গুমনামী
সিনেমা হল পাওয়া নিয়ে শত সমস্যা সত্ত্বেও, পরিচালক-প্রযোজকেরা কেন পুজোয় ছবি রিলিজ়ের চেষ্টা করেন, তা আরও একবার প্রমাণিত। এ বারের পুজোয় মুক্তি পাওয়া প্রতিটি ছবি নিয়েই দর্শকের মধ্যে মিশ্র প্রতিক্রিয়া। কিন্তু বক্স অফিসের লক্ষ্মীলাভে তা সমস্যা হয়ে দাঁড়ায়নি। ‘গুমনামী’, ‘পাসওয়র্ড’, ‘মিতিন মাসি’, ‘সত্যান্বেষী ব্যোমকেশ’ সব ক’টি বাংলা ছবিই কম-বেশি ব্যবসা করেছে। হল মালিক, ডিস্ট্রিবিউটর এবং প্রযোজনা সংস্থা থেকে পাওয়া রিপোর্টের ভিত্তিতে এ বারের পুজোয় সবচেয়ে এগিয়ে সৃজিত মুখোপাধ্যায়ের ‘গুমনামী’। দ্বিতীয় স্থানে অরিন্দম শীলের ‘মিতিন মাসি’। এর পরের ধাপে কমলেশ্বর মুখোপাধ্যায়ের ‘পাসওয়র্ড’ এবং সায়ন্তন ঘোষালের ‘সত্যান্বেষী ব্যোমকেশ’।
বাংলা ছবির সঙ্গে মুক্তি পেয়েছিল হৃতিক রোশনের ‘ওয়র’। স্বাভাবিক ভাবেই ‘ওয়র’-এর দখলে ছিল অধিকাংশ শো, যা নিয়ে টলিউডের প্রযোজক-পরিচালকদের খেদের অন্ত ছিল না। গোটা দেশে চুটিয়ে ব্যবসা করেছে ‘ওয়র’। সাত দিনে ২০০ কোটি টাকা। এ রাজ্য থেকে সাড়ে চার কোটি টাকা রোজগার ‘ওয়র’-এর। হৃতিকের ছবিটি না থাকলে নিঃসন্দেহে বাংলা ছবি আরও ভাল ব্যবসা করত। অল্প শো নিয়ে ইংরেজি ছবি ‘জোকার’ও এ রাজ্যে ভাল ফল করেছে।
তবে জায়ান্ট কিলারের কাজটা করেছে ‘গুমনামী’। ‘ওয়র’কে ভাল মতো টক্কর দিয়েছে ছবিটি। রিলিজ়ের দিন থেকেই হাউসফুল সৃজিতের ছবি। প্রসেনজিৎ চট্টোপাধ্যায় এবং সৃজিতের জুটি পুজোয় বরাবরই হিট। পরিচালক যেমন জানালেন, তাঁদের জুটির বিগেস্ট ওপেনিং দিয়েছে ‘গুমনামী’। নেতাজির মৃত্যুরহস্য, ছবি নিয়ে বিতর্ক এবং প্রসেনজিৎ-সৃজিত জুটি যে ‘গুমনামী’কে অতিরিক্ত মাইলেজ দিয়েছে, তা নিয়ে সন্দেহ নেই। সূত্র বলছে, প্রথম সাত দিনে ২.৫৫ কোটি টাকার ব্যবসা করেছে ‘গুমনামী’।
অরিন্দম শীলের ‘মিতিন মাসি’ রয়েছে ঠিক পরেই। নামভূমিকায় কোয়েল মল্লিকের অভিনয় দর্শকের ভাল লেগেছে। পুজোয় যতগুলি ছবি মুক্তি পেয়েছে, তার মধ্যে ‘মিতিন মাসি’ই কচিকাঁচাদের নিয়ে দেখার মতো ছবি। সে দিক থেকে অরিন্দমের ছবি খানিকটা সুবিধে পেয়েছে। ছবির প্রযোজক নীলরতন দত্তর কথায়, ‘‘আমাদের ছবি মুক্তির পর থেকে সাত দিনে ১.৭৫ কোটি টাকার ব্যবসা করেছে। আমাদের বাজেট ছিল এক কোটি চল্লিশ লাখের মতো। সে দিক থেকে পুরো লাভটাই হল থেকে উঠে আসছে।’’
ভাল হল পেয়েছিল দেবের ‘পাসওয়র্ড’। কিন্তু সেই নিরিখে ভাল ব্যবসা করেনি। সূত্রের খবর অনুযায়ী, প্রথম সাত দিনে ৮৫ লক্ষ টাকার ব্যবসা করেছে ‘পাসওয়র্ড’। ব্যবসার নিরিখে অল্প একটু পিছিয়ে ‘সত্যান্বেষী ব্যোমকেশ’। জানা যাচ্ছে, ৮০ লক্ষের মতো ব্যবসা করেছে ছবিটি। যদিও বাকি ছবিগুলির তুলনায় এটি হল এবং শো কম পেয়েছিল। সেই বিচারে পরমব্রত চট্টোপাধ্যায়ের ব্যোমকেশ বক্সীর পারফরম্যান্স মন্দ নয়।
প্রথম দিন থেকে একমাত্র ‘গুমনামী’ই জোরালো অবস্থান দেখিয়েছে। বাকি সব ক’টি ছবিই ষষ্ঠী থেকে পিকআপ নিয়েছে। পিভিআর-এর পূর্বাঞ্চলীয় শাখার কর্তা উজ্জ্বল বিশ্বাসের কথায়, ‘‘বাংলা ছবির মধ্যে এক নম্বরে থাকবে ‘গুমনামী’। তার পর ‘মিতিন মাসি’। ৭৮-৮২ শতাংশ ভর্তি ছিল ‘গুমনামী’। ‘মিতিন মাসি’ ৭০-৭৫ শতাংশ। ‘পাসওয়র্ড’ এবং ‘সত্যান্বেষী ব্যোমকেশ’ দুটো ছবিই মোটামুটি ৫৫-৬০ শতাংশ অকুপেন্সি ধরে রেখেছিল।’’
পুজোর ক’টা দিন ছুটি আর সেই হুজুগের ফলে বক্স অফিসে জোয়ার আসে। টিকে থাকতে গেলে কনটেন্টের জোর প্রয়োজন। প্রথম দফার পরে প্রযোজক-হল মালিকের লভ্যাংশের অনুপাতও বদলে যায়। তবে ট্রেড অ্যানালিস্টদের মতে, প্রথম দফার কালেকশনে যে ছবি এগিয়ে থাকে, শেষ পর্যন্ত সেই ছবিই জেতে। গত কয়েক বছরের পুজোর বক্স অফিস রেকর্ড অন্তত তাই বলছে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy