১৪০ কেজি থেকে ৮৫ কেজি— পরিবর্তনের আগে এবং পরে অভিনেতা রাম কপূর। ছবি : ইনস্টাগ্রাম।
সপ্তাহখানেক আগে নিজের নতুন অবতার প্রকাশ্যে এনেছেন অভিনেতা রাম কপূর। গোলগাল চেহারার হিন্দি ধারাবাহিকের নায়ক রাম দীর্ঘ অজ্ঞাতবাসের পর হঠাৎই ক্যামেরায় ধরা দিয়েছেন ছিপছিপে গড়নে। বাড়তি মেদ উধাও তো হয়েছেই, সেই সঙ্গে দৃশ্যমান টান টান পেট আর পেশিবহুল হাতও। তাঁর এই রূপ দেখে ভারতীয় সিনেমা জগতের অনুরাগীরা তো বটেই, মুগ্ধ হয়েছেন বলিউডের নায়কেরাও। তবে রামের এই পরিবর্তন দেখে মুগ্ধতার পাশাপাশি একটি প্রশ্নও উঠতে শুরু করেছিল— কী ভাব এতটা ওজন ঝরালেন রাম? সম্প্রতি এক সাক্ষাৎকারে সেই রহস্য উন্মোচন করেছেন অভিনেতা। তিনি বলছেন, কোনও নতুন ফর্মুলা নয়, তাঁর ছিপছিপে চেহারার নেপথ্যে রয়েছে বহু পুরনো এবং আলোচিত কিছু নিয়ম। সেই সব নিয়ম মেনেই ৫০ বছরের রাম ছ’ মাসে ৫৫ কেজি ওজন ঝরিয়েছেন।
রামের সুমতি!
৫০ বছর বয়সে পৌঁছে স্বাস্থ্য নিয়ে বোধোদয় হয়েছিল রামের। সাক্ষাৎকারে তিনি বলেছেন, ‘‘আমার মনে হয়েছিল, আমার দুই সন্তান রয়েছে। তাদের সামনে সুস্বাস্থ্যের একটি দৃষ্টান্ত তৈরি করা দরকার। অথচ আমি যে ভাবে এগোচ্ছি, তাতে উল্টোটাই হচ্ছে।’’ ওই উপলব্ধি থেকেই ছ’মাস আগে নিজের জীবনযাপন বদলানোর পথে পা বাড়িয়েছিলেন রাম। ছ’ মাসে ৫৫ কেজি ওজন ঝরিয়ে নিজেকে ৮৫ কেজিতে নামিয়ে এনেছেন রাম।
রামের রুটিন
ওজন ঝরানোর কার্যকর উপায় হিসাবে ‘ইন্টারমিটেন্ট ফাস্টিং’য়ের পরামর্শ দিয়ে থাকেন বহু পুষ্টিবিদ। রাম জানিয়েছেন তাঁর ওজন ঝরানোর নেপথ্যেও রয়েছেন ইন্টারমিটেন্ট ফাস্টিংয়ের বড় ভূমিকা। তবে একই সঙ্গে আরও অনেক নিয়ম মেনেছেন তিনি। রামের বলেছেন, ‘‘আমি আসলে কোনও সাময়িক বা দ্রুত সমাধান চাইনি। চেয়েছিলাম, যে বদল আনব, তা যেন দীর্ঘস্থায়ী হয়। তাই ছ’মাস সময় নিয়ে নিজের রুটিনটাই বদলে ফেলেছি।’’
কী কী বদল?
রাম জানিয়েছেন, তিনি ইন্টারমিটেন্ট ফাস্টিংয়ের নিয়ম মেনেছেন। যেখান দিনের ৮-১০ ঘণ্টা বরাদ্দ থাকে খাদ্যগ্রহণের জন্য। বাকি ১৬-১৪ ঘণ্টা থাকতে হয় উপবাসে। জল ছাড়া অন্য কিছু খাওয়া যায় না। অনেকে ইন্টারমিটেন্ট ফাস্টিং করেই রোগা হওয়ার চেষ্টা করেন। রাম অবশ্য জানিয়েছেন, তিনি এর পাশাপাশি, তাঁর দৈনিক খাওয়া দাওয়া থেকে দুগ্ধজাত খাবার, তেল, চিনি এবং অধিকাংশ শর্করাজাতীয় খাবার বাদ দিয়েছেন। বাদ দিয়েছেন মাংসও। এর সঙ্গে নিয়মিত এবং নির্দিষ্ট সময় মেনে প্রতিদিন শারীরিক কসরতও করেছেন তিনি। কঠোর নিয়ম পালন করেই ১৪০ কেজি থেকে ৮৫ কেজিতে ফিরতে পেরেছেন অভিনেতা।
কতটা স্বাস্থ্যকর?
৫০ বছর বয়সে ওই বিপুল শারীরিক পরিবর্তন যেমন অনেককে অনুপ্রেরণা জুগিয়েছে, তেমনই অনেকে প্রশ্ন তুলেছেন ওই বয়সে কঠোর নিয়ম পালনের সমস্যা নিয়েও। পুষ্টিবিদ অশ্লেষা জোশী বলছেন, ‘‘পঞ্চাশের পরে ওজন কমানোর চেষ্টা এবং তাতে সফল হওয়া সত্যিই কঠিন। তার কারণ, ওই বয়সে শারীরিক নানা পরিবর্তনের পাশাপাশি হরমোনজনিত পরিবর্তন আসে। বিপাক ক্রিয়াও মন্থর হয়ে যায়। বয়সজনিত কারণে ধীরে ধীরে পেশির ক্ষয় হতে থাকে। মহিলাদের ক্ষেত্রে রজনিবৃত্তির জন্য পেটে চর্বি জমতে শুরু করে।’’ তবে পুষ্টিবিদ জানাচ্ছেন, পঞ্চাশের কোঠায় পৌঁছে ওজন কমানো অসম্ভবও নয়। যার প্রমাণ অভিনেতা রাম। ওই বয়সে পেশি ভাল রাখতে স্ট্রেন্থ ট্রেনিং করা জরুরি। পাশাপাশি, খাবারে চর্বি বর্জিত প্রোটিন, স্বাস্থ্যকর স্নেহপদার্থ, কমপ্লেক্স কার্বোহাইড্রেটস বেশি রাখলে, তা সাহায্য করতে পারে। এ ছাড়া শারীরিক ভাবে সক্রিয় থাকতে হবে। বয়স হলে অনেকেই কায়িক শ্রম কমিয়ে দেন। নিয়মিত হাঁটাহাঁটি, সাঁতার বা কায়িক শ্রম আছে এমন কাজ করলে, তা-ও সাহায্য করবে ওজন নিয়ন্ত্রণে রাখতে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy