Advertisement
২২ নভেম্বর ২০২৪
Allahabad High Court

চিকিৎসক কাফিল খানকে মুক্তির নির্দেশ ইলাহাবাদ হাইকোর্টের

কাফিলের মা নজ়হত পারভিন আদালতে হেবিয়াস কর্পাস পিটিশন দাখিল করে ছেলের মুক্তির আবেদন জানিয়েছিলেন।

চিকিৎসক কাফিল খান

চিকিৎসক কাফিল খান

সংবাদ সংস্থা
লখনউ শেষ আপডেট: ০২ সেপ্টেম্বর ২০২০ ০৩:৩৯
Share: Save:

জাতীয় সুরক্ষা আইনে বন্দি চিকিৎসক কাফিল খানকে মুক্তি দেওয়ার নির্দেশ দিল ইলাহাবাদ হাইকোর্ট। গত বছরের ১২ ডিসেম্বর আলিগড় মুসলিম বিশ্ববিদ্যালয়ে সিএএ-বিরোধী বিক্ষোভে বক্তৃতা দেওয়ার পরে উত্তরপ্রদেশে যোগী আদিত্যনাথের সরকার তাঁকে গ্রেফতার করেছিল। কোর্টের নির্দেশে মঙ্গলবার মধ্যরাতেই তাঁকে মথুরা জেল থেকে মুক্তি দেওয়া হয়।

মুক্ত কাফিল জেল থেকে বেরিয়ে বলেন, যোগী আদিত্যনাথের সরকার রাজধর্ম পালন করার চেয়ে ছেলেমানুষি জেদ দেখাতেই বেশি ব্যস্ত। তাঁর আশঙ্কা, আবার হয়তো নতুন কোনও একটা মামলায় তাঁকে জড়িয়ে দেওয়া হতে পারে।

এর আগে ইলাহাবাদ হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতি গোবিন্দ মাথুরের নেতৃত্বাধীন ডিভিশন বেঞ্চ আজ বলে, কাফিলের বক্তৃতায় আলিগড়ে হিংসা ছড়িয়েছে— এমন প্রমাণ রাজ্য সরকার দিতে পারেনি। আলিগড়ের বক্তৃতা নিয়ে জেলা প্রশাসন ওই চিকিৎসকের বিরুদ্ধে জাতীয় সুরক্ষা আইন প্রয়োগ করেছিল। ২০২০ সালের ২৯ জানুয়ারি উত্তরপ্রদেশ পুলিশের স্পেশাল টাস্ক ফোর্স কাফিলকে মুম্বই বিমানবন্দর থেকে গ্রেফতার করে। আদালত বলেছে, প্রশাসনের দেওয়া তথ্যপ্রমাণের ভিত্তিতে দেখা যাচ্ছে, কাফিলের বিরুদ্ধে এই ধরনের কঠোর আইন প্রয়োগ এবং যে ভাবে এত দিন তাঁকে আটকে রাখা হয়েছে, তা বেআইনি।

কাফিলের মা নজ়হত পারভিন আদালতে হেবিয়াস কর্পাস পিটিশন দাখিল করে ছেলের মুক্তির আবেদন জানিয়েছিলেন। আদালতে তিনি বলেছিলেন, তাঁর চিকিৎসক-পুত্রের বক্তৃতায় হিংসা ছড়ানোর উদ্দেশ্য ছিল না। বরং জাতীয় সংহতি ও নাগরিকদের মধ্যে ঐক্য গড়ে তোলার কথাই বলেছিলেন কাফিল। তবুও তাঁকে গ্রেফতার করা হয়। এর পর আদালত জামিন দিলেও চার দিন কেটে যাওয়ার পরেও তাঁকে মুক্তি দেওয়া হয়নি। বরং গত ফেব্রুয়ারি মাসে কাফিলের উপর জাতীয় সুরক্ষা আইন প্রয়োগ করা হয়।

ফলে আদালত জামিন দেওয়ার পরেও অভিযুক্তকে মুক্তি না দিয়ে বেআইনি কাজ করেছে প্রশাসন। হাইকোর্ট আজ বলেছে, আলিগড়ে অভিযুক্ত কাফিল খানের ডিসেম্বর মাসের বক্তৃতা নাগরিক সমাজে বিদ্বেষ ছড়িয়েছে এবং ফেব্রুয়ারি মাসের পরেও তাঁকে বন্দি রাখতে হচ্ছে— এই অভিযোগের স্বপক্ষে উপযুক্ত প্রমাণ রাজ্য দিতে পারেনি। পাশাপাশি, আদালতের হস্তক্ষেপ থেকেও অভিযুক্তকে বঞ্চিত করা হয়েছে। কারণ, কাফিলকে বন্দি করে রাখার সময়সীমা বাড়ানোর সরকারি নির্দেশও তাঁর কাছে পৌঁছনো হয়নি। বিচারপতিরা বলেন, ‘‘এ কথা বলতে আমাদের কোনও দ্বিধা নেই যে জাতীয় সুরক্ষা আইনে কাফিল খানকে বন্দি করে রাখা ও তাঁর বন্দিদশার সময়সীমা বাড়ানো— আইনের চোখে এর কোনওটাই যথোপযুক্ত নয়।’’

২০১৭-য় গোরক্ষপুরের বিআরডি মেডিক্যাল কলেজে অক্সিজেন সরবরাহ না-থাকার কারণে অন্তত ৭০ জন শিশুর মৃত্যু ঘটনার পরে কাফিলের নাম গোটা দেশের সামনে আসে। কাফিল শিশুদের বাঁচানোর আপ্রাণ চেষ্টা করা সত্ত্বেও উল্টে তাঁর বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেয় কর্তৃপক্ষ। তাঁকে সাসপেন্ড করা হয়। পরে গ্রেফতারও করা হয়। ওই মামলার শুনানি এখনও চলছে।

হাইকোর্টের রায়ের পরে কংগ্রেস নেত্রী প্রিয়ঙ্কা গাঁধী বঢরা আজ টুইট করেন, ‘‘আশা করছি, উত্তরপ্রদেশ সরকার কোনও দুরভিসন্ধি ছাড়াই কাফিলকে মুক্তি দেবে।’’ রাতেই এল মুক্তি।

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy