Advertisement
২২ নভেম্বর ২০২৪
Tollywood

অতিমারিতে শুধুমাত্র পাশে থাকার তাগিদে এগিয়ে এসেছেন বাংলা ইন্ডাস্ট্রির অনেকে

গত বছর থেকেই নাইজেল আকারার টিমও স্যানিটাইজ় করছে বিভিন্ন এলাকা। এ বার  স্টুডিয়ো স্যানিটাইজ়ও করছে তাঁর টিম।

সৃজিত, রূপম, বিক্রম, বিরসা

সৃজিত, রূপম, বিক্রম, বিরসা

নবনীতা দত্ত
কলকাতা শেষ আপডেট: ২৮ এপ্রিল ২০২১ ০৪:৩৮
Share: Save:

সারা রাত অবিরাম ফোন করে হয়তো সকালে একটা শয্যার ব্যবস্থা করে দিতে পেরেছেন একজন। অপরজন আবার নিজের গাড়ি নিয়েই বেরিয়ে পড়ছেন প্রয়োজনীয় জিনিস পৌঁছে দেওয়ার জন্য। এমনও নজির রয়েছে টলিউডে। না, তাঁরা কোনও তারকাপ্রার্থী নন। মানুষের জন্য কাজ করার তাগিদেই তাঁরা নেমে পড়েছেন ময়দানে। তার জন্য প্রয়োজন হয়নি কোনও রাজনৈতিক দলে নাম লেখানোর।

অভিনেতা বিক্রম চট্টোপাধ্যায় বললেন, ‘‘এত মানুষের হাহাকার শুনে আর বসে থাকা যাচ্ছে না। তবে একা কতটা করতে পারব জানি না। যেটুকু পারছি, করছি। কারও বেড বা অক্সিজেন লাগলে সেটা জোগাড় করার ব্যবস্থা করছি। তা-ও সকলের জন্য কি করে উঠতে পারছি? একটা বেড জোগাড় করতেই প্রায় তেরো-চোদ্দো ঘণ্টা সময় লেগে যাচ্ছে,’’ হতাশ শোনাল তাঁকে। সারা দিন তাঁর সোশ্যাল মিডিয়ার মেসেজ বক্সে শয়ে শয়ে অনুরোধ আসছে। বেশি সংখ্যক মানুষের কাছে পৌঁছনোর চেষ্টা করছেন বিক্রম। পরিচালক সৃজিত মুখোপাধ্যায় শেয়ার করে চলেছেন জরুরি নম্বর ও তথ্য। কোন হাসপাতালে ক’টি বেড ফাঁকা রয়েছে, অক্সিজেনের জন্য ফোন নম্বর...ইত্যাদি তথ্যের তালিকা পোস্ট করছেন।
জরুরি তথ্য পোস্ট করছেন পরিচালক বিরসা দাশগুপ্তও, ‘‘আমার পেজে যত ফলোয়ার আছে তাঁদের মারফত বেশি সংখ্যক মানুষের কাছে তথ্যগুলি পৌঁছে দেওয়াই উদ্দেশ্য। এতে একজন মানুষের সাহায্য হলেও অনেক। কোনও কৃতিত্ব পেতে বা প্রচারের উদ্দেশ্যে আমার এই পোস্ট নয়। মানুষের সাহায্যই আসল লক্ষ্য।’’ পরিচিতদের কেউ করোনায় আক্রান্ত হলে, তাঁদের বাড়িতে জরুরি জিনিসও পৌঁছে দিয়েছেন বিরসা। অনুদানও দিয়েছেন কিছু জায়গায়। কিন্তু সে সবের প্রচার তিনি চান না।

কস্টিউম ডিজ়াইনার অভিষেক রায়ও নিজেই গাড়ি চালিয়ে মানুষের কাছে পৌঁছে যাচ্ছেন প্রয়োজনীয় জিনিসটুকু তুলে দিতে, ‘‘আমার কাছে কিছু পিপিই কিট আছে। দরকার হলে সেগুলো পরেই চলে যাব। কারণ এখন না করলে আর কখন করব?’’

শুধু কলকাতাই নয়, কলকাতার বাইরেও সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দিচ্ছেন কিছু তারকা। ফ্যানক্লাব ‘ফসিলস ফোর্স’ ও ‘মুক্তক্ষেত্র’কে সঙ্গে নিয়ে কাজ শুরু করেছেন রূপম ইসলাম। তিনি বললেন, ‘‘পশ্চিমবঙ্গের প্রত্যেক জেলায় আমার ফ্যানক্লাবের প্রতিনিধিরা আছেন। তাঁদের সহযোগিতায় কাজ শুরু করি। আমরা একটা ফর্ম আপলোড করে দিয়েছি, সেখানে কার কী দরকার, নাম-ঠিকানা সহ লিখে জমা দিচ্ছেন। সেই মতো আমরা তাঁদের কাছে পৌঁছে যাচ্ছি। যেমন, বাঁকুড়ায় এক কোভিড আক্রান্ত পরিবার জানান যে, তাঁরা খাবারের বন্দোবস্ত করতে পারছেন না। সেখানে আমাদের যিনি প্রতিনিধি আছেন, তিনিই খাবার দেওয়ার ব্যবস্থা করলেন।’’ কলকাতায় কিছু বাড়িতেও পৌঁছে দিয়েছেন জরুরি জিনিস।

গত বছর থেকেই নাইজেল আকারার টিমও স্যানিটাইজ় করছে বিভিন্ন এলাকা। এ বার স্টুডিয়ো স্যানিটাইজ়ও করছে তাঁর টিম। মুম্বইয়ে থাকলেও নিজের মতো করে সাহায্য করছেন শ্রীনন্দাশঙ্কর, ‘‘বাড়িতে বসে যেটুকু করতে পারছি, করছি। আমার চেনা অনেকেই রোজ মিল তৈরি করছেন। আমিও তাঁদের ফান্ডে অনুদান দিচ্ছি। মিল যাঁরা দিচ্ছি, তাঁদের যোগাযোগও শেয়ার করছি।’’ ঋতাভরী চক্রবর্তী ১০০ জন দুঃস্থ প্রবীণ নাগরিকের টিকাকরণের ব্যবস্থা করলেন। করোনায় আক্রান্ত ঋতব্রত মুখোপাধ্যায় ঘরবন্দি। তার মধ্যেই ‘দেশের নামে’ নাটকের বন্ধুদের সঙ্গে মিলে মানুষের পাশে থাকার আশ্বাস দিয়েছেন তিনি। হেল্পলাইন নম্বর শেয়ার করেছেন সোশ্যাল মিডিয়ায়।

এ দিকে সোমবার তারকা-প্রার্থীদের নম্বর সোশ্যাল মিডিয়ায় শেয়ার হতেই অনেকে ফোন বন্ধ রেখেছেন। তবে তারকাপ্রার্থী রাজ চক্রবর্তীর টুইটার হ্যান্ডেলে টুইট করে একজন ধন্যবাদ জানিয়েছেন হাসপাতালে শয্যার ব্যবস্থা করে দেওয়ার জন্য। কিন্তু সোশ্যাল মিডিয়া জুড়ে প্রশ্ন তুলছেন নেটিজ়েনরা, তারকাপ্রার্থীরা মানুষের পাশে কোথায়? অনেকে বলছেন, সোশ্যাল মিডিয়ায় কাজের খতিয়ান দিতে তাঁরা বাধ্য নন। কিন্তু রাজনৈতিক দলের প্রার্থী হিসেবে তাঁদের প্রচারের মাধ্যম যদি হতে পারে সোশ্যাল মিডিয়া, তা হলে সমাজসেবামূলক কাজেরই বা উল্লেখ থাকবে না কেন সেখানে?

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy