‘হিরো’, ‘রঙ্গিলা’, ‘রাম লক্ষ্মণ’ ‘খলনায়ক’, ‘১৯৪২: আ লাভ স্টোরি’— অসংখ্য ছবিতে অভিনয় করেছেন। অনুরাগীদের মনে তাঁর ‘দাদা’ ভাবমূর্তি আজও সতেজ। কিছু দিন আগে ৬৮ বছর পা দিয়েছেন বলিপাড়ার ‘জগ্গু দাদা’ জ্যকি শ্রফ। এই বয়সে এসে সুস্থ থাকার জন্য তিনি বেছে নিয়েছেন আয়ুর্বেদকেই। চা-কফি নয়, বরং জ্যাকির দিন শুরু হয় পানপাতা এবং আমপাতা খেয়ে। সম্প্রতি একটি সাক্ষাৎকারে ভেষজের উপর তাঁর ভরসার কথাই জানিয়েছেন অভিনেতা।
শুধু পান পাতা বা আম পাতা নয়, জ্যাকি শ্রফ গরম জলে গিলয় বা গুলঞ্চ পাতাও ভিজিয়ে খান। এই পাতাটি কিছুটা পান পাতার মতো দেখতে। ভেষজটির উপকারিতা অনেক। হজমশক্তি এবং রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধিতে ব্যবহার হয় পাতাটি। জ্বর, হাঁপানি, আন্ত্রিক-সহ একাধিক রোগ প্রতিরোধে সাহায্য করে এই ভেষজ।
আরও পড়ুন:
জ্যাকি বলছেন, ‘‘সকালে উঠে আমি বিভিন্ন রকম পাতা খাই। প্রত্যেকটি পাতারই কোনও না কোনও ঔষধি গুণ রয়েছে। তালিকায় থাকে শিউলিও। খেতে তেতো হলেও এর গুণ অনেক।’’ এ ছাড়াও স্বাস্থ্য ভাল রাখতে ব্রাহ্মী শাকও পাতে রাখেন তিনি।
পুষ্টিবিদ সমীক্ষা কালরা বলছেন, ‘‘আয়ুর্বেদশাস্ত্রে রকমারি জড়িবুটির ব্যবহার বহু প্রাচীন। শরীর ভাল রাখতে এর উপকারিতা অনেক। বলা যায়, এই সব জড়িবুটি প্রাকৃতিক বিস্ময়।’’
যেমন শিউলি। শিউলি পাতা বা ফুল ভেজানো জল খান অনেকে। শুধু পেটের স্বাস্থ্য ভাল রাখতে বা রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করতে এটি সাহায্য করে না, শিউলির তেলে অস্থিসন্ধির ব্যথাও কমে। ত্বকের চিকিৎসাতেও এর ব্যবহার হয়। চুল ঝরা রোধ করতেও সহায়ক এটি। আবার অ্যান্টিঅক্সিড্যান্টে সমৃদ্ধ আমপাতা হজমের ক্ষমতা বৃদ্ধিতে, রক্তে শর্করার মাত্রা নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করে। পানপাতা হজমে সহায়ক।
কোন ঔষধি কোন কাজে লাগে?
· অশ্বগন্ধা, ব্রাহ্মীর মধ্যে উদ্বেগ কমানোর ক্ষমতা আছে, বলছেন পুষ্টিবিদ। ঘুম ভাল হতে, উদ্বেগ কমাতে সাহায্য করে এই ধরনের ভেষজ।
· আবার ঠান্ডা-গরমে সর্দিকাশি হলে কাজে আসে তুলসী। চুলের জন্য ভাল নিম, আমলকি, ভৃঙ্গরাজ।
· রোগ প্রতিরোধে সাহায্য করে আমলকি, তুলসী, অশ্বগন্ধা। পানপাতা এবং আমলকি হজমের জন্যও ভাল।
জ্যাকি শ্রফ জানিয়েছেন, দারচিনি, এলাচ, লবঙ্গের মতো মশলাও থাকে তাঁর দৈনন্দিন ডায়েটে। পুষ্টিবিদেরাও জানাচ্ছেন, দৈনন্দিন রান্নায় ব্যবহার হওয়া এই মশলাগুলির নিজস্ব গুণ রয়েছে। কোনওটি রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করে, কোনওটি কোষ্ঠকাঠিন্য প্রতিরোধে, হজম শক্তি বাড়াতে সাহায্য করে। তবে এমন ডায়েট অনুসরণ করার আগে নিজের শরীরে ধাত বুঝতে হবে। কারও এ ধরনের ভেষজে অ্যালার্জি থাকতেই পারে। চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া এ ক্ষেত্রে বাঞ্ছনীয়।