Advertisement
২৩ নভেম্বর ২০২৪
Covid

covid: সংক্রমণের সঙ্গেই ভর্তি বাড়ছে হাসপাতালে

গত কয়েক দিনে দেখা যাচ্ছে, শহরের দু’টি সরকারি ও কিছু বেসরকারি হাসপাতালে করোনা রোগীদের ভর্তির হার বেড়েছে।

ফাইল ছবি

ফাইল ছবি

নিজস্ব সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ০৬ জুলাই ২০২২ ০৭:৪৯
Share: Save:

জুনের গোড়া থেকেই রাজ্যে ফের মাথাচাড়া দিতে শুরু করেছিল করোনার সংক্রমণ। একশো থেকে শুরু করে দৈনিক আক্রান্তের সংখ্যাটা লাফিয়ে লাফিয়ে বেড়ে যেতে থাকে। যা দেখে চিকিৎসকদের একাংশের আশঙ্কা ছিল, একটা সময়ের পরে ধীরে ধীরে হলেও সঙ্কটজনক রোগীর সংখ্যা বাড়বে। ফলে, হাসপাতালে ভর্তির সংখ্যাও বৃদ্ধি পাবে। গত কয়েক দিনে দেখা যাচ্ছে, শহরের দু’টি সরকারি ও কিছু বেসরকারি হাসপাতালে করোনা রোগীদের ভর্তির হার বেড়েছে। যাঁদের মধ্যে অনেকেই আবার ক্রিটিক্যাল কেয়ারে চিকিৎসাধীন।

চিকিৎসকেরা জানান, যে সমস্ত করোনা রোগী আইসিইউ বা সিসিইউ-তে ভর্তি হচ্ছেন, তাঁদের বেশির ভাগেরই কোমর্বিডিটি রয়েছে এবং বয়স ষাটের কাছাকাছি বা বেশি। উচ্চ রক্তচাপ, সুগার, সিওপিডি, কিডনির গোলমাল কিংবা হার্টের সমস্যায় ভোগা রোগীরাই মূলত ওই সব অসুখ নিয়ে হাসপাতালে ভর্তি হচ্ছেন। তার পরে কোভিড হওয়ায় অবস্থা সঙ্কটজনক হচ্ছে। আবার করোনায় আক্রান্ত হওয়ার পরেও পুরনো রোগের বাড়াবাড়ি হয়ে অনেকের অবস্থা সঙ্কটজনক হচ্ছে। এম আর বাঙুর হাসপাতালের ক্রিটিক্যাল কেয়ারের চিকিৎসক শুভব্রত পালের কথায়, ‘‘আগে করোনায় আক্রান্ত হলেই অধিকাংশের শ্বাসকষ্ট হচ্ছিল এবং শরীরে অক্সিজেনের মাত্রা নেমে যাচ্ছিল। তাতে সাধারণ ওয়ার্ডেই তাঁরা ভর্তি হচ্ছিলেন। কিন্তু এখন জ্বর-সর্দি-কাশির মতো উপসর্গ থাকায় অনেকেই পরীক্ষা করাচ্ছেন না। এখন যাঁরা ভর্তি হচ্ছেন, তাঁদের বেশির ভাগই কোমর্বিডিটিতে আক্রান্ত।’’

স্বাস্থ্য দফতরের আধিকারিকেরা জানাচ্ছেন, দৈনিক আক্রান্তের মতো হাসপাতালে ভর্তির হারও ওঠানামা করছে। ৪ জুলাইয়ের বুলেটিনে ওই দিন পর্যন্ত বিভিন্ন হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রোগীর হার ছিল ৪ শতাংশ। ৫ জুলাই আবার সেটি হয়েছে ৩.২৭ শতাংশ। চিকিৎসকদের একাংশ বলছেন, ‘‘ধীরে হলেও আক্রান্তের সংখ্যা যেমন দু’হাজারের কাছে পৌঁছে গিয়েছে, তেমনই হাসপাতালে ভর্তির হারও আচমকা বেড়ে যেতে পারে।’’ এর জন্য তাঁরা দায়ী করছেন অল্পবয়সি ও মাঝবয়সি এক শ্রেণির মানুষের চরম উদাসীনতাকে। যাঁদের কেউই করোনা-বিধি মানছেন না। ওই বয়সিরা আক্রান্ত হলেও উপসর্গ অত্যন্ত মৃদু থাকছে কিংবা উপসর্গহীন থাকছেন। আর তাঁরাই সংক্রমণ ছড়াচ্ছেন। যার জেরে বয়স্ক বা কোমর্বিডিটিতে আক্রান্তদের ঝুঁকি বাড়ছে।

বেসরকারি হাসপাতালগুলিতে এখনও বেশি সংখ্যক শয্যা করোনার চিকিৎসায় বরাদ্দ হয়নি। তবে যে ক’টি রয়েছে, তা প্রায় ভর্তি বলেই জানান কর্তৃপক্ষেরা। পিয়ারলেস হাসপাতালে সোমবার আট জন ভর্তি হয়েছেন। ৪০টি শয্যার মধ্যে ২৮টি ভর্তি। প্রায় ১০ জনের অক্সিজেন লাগছে এবং দু’জন ভেন্টিলেশনে। আমরি গোষ্ঠীর তিনটি হাসপাতাল মিলিয়ে ৫৯টি শয্যার ৫১টি ভর্তি। তার মধ্যে আইসিইউ ও এইচডিইউ-তে রয়েছেন ৩০ জন। উডল্যান্ডস হাসপাতালের সিইও ও এমডি, চিকিৎসক রূপালী বসু জানান, তাঁদের ২৮টি শয্যার মধ্যে ১৬টি ভর্তি। তার মধ্যে পাঁচ জন ক্রিটিক্যাল কেয়ার ইউনিটে। ফর্টিস হাসপাতালে এখন ৩০টি শয্যার মধ্যে সাতটি ভর্তি। এক জন আইসিইউ-তে।

বেলেঘাটা আইডি এবং এম আর বাঙুরকে করোনা চিকিৎসার জন্য নির্দিষ্ট করা রয়েছে। দু’টি মিলিয়ে প্রায় ৩০০টি (আইডি-২০০, বাঙুর-১০০) শয্যা রয়েছে। মঙ্গলবার বিকেল পর্যন্ত আইডি-তে চিকিৎসাধীন ২৫ জনের মধ্যে ২২ জন সিসিইউ-তে। দু’জন ভেন্টিলেশনে। এম আর বাঙুরে সিসিইউ-তে ১৮টি শয্যার মধ্যে ন’টি ভর্তি। রাজ্যে কোভিড ব্যবস্থাপনা কমিটির চেয়ারম্যান, চিকিৎসক গোপালকৃষ্ণ ঢালির কথায়, ‘‘করোনায় সকলে সঙ্কটজনক হচ্ছেন না। কিন্তু বয়স্ক ও কোমর্বিডিটি থাকলে ঝুঁকি বাড়ছে। পুরনো রোগ নিয়ন্ত্রণে রাখতে হবে। সেগুলি বাড়লে তার সঙ্গে কোভিড যুক্ত হয়ে সঙ্কটজনক অবস্থা তৈরি হচ্ছে।’’

অন্য বিষয়গুলি:

Covid Covid Infection
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy