সুনীলের ‘তিন সাদা’ আসলে কী? ছবি: সংগৃহীত।
বয়স তেষট্টি। দেখে বোঝার উপায় আছে! পেশিবহুল সুঠাম চেহারা। চুল-দাড়িতেই যা পাক ধরেছে। বলিষ্ঠ চেহারায় বার্ধক্যের বিন্দুমাত্র ছাপ নেই। এখনও নিয়ম করে ভোরে উঠে শরীরচর্চা করেন। খাওয়াদাওয়াও মেপে। সুস্বাস্থ্যে এখনকার প্রজন্মের যে কোনও অভিনেতাকেই বলে বলে গোল খাওয়াতে পারেন। তিনি সুনীল শেট্টি। ষাট পেরিয়েও অবলীলায় যৌবন ধরে রেখেছেন কোন গুপ্ত মন্ত্রে? সুনীলই জানালেন সেই রহস্য।
৮০ শতাংশ ডায়েট, ১০ শতাংশ শরীরচর্চা এবং বাকি ১০ শতাংশ অভ্যাস— এই তিন মন্ত্রেই তেষট্টিতেও সুঠাম ও পেশিবহুল চেহারা ধরে রেখেছেন সুনীল। এখানেই শেষ নয়। বার্ধক্যকে ফাঁকি দেওয়ার আরও এক টোটকাও আছে তাঁর হাতে। তা হল জীবন থেকে ‘তিন সাদা’ বাদা দিয়েছেন অভিনেতা— ভাত, নুন ও চিনি।
ভাত যদিও বা বাদ হল কিন্তু নুন আর চিনি ছাড়া ভাবতেই পারে না এখনকার প্রজন্ম। ভাজাভুজি মানেই অতিরিক্ত নুন। সে পিৎজ়া-বার্গার হোক বা চিপ্স, প্রক্রিয়াজাত খাবার, প্যাকেটবন্দি খাবার সর্বত্রই নুনে ছড়াছড়ি। আর চিনি তো বিষের মতো ঢুকছে শরীরে। সে প্যাকেটজাত ফলের রস হোক বা নরম পানীয়, মিষ্টি থেকে কেক-পেস্ট্রি, কুকিজ়, ক্যাডবেরি সবেতেই ভরপুর চিনি। আর যত বেশি চিনি ঢুকছে শরীরে, ততই তার হাত ধরে বিভিন্ন রোগের আনাগোনা শুরু হচ্ছে। রক্তে শর্করা তো বাড়ছেই, কিডনির রোগ, লিভারের অসুখ, এমনকি অতিরিক্ত চিনি স্নায়ুর রোগেরও কারণ হয়ে উঠছে।
সুনীলের পরামর্শ, ওজন কমাতে চাইলে এবং যৌবন ধরে রাখতে হলে ওই তিন সাদা খাবারই জীবন থেকে বাতিল করে দিতে হবে। এক থালা ভাত খেয়ে আর যাই হোক, ওজন কমবে না, অতিরিক্ত নুন খেলে হার্ট বিগড়ে যাবে, কোলেস্টেরল চোখ রাঙাবে আর বেশি চিনি মানেই ডায়াবিটিস, যার ঘায়ে কুপোকাৎ কমবয়সিরাও। কাজেই বার্ধক্যকে যদি থামিয়ে রাখতে হয়, তা হলে ডায়েট, শরীরচর্চার পাশাপাশি সুনীলের মতো কিছু অভ্যাস ত্যাগ করতেই হবে। আর তার মধ্যেই একটি হল খাই খাই বাতিক। যতই লোভ হোক নুন বা চিনি দেওয়া খাবার খাওয়া চলবে না।
এই বিষয়ে পুষ্টিবিদ শম্পা চক্রবর্তীর পরামর্শ, সাদা ভাতের বদলে ব্রাউন রাইস বা দানাশস্য যেমন ওট্স, ডালিয়া, কিনোয়া ভাল। চিনির বদলে মধু বা গুড় খাওয়া যেতে পারে। তবে তা শরীর বুঝে। কৃত্রিম চিনি তো একেবারেই খাওয়া চলবে না। চা খেলে লিকার বা গ্রিন টি, কফির নেশা থাকলে দুধ-চিনি ছাড়া কালো কফি খেতে হবে। ময়দার বিস্কুট খাওয়া একদমই চলবে না। চা বা কফির সঙ্গে বিস্কুট খেতে হলে ক্রিমক্র্যাকার বিস্কুট অথবা থিন অ্যারারুট বিস্কুটই খেতে পারেন। অথবা তিন থেকে চারটি ভেজানো কাঠবাদাম খেতে পারেন। শুকনো খোলায় ভাজা ছোলাও চলবে। স্ন্যাকস খেতে ইচ্ছে হলে ভাজাভুজি নয়, বরং ফল, দই খান, প্রোবায়োটিক ভাজা খাওয়ার ইচ্ছে কমাবে। চিনি দেওয়া পানীয়ের বদলে ডিটক্স পানীয় খান। ছোট ছোট টুকরো করে কাটা ফল বা সব্জি ভেজানো জল যে কোনও প্যাকেটবন্দি পানীয়ের থেকে অনেক বেশি সুস্বাদু ও স্বাস্থ্যকর। এই ভাবেই ধীরে ধীরে অভ্যাস গড়ে তুলতে হবে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy