সংসদের বাইরে রাহুল গান্ধীর নেতৃত্বে আদানি ঘুষ-কাণ্ড নিয়ে বিরোধীদের ধর্নার জবাবে আজ সনিয়া গান্ধীর সঙ্গে ‘ভারত বিরোধী শক্তির যোগাযোগ’-এর অভিযোগ তুলল বিজেপি। বেছে বেছে সোমবার সনিয়া গান্ধীর জন্মদিনেই।
বিজেপি সভাপতি তথা রাজ্যসভার নেতা জে পি নড্ডা রাজ্যসভায় অভিযোগ তুলেছেন, ‘‘জর্জ সোরসের (আমেরিকান ধনকুবের) সঙ্গে গান্ধী পরিবারের সম্পর্ক দেশের নিরাপত্তার জন্য উদ্বেগজনক।’’ সংসদ বিষয়ক মন্ত্রী কিরেণ রিজিজুও দাবি করেন, ‘‘সোরস এবং সনিয়ার যোগ যথেষ্ট উদ্বেগের।’’ এর জেরে আজ ফের লোকসভা ও রাজ্যসভার অধিবেশন ভন্ডুল হয়ে যায়। তাঁর মন্তব্যের প্রতিবাদ করায় রিজিজু আপ-এর সঞ্জয় সিংহকে ‘রাজ্যসভার টেবিলের উপরে নাচনেওয়ালা’ বলে আখ্যা দেন। রাজ্যসভার বিরোধী দলনেতা মল্লিকার্জুন খড়্গে বলেন, ‘‘কক্ষে অনুপস্থিত এক জন সাংসদের নামে মিথ্যা অভিযোগ এনে তাঁর ভাবমূর্তি নষ্ট করার চক্রান্ত করেছে বিজেপি।’’ কংগ্রেস-সহ বিরোধীরা অভিযোগ তোলেন, বিজেপিই সংসদের অধিবেশন ভন্ডুল করতে চাইছে। কারণ, বিজেপি সংসদে আদানি প্রসঙ্গে আলোচনা চায় না।
গত সপ্তাহে ফরাসি সংবাদসংস্থা মিডিয়াপার্ট-এর রিপোর্টের ভিত্তিতে বিজেপি অভিযোগ তুলেছিল, জর্জ সোরস ভারতে অস্থিরতা তৈরির জন্য অর্থ খরচ করছেন। সোরসের মদতেপুষ্ট ওসিসিআরপি সংবাদ সংস্থাই দাবি করেছিল, গৌতম আদানি ঘুষ দিয়ে বরাত আদায় করেছেন। তাই নিয়ে কংগ্রেস হইচই করছে। কিন্তু মিডিয়াপার্ট সংস্থার পাল্টা দাবি, বিজেপি রাজনৈতিক স্বার্থে তাদের রিপোর্ট বিকৃত করছে।
বিজেপি নেতৃত্বের স্পষ্ট অবস্থান হল, কংগ্রেস আদানি ঘুষ-কাণ্ড তথা প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে আদানির সম্পর্ক নিয়ে যত দিন সরব থাকবে, তত দিন বিজেপিও জর্জ সোরসের সঙ্গে গান্ধী পরিবারের সম্পর্ক ও সোরসের নির্দেশে গান্ধী পরিবার ভারতের ক্ষতি করতে সক্রিয় বলে অভিযোগ তুলবে। এই পরিস্থিতিতে চলতি সপ্তাহের শেষে লোকসভায় এবং আগামী সপ্তাহের গোড়ায় রাজ্যসভায় সংবিধানের ৭৫তম বর্ষ নিয়ে আলোচনা হবে কি না, তা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। শুক্রবার ও শনিবার লোকসভায় আলোচনার শেষে নরেন্দ্র মোদী জবাবি বক্তৃতা এবং আগামী সোম ও মঙ্গলবার রাজ্যসভায় আলোচনার শুরুতে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ বক্তৃতা দেবেন।
আজও রাহুলের নেতৃত্বে কংগ্রেস-সহ বিরোধী সাংসদরা সংসদের মকরদ্বারের সামনে আদানি ঘুষ-কাণ্ড নিয়ে বিক্ষোভ দেখান। সেখানে নরেন্দ্র মোদী ও গৌতম আদানির মুখোশ পরে দুই কংগ্রেস সাংসদ হাজির হন। রাহুল গান্ধী তাঁদের ‘সাক্ষাৎকার’ নেন। আদানির মুখোশ পরা কংগ্রেস সাংসদ মোদীর মুখোশ পরা সাংসদকে দেখিয়ে বলেন, ‘‘আমি যা বলি, উনি তাই করেন।’’ কেন্দ্রীয় শিক্ষামন্ত্রী ধর্মেন্দ্র প্রধান রাহুলকে ‘কমেডি কিং’ বলে আখ্যা দেন। বিজেপির রাজ্যসভা সাংসদ সুধাংশু ত্রিবেদী সাংবাদিক বৈঠক করে বলেন, ‘‘সনিয়া গান্ধী ফোরাম অব ডেমোক্র্যাটিক লিডার্স ইন এশিয়া প্যাসিফিক সংস্থার সহ-সভাপতি। ওই সংস্থাকে আর্থিক ভাবে সাহায্য করেন সোরস।’’ সিপিএম সাংসদ জর্জ ব্রিট্টাসের প্রশ্ন, তা হলেকেন্দ্র সোরস বা অন্য কারও বিরুদ্ধে পদক্ষেপ করছে না কেন?
এই খবরটি পড়ার জন্য সাবস্ক্রাইব করুন
5,148
1,999
429
169
(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)