গরমে হাঁসফাঁস করছে শহর কলকাতা। বৃষ্টির পূর্বাভাসের অপেক্ষায় দিন গুনছেন রাজ্যবাসী। কিন্তু বিগত কয়েক বছরে গরমের দাপট একনাগাড়ে বেড়েই চলেছে কেন? গরমে শহর কলকাতার নাজেহাল অবস্থার কারণ অনুসন্ধানের চেষ্টা করলেন সঙ্গীতশিল্পী লোপামুদ্রা মিত্র।
লোপামুদ্রা দক্ষিণ কলকাতার বাসিন্দা। মঙ্গলবার শিল্পী ফেসবুকে একটি পোস্ট করেন। সেই পোস্টে শহরের উষ্ণায়ন প্রসঙ্গে তিনি কিছু গুরুত্বপূর্ণ মতামত তুলে ধরেছেন। ওই পোস্টে কলকাতা পুরসভা এবং মেয়র ফিরহাদ হাকিমকে ট্যাগ করে লোপামুদ্রা লিখেছেন, ‘‘সচরাচর ট্যাগ করি না। কিন্তু করলাম।’’
লোপামুদ্রা তাঁর পোস্টে প্রশ্ন তুলেছেন যে এই গরম কি সহ্য হবে। তিনি লিখেছেন, ‘‘আমার পাড়ায় ফুটপাথের ধারে যে বড় গাছগুলো আছে, বড় বা ছোট ঝড় এলে কেউ বাঁচবে না, কারণ, শেকড় মেলার জায়গা নেই, ঘাড়ের কাছে বড় বড় বাড়ি, ডালপালার ব্যালেন্স কমে যাচ্ছে।’’ এরই সঙ্গে আমপান এবং ইয়াশের অতীত স্মৃতি মনে করিয়ে দিয়ে লোপা লেখেন, ‘‘যে গাছগুলো গত বছর ঝড়ে বা আমফান, ইয়াশে পড়ে গিয়েছে, তাদের জায়গায় আমরা নতুন কোন গাছ বসাইনি, কিছু গাছ বসালেও তার যত্ন নিইনি। লেক, সার্দান অ্যাভনিউ বিরাট অঞ্চল জুড়ে অনেক অনেক গাছ আজ আর নেই।’’
শিল্পীর পোস্টেই স্পষ্ট, তিনি নাগরিক উদাসীনতাকেই গ্রীষ্মের দাবদাহ বাড়ার অন্যতম কারণ হিসেবে দেখতে চাইছেন। অন্য দিকে, লোপামুদ্রা তাঁর পোস্টে অনুরোধ করেছেন, ‘‘দক্ষিণ কলকাতার লেকে কি জঙ্গল বানাতে পারি না আমরা?’’ নিজেকে ‘স্বার্থপর’ উল্লেখ করে শিল্পীর আবেদন, ‘‘আমি আমার এলাকাটুকু নিয়েই আপাতত ভাবছি, স্বার্থপরের মতো। কিছু কি করা যেতে পারে? সবাই মিলে?
আরও পড়ুন:
নিজের পোস্টে কলকাতা পুরসভাকে ট্যাগ করেছেন লোপামুদ্রা। এলাকার এই পরিস্থিতির জন্য কি তিনি পুরসভার গাফিলতির দিকে দৃষ্টি আকর্ষণ করতে চেয়েছেন? আনন্দবাজার অনলাইনের তরফে প্রশ্ন করা হলে লোপামুদ্রা বললেন, ‘‘এর মধ্যে কোনও রাজনীতি নেই। আমি তৃণমূল থেকে শুরু করে স্বঘোষিত সিপিএম, প্রত্যেককেই ট্যাগ করেছি। সকলে মিলে সমস্যার মোকাবিলা করার কথা বলতে চেয়েছি।’’
কথা প্রসঙ্গেই লোপামুদ্রা জানালেন, ‘‘আমি চার তলায় থাকি। এসি ছাড়া একটা মুহূর্ত থাকতে পারছি না। আশপাশে গাছগুলো বাড়তে পারছে না কংক্রিটের ভিড়ে।’’ করোনার সময় শহরে দূষণের মাত্রা কমেছিল। সেই কথা মনে করিয়ে দিয়ে শিল্পী বললেন, ‘‘আমার মনে হয় সকলের মিলে এগিয়ে না এলে, গাছের যত্ন না নিলে এই গরমের হাত থেকে রেহাই পাওয়া মুশকিল।’’