলের অনুগত এক সাংবাদিককে গ্রেফতারের পরে বন্দি রাখায় এই তালোজা কারাগারের নাম সংবাদ শিরোনামে আসে। তাঁকে জামিন দিয়ে সুপ্রিম কোর্ট ব্যক্তিগত স্বাধীনতা ও মানবাধিকার নিয়ে অনেক কথা বলে। মন্তব্য করে— জামিন দেওয়াটাই নিয়ম, জেলের নির্দেশ ব্যতিক্রম হওয়া উচিত। ভীমা কোরেগাঁও মামলায় গ্রেফতার করা বিশিষ্ট জনেদের মুক্তির দাবিতে আন্দোলনকারীরা প্রশ্ন তুলেছেন, সবার ক্ষেত্রে কেন একই ব্যবস্থা কার্যকর হবে না? বয়স্ক, অসুস্থ, অশক্ত ভারাভারা রাও, সুধা ভরদ্বাজ, স্ট্যান স্বামীদের বছরের পর বছর জেলে পচতে হবে তাঁরা শাসক দলের ধামাধরা নন বলে?
ভীমা কোরেগাঁও মামলায় সহ-অভিযুক্ত স্ট্যান স্বামী বুধবার জেল থেকে কয়েক জন আইনজাবীর কাছে জরুরি বার্তা পাঠিয়ে বলেন, ভারাভারা রাও ভয়ানক অসুস্থ। এখনই উপযুক্ত চিকিৎসার বন্দোবস্ত না-করা হলে যে কোনও সময়ে মারা যেতে পারেন। এর পরেই তাঁর স্ত্রী ও পরিবার হাইকোর্টে জামিনের আবেদন করেন। আইনজীবি ইন্দিরা জয়সিংহ আদালতে ভারাভারার শারীরিক অবস্থার বর্ণনা করে বলেন, “তিনি স্মৃতিভ্রষ্ট, ডায়াপার পরিয়ে রাখতে হয় তাঁকে। উঠে বসার অবস্থায় নেই। আদালতে হাজির হতে বললেও পারবেন না। এনআইএ কী করে মনে করে, জামিন দিলে তিনি গা-ঢাকা দেবেন?” এনআইএ ও সরকারের কৌঁসুলিরা দাবি করেন, এর আগে জুলাইয়ে তাঁকে যে বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছিল, তার জন্য আদালতের ফরমানের প্রয়োজন হয়নি। শরীর খারাপ হওয়ায় সরকার নিজেই তাঁর স্ত্রীর আবেদনের ভিত্তিতে সেই নির্দেশ দিয়েছিল। এখন সরকারি হাসপাতালের চিকিৎসায় ভরসা করছেন জেল কর্তৃপক্ষ। সেখানে পরিষেবার খামতি হচ্ছে বলে মনে হয় না।
বিচারপতি এর পরে নির্দেশ দেন, নানাবতী হাসপাতালের যে চিকিৎসক দল এর আগে তাঁকে দেখেছে, তাঁরা ভিডিয়োয় জেলে থাকা ভারাভারা রাওয়ের পরিস্থিতি দেখে রিপোর্ট দিন। ‘আজ বা কালের মধ্যে’ এই পরীক্ষা করতে হবে। এর পরে মঙ্গলবার পরবর্তী শুনানির দিনে সেই রিপোর্ট দেখে তিনি সিদ্ধান্ত জানাবেন, ভারাভারাকে বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি করা হবে কি না।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy