ইশা সাহা। ছবি: সংগৃহীত।
প্রশ্ন: পুজোর সময় যে চারটে বাংলা ছবি মুক্তি পেয়েছিল, কোনওটা দেখেছিলেন?
ইশা: পুজোয় ষষ্ঠী পর্যন্ত নানা রকম কাজ ছিল। তার পর দু’দিন একটু ঠান্ডা লেগে শরীরটা খারাপ ছিল। নবমীতে আমি উত্তরবঙ্গ চলে যাই। তাই কোনও ছবিই দেখা হয়নি। যদিও খুবই দেখার ইচ্ছা ছিল সবগুলো। তবে আমি দেখে নেব।
প্রশ্ন: আগের বছর আপনার দুটো ছবি মুক্তি পেয়েছিল পুজোয়। এ বছর কোনও ছবি ছিল না। মনখারাপ হয়নি?
ইশা: আমার প্রথম ছবি ‘প্রজাপতি বিস্কুট’ পুজোয় মুক্তি পেয়েছিল। গত বছর আমার দুটো ছবি ছিল। পুজোয় ছবি মুক্তি পাওয়া অনেকটা ভাগ্যের ব্যাপার। একটা মজা তো আছে বটেই। সঙ্গে ততটাই চাপ থাকে। তাই সত্যি বলছি, এই পুজোয় অনেকটা রিল্যাক্সড ছিলাম। তবে পুজোয় ছবি মুক্তি পেলে ভালই লাগে। ভাল জিনিস মাঝে মাঝে আসাই ভাল। আবার এক বছর বা দু’বছর পর যদি পুজোয় আমার কোনও ছবি মুক্তি পায়, ভালই লাগবে।
প্রশ্ন: এ বছর ‘একটু সরে বসুন’ আপনার তৃতীয় ছবি...।
ইশা: প্রথম ছবি দুটো— ‘মিথ্যা প্রেমের গল্প’ আর ‘ঘরে ফেরার গান’ বোধহয় খুব কম লোকে দেখেছিলেন। কিন্তু যাঁরা দেখেছিলেন, দুটো ছবির ক্ষেত্রেই তাঁদের কাছ থেকে প্রশংসা পেয়েছি। ছবিগুলো খুব অন্য রকম। কিন্তু মুশকিল হল, অনেকে না দেখেই বেশি মন্তব্য করে বসেন যে, এখানে অন্য রকম কাজ হচ্ছে না। কাজ কিন্তু হচ্ছে।
প্রশ্ন: কত জন ছবি দেখলেন বা বক্স অফিসের সাফল্য, আপনার কাছে জরুরি নয়?
ইশা: অবশ্যই জরুরি। প্রযোজকদের ঘরে টাকা না এলে তাঁরাই বা কোন ভরসায় ছবি করবেন? বক্স অফিসে ছবি সফল হলে তো ভালই লাগে। তবে সব সময় শুধু ব্যবসার কথা ভেবে ছবি করলে আবার সৃজনশীল কাজ কমে যাবে। দুটোই প্রয়োজন।
প্রশ্ন: ‘একটু সরে বসুন’ ছবিটা মূলত কমেডি। অভিনেতা হিসাবে এই ধরনের ছবিতে অভিনয় করা কি বেশি কঠিন?
ইশা: এই ছবিতে কমলদার (কমলেশ্বর মুখোপাধ্যায়) চিত্রনাট্য যেমন বা আমার চরিত্র পিউ যেমন, তাতে আলাদা করে মাথায় রাখতে হয়নি যে, এটা একটা কমেডি ছবি। কমলদা সারা ক্ষণ ছিলেন গাইড করার জন্য। বলেছিলেন, চরিত্রটাই কমিক্যাল, আলাদা কিছু করার প্রয়োজন নেই। স্বাভাবিক অভিনয় করলেই চলবে। তাই গোটাটাই একটা ফ্লো-এ বেরিয়ে গিয়েছে। কমেডি করতে হবে, এই ধরনের আলাদা কোনও চাপ ছিল না।
প্রশ্ন: এর আগেও আপনি ঋত্বিক চক্রবর্তীর সঙ্গে ‘গোরা’ করেছেন। সেটা থ্রিলার হলেও একটা কমিক রিলিফ রয়েছে। সেই অভিজ্ঞতা কি কাজে লাগল?
ইশা: আসলে ‘গোরা’-এ অনেক কমেডি থাকলেও আমার চরিত্রটা কিন্তু খুব সিরিয়াস ছিল। এখানে যেমন মজাদার ঘটনা রয়েছে, তেমনই বেশ কিছু আবেগঘন মুহূর্তও রয়েছে। তবে কমলদা বলেই দিয়েছিলেন, আমরা নিজেদের মতো কাজ করব, তাতে যদি দর্শকের হাসি পায়, তা হলে তাঁরা হাসবেন। আলাদা করে সুড়সুড়ি দিয়ে লোক হাসাব না। এই ছবিতে প্রচুর চরিত্র। সেগুলোয় যাঁরা অভিনয় করছেন, তাঁরা সকলেই তাবড় কমেডি অভিনেতা। আমায় আর আলাদা করে কিছু করতেই হয়নি। এখানে অবশ্য আমার বেশির ভাগ দৃশ্য ঋত্বিকদার সঙ্গেই ছিল। যে হেতু আগে আমরা কাজ করেছি, এ বার পুরো বিষয়টাই খুব সহজ ছিল। এক জন বড় তারকার সঙ্গে কাজ করতে গেলে যে ভয় হয়, সেটা হয়নি।
প্রশ্ন: একাধিক চরিত্র থাকলে কোনও ছবি বাছার সময় কী মাথায় রাখেন?
ইশা: সব সময় মুখ্য চরিত্রই করতে হবে, আমি এ ভাবে ভাবি না। যখন সোনাদা সিরিজ় করা শুরু করেছিলাম, অনেকে জিজ্ঞেস করেছিলেন, কেন করছি, এটা তো লিড চরিত্র নয়। কিন্তু যদি ছবিগুলো দেখেন, তা হলে বুঝতে পারবেন, ঝিনুক ছাড়া সোনাদা আর আবির খুব ফিকে। তিন জনেই তিন জনের পরিপূরক। ছবি বাছার সময় আমি দেখি, চরিত্রটা কতটা গুরুত্বপূর্ণ। এই ছবির ক্ষেত্রে যেমন ভেবেছিলাম, আগে কখনও মফস্সলের মেয়ের চরিত্র করিনি বা কমেডি ছবি করিনি।
প্রশ্ন: তা হলে তারকাদের ভিড়ে হারিয়ে যাওয়ার ভয় নেই আপনার?
ইশা: দেখুন, আমি যদি ধরে নিই, আমি স্টার আর আমি একাই ছবি করব, তা হলে তো বছরে একটা করে ছবি করতে হবে! টলিউড কেন, সব জায়গায় সিনেমা খুব নায়ককেন্দ্রিক। এখন কিছু নারীকেন্দ্রিক গল্প হয়। কিন্তু তেমন ছবি ক’টা? অভিনয় আমার পেশা। তাই কাজ তো করে যেতেই হবে। তাই যখন দেখি, গল্প ভাল, বড় নাম জড়িয়ে আছে, ছবিটা ভাল হতে পারে, তখন এক মুহূর্তও দেরি করি না। রাজি হয়ে যাই। খুব বেশি চিন্তাভাবনা করি না।
প্রশ্ন: নারীকেন্দ্রিক কাজগুলোর অবকাশ কি ওটিটি-তে বেশি?
ইশা: ওটিটি নিশ্চয়ই একটা স্পেস দেয়। কিন্তু সেটার সংখ্যাও বেশ কমে যাচ্ছে। যদিও ‘ইন্দু’ আমায় খুব ভালবাসা দিয়েছে, কিন্তু বছর দুই আগে ‘ইন্দু’ একাই ছিল। এখন ‘ইন্দু’র মতো আরও অনেক পারিবারিক সিরিজ় হচ্ছে। গল্প নিয়ে খুব বেশি এক্সপেরিমেন্ট করা হয় না। টুকটাক নিশ্চয়ই হয়, কিন্তু সংখ্যায় কম। যে হেতু সংখ্যায় কম, তাই কাজ বাছার অবকাশ কম থাকে। কিন্তু কাজ তো করে যেতেই হবে, বলুন? এখন পারিবারিক ড্রামা দর্শকের ভাল লাগছে, সিরিজ়গুলো তাই হিট হচ্ছে। তবে মনে হয়, চার-পাঁচ বছর পর যদি এগুলো দর্শকের একঘেয়ে লাগে, তখন আবার এক্সপেরিমেন্ট শুরু হবে। অনেক অন্য রকম কাজ হবে। সুযোগও বেশি পাব।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy