Advertisement
০৭ জানুয়ারি ২০২৫
Mubarak Manzil

ধূলিসাৎ ‘মুবারক মঞ্জিল’, প্রশাসনের মদতের অভিযোগ

স্থানীয় বাসিন্দাদের অভিযোগ, পুলিশ-প্রশাসনের একাংশের সঙ্গে হাত মিলিয়ে এক নির্মাণ ব্যবসায়ী ভবনটি ভাঙচুর করেছে। অন্তত একশো ট্রাক্টরে করে সরানো হয়েছে ধ্বংসাবশেষ।

আগরায় ঔরঙ্গজেবের বাসভবন ‘মুবারক মঞ্জিল’ ভেঙে গুঁড়িয়ে দেওয়া হল।

আগরায় ঔরঙ্গজেবের বাসভবন ‘মুবারক মঞ্জিল’ ভেঙে গুঁড়িয়ে দেওয়া হল। ছবি: পিটিআই।

সংবাদ সংস্থা
শেষ আপডেট: ০৫ জানুয়ারি ২০২৫ ০৯:৩২
Share: Save:

আগরায় ঔরঙ্গজেবের বাসভবন ‘মুবারক মঞ্জিল’ ভেঙে গুঁড়িয়ে দেওয়া হল। অথচ মাত্র তিন মাস আগে, গত সেপ্টেম্বরে ওই ভবনটিকে ঐতিহ্যবাহী ও সংরক্ষণযোগ্য স্থাপত্যের তালিকাভুক্ত বলে ঘোষণা করেছিল উত্তরপ্রদেশের প্রত্নতাত্ত্বিক বিভাগ। কয়েক দিন আগে লখনউ থেকে সরকারি আধিকারিকেরা এসে ভবনটি ঘুরে দেখে গিয়েছেন। আর সেই দিনই কয়েক ঘণ্টার মধ্যে ভেঙে গুঁড়িয়ে দেওয়া হয় ১৭ শতাব্দীতে তৈরি ইতিহাস বিজড়িত স্থাপত্যটি।

স্থানীয় বাসিন্দাদের অভিযোগ, পুলিশ-প্রশাসনের একাংশের সঙ্গে হাত মিলিয়ে এক নির্মাণ ব্যবসায়ী ভবনটি ভাঙচুর করেছে। অন্তত একশো ট্রাক্টরে করে সরানো হয়েছে ধ্বংসাবশেষ। স্থানীয় বাসিন্দা কপিল বাজপেয়ী বলেন, ‘‘ঐতিহাসিক ভবনটির প্রায় ৭০ শতাংশ ভেঙে গুঁড়িয়ে দেওয়া হয়েছে। কর্তৃপক্ষের কাছে প্রচুর অভিযোগ জানিয়েছেন স্থানীয়েরা। তার পরেও ধ্বংসলীলা বন্ধ হয়নি। আমরা হাই কোর্টে জনস্বার্থ মামলা দায়ের করার কথা ভাবছি।’’

ব্রিটিশ পুরাতাত্ত্বিক আর্চিবল্ড ক্যাম্পবেল কার্লাইলের ১৮৭১ সালের রিপোর্ট অনুযায়ী, সমুদ্রগড়ের যুদ্ধে জয়লাভের পরে এই ভবনটি নির্মাণ করেন ঔরঙ্গজেব। আবার ঐতিহাসিক রাজকিশোর রাজের মতে, ওই যুদ্ধে জিতে দারাশিকোর ভবনটিকেই ‘মুবারক মঞ্জিল’ নাম দেন ঔরঙ্গজেব। এক সময় এই ভবনে থেকেছেন শাহজহান, সুজা এবং ঔরঙ্গজেব। লাল বেলেপাথরে তৈরি বাড়িটি ব্রিটিশ আমলে পুনর্নির্মাণ করা হয়। সেই সময় শুল্ক দফতর, লবণ দফতর হিসেবে ব্যবহার করা হয় এটিকে। এর পরে ১৯০২ সাল থেকে লোকে বাড়িটিকে চেনে ‘তারা নিবাস’ নামে। নিচু নিচু তোরণ, মিনারে সাজানো ব্রিটিশ ও মোগল আমলের স্থাপত্যরীতির অদ্ভুত মেলবন্ধন এই মুবারক মঞ্জিল।

আগরার জেলাশাসক অরবিন্দ মাল্লাপ্পা বাঙ্গারি জানিয়েছেন, বিষয়টি তাঁরা নজরে এসেছে। তিনি বলেন, ‘‘এই বিষয়ে খবর পেয়েছি। ভারতীয় পুরাতাত্ত্বিক সর্বেক্ষণ এবং রাজস্ব বিভাগ এ বিষয়ে একটি তদন্ত শুরু করেছে। এসডিএম-কে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে রিপোর্ট জমা দিতে বলা হয়েছে। আপাতত, ওই ভবনে কাউকে হস্তক্ষেপ করতে দেওয়া হবে না।’’

এই ঘটনায় তীব্র প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন স্কটিশ ইতিহাসবিদ উইলিয়াম ডালরিম্পল। এক্স হ্যান্ডলে তিনি লিখেছেন, ‘প্রশাসনের সম্পূর্ণ মদতে আগরার অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ ইতিহাস বিজড়িত একটি স্থাপত্য ধ্বংস করে দেওয়া হল। ঠিক এই কারণেই ভারতে পর্যটকের সংখ্যা কমে যাচ্ছে।’

অন্য বিষয়গুলি:

Demolition Mughal Era Agra
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy