Advertisement
০৫ নভেম্বর ২০২৪
Sandipta Sen

Sandipta Sen: রাহুলের সঙ্গে আমার প্রেম নেই কিন্তু প্রিয়াঙ্কার সঙ্গে সৌজন্যমূলক সম্পর্ক আছে: সন্দীপ্তা

শ্যুট থেকে ফিরে ঘুরতে যাওয়ার গোছগাছ শুরুর আগে সন্দীপ্তা ফোনে আড্ডা দিলেন আনন্দবাজার অনলাইনের সঙ্গে।

সন্দীপ্তা সেন।

সন্দীপ্তা সেন।

নিজস্ব সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ১৮ অগস্ট ২০২১ ১২:৩২
Share: Save:

ইন্ডাস্ট্রি বলে, সন্দীপ্তা মানেই পায়ের তলায় সরষে। ধারাবাহিকের একটানা ব্যস্ততার মাঝেও তাই একদিনের জন্য মা-বাবাকে নিয়ে বেরিয়ে পড়ার ফাঁক খুঁজে ফেলেছেন ‘মা সারদা’। শ্যুট থেকে ফিরে ঘুরতে যাওয়ার গোছগাছ শুরুর আগে ফোনে আড্ডা দিলেন আনন্দবাজার অনলাইনের সঙ্গে। কাজ থেকে ব্যক্তিগত জীবন— সব কিছু নিয়ে অকপট সন্দীপ্তা সেন।


প্রশ্ন: আপনাকে তো ইন্ডাস্ট্রির অনেকেই ‘অলরাউন্ডার’ বলছেন…

সন্দীপ্তা:
(অবাক হয়ে) এই রে! কেন বলুন তো?

প্রশ্ন: ওয়েব সিরিজ, ধারাবাহিক, ছবি— সবেতেই তো এখন সন্দীপ্তা সেন।

সন্দীপ্তা:
হ্যাঁ। আসলে অভিনেত্রী হিসেবে আমি সব ধরনের কাজই করতে চাই। ভাল সুযোগ পেলে সময় বার করে নিতে অসুবিধা হয় না।

প্রশ্ন: এক দিকে নিমা প্রধানের মতো চরিত্র, আবার ধারাবাহিকে মা সারদা। ভারসাম্য রাখতে অসুবিধা হয়নি?

সন্দীপ্তা:
না। আসলে ‘মার্ডার ইন দ্য হিলস’-এর কাজ তো ফেব্রুয়ারিতেই শেষ করে ফেলেছিলাম। মা সারদা হয়েছি তার পরে। দর্শক যদিও দু'টি চরিত্রকেই প্রায় এক সময়ে দেখেছেন। অভিনেত্রী সন্দীপ্তাকে তাঁরা ভালবাসেন বলেই হয়তো দু’ভাবেই আমাকে মেনে নিয়েছেন।

প্রশ্ন: আপনি তো বলেছিলেন, ধারাবাহিক থেকে বিরতি নিচ্ছেন…

সন্দীপ্তা:
সেই রকমই ভেবেছিলাম। অনেক দিন তাই ছোটপর্দায় কাজ করিনি। কিন্তু মা সারদার চরিত্রে অভিনয়ের প্রস্তাব পেয়ে রাজি হয়ে গেলাম। এই ধারাবাহিকে আমি ছ’মাসের জন্য এসেছি। সুতরাং খুব বেশি দিনের কাজ নয় এটা। আর ‘রাণী রাসমণি’-র মতো ধারাবাহিকে কাজ করতে পারাটাও আমার কাছে একটা ভাল লাগার জায়গা।

প্রশ্ন: কিন্তু দিতিপ্রিয়া রায় চলে যাওয়ার পর ‘রাণী রাসমণি’-র টিআরপি কমেছে…

সন্দীপ্তা:
সত্যিই টিআরপি কমেছে কি? আমি অন্তত সে রকম কিছু শুনিনি। কমে থাকলে তারও একটা কারণ আছে বলে আমি মনে করি।

প্রশ্ন: কী কারণ?

সন্দীপ্তা:
লকডাউনের সময় সব ধারাবাহিকের নতুন পর্ব শ্যুট হলেও ‘রাণী রাসমণি’-র পুরনো পর্বগুলোই দেখানো হয়েছে। এ ছাড়াও একটা ধারাবাহিক এত বছর ধরে চলছে। মানুষ দিতিপ্রিয়াকে নিজের পরিবারের সদস্য ভেবে ফেলেছিলেন। ওর চলে যাওয়ার পরের পরিবর্তন মানিয়ে নিতে কিছু সময় তো লাগবেই।

প্রশ্ন: দর্শক কিন্তু দিতিপ্রিয়ার সঙ্গে আপনার তুলনা করছে…

সন্দীপ্তা:
(হেসে উঠে) কী বলছেন! ও আমার ছোট্ট বোনের মতো। সেই ‘দুর্গা’ ধারাবাহিকের সময় থেকে আমাদের পরিচয়। সুতরাং মানুষ যদি সত্যিই তুলনা করেও থাকেন, তাতে আমার সঙ্গে দিতিপ্রিয়ার সম্পর্কে কোনও পরিবর্তন আসবে না। কিন্তু তুলনাটা আসছেই বা কেন বলুন তো? আমি তো ধারাবাহিকে ‘রাসমণী’-র চরিত্র করছি না। সেটা করলে মানুষ তুলনা টানতে পারতেন। অভিনেত্রী হিসেবে সেই তুলনাকে আমি মেনেও নিতাম। কিন্তু এ ক্ষেত্রে সেই প্রশ্নই ওঠে না।

দিতিপ্রিয়ার সঙ্গে প্রতিযোগিতায় বিশ্বাসী নন সন্দীপ্তা।

দিতিপ্রিয়ার সঙ্গে প্রতিযোগিতায় বিশ্বাসী নন সন্দীপ্তা।

প্রশ্ন: ধারাবাহিকে এত বছর মুখ্য চরিত্রে অভিনয় করেছেন। প্রথম ছবিতে শুধু ‘ক্যামিও’ করতে রাজি হয়ে গেলেন?

সন্দীপ্তা:
(খানিক থেমে) ‘একান্নবর্তী’ মৈনাক ভৌমিকের ছবি। আর মৈনাকদার সঙ্গে কাজের সুযোগ কোন অভিনেতা হাতছাড়া করতে চায় বলুন তো! এই ছবিতে আমি আমার চরিত্রে অভিনয় করব। অর্থাৎ অভিনেত্রী সন্দীপ্তা সেন হয়েই মানুষের কাছে পৌঁছে যাব। এ রকম সুযোগ তো আর বার বার আসে না!

প্রশ্ন: বলিউডে ম্রুনাল ঠাকুর, হিনা খানদের অভিযোগ, ছোটপর্দার অভিনেতাদের ছবিতে গুরুত্ব দেওয়া হয় না। টলিউডেও কি তাই?

সন্দীপ্তা:
একেবারেই না। টলিউডের ক্ষেত্রে এ ধরনের কোনও সমস্যা আছে বলে আমি মনে করি না। ভেবে দেখুন, শ্রাবন্তী (চট্টোপাধ্যায়), পাওলিদি (পাওলি দাম), প্রিয়াঙ্কার (সরকার) মতো অভিনেত্রীরা কিন্তু ধারাবাহিক থেকেই উঠে এসেছেন। আজ তাঁরা প্রত্যেকেই ছবিতে সফল ভাবে কাজ করছেন।

প্রশ্ন: কাজের মতোই আপনার ব্যক্তিগত জীবন নিয়েও কিন্তু প্রচুর চর্চা…

সন্দীপ্তা:
(হেসে উঠে) এ আর নতুন কী! অভিনেতাদের জীবন নিয়ে মানুষের আগ্রহ থাকাটা তো অস্বাভাবিক নয়!

প্রশ্ন: শোনা যাচ্ছে, আপনার সঙ্গে রাহুল বন্দ্যোপাধ্যায়ের প্রেমটা নাকি ভেঙে গিয়েছে…

সন্দীপ্তা:
আপনি এখন শুনছেন এটা! আমি অনেক দিন আগেই শুনেছি। প্রচুর প্রশ্নও করা হয়েছে এই নিয়ে। কিন্তু একটা কথা কেউ বুঝতে চায় না। প্রেমটা থাকলে তবেই তো সেটা ভাঙারও অবকাশ থাকে। আমার এবং রাহুলের সম্পর্কটাকে মানুষ শুধু বন্ধুত্ব ভাবলে উপকৃত হব।

প্রশ্ন: তার মানে রুকমা রায়ের সঙ্গে রাহুলকে জড়িয়ে গুঞ্জন আপনাদের সম্পর্কে সত্যি প্রভাব ফেলেনি?

সন্দীপ্তা:
দেখুন, ‘দেশের মাটি’-তে ওদের জুটিটাকে মানুষ পছন্দ করছে। আর দর্শক পর্দায় যা দেখে, অনেক সময় সেটাকেই সত্যি বলে ধরে নেয়। ‘তুমি আসবে বলে’-র পর থেকে আমার এবং রাহুলের সঙ্গেও তো সেটাই হয়েছে। আমাদের নিয়েও তো কম লেখালেখি হয়নি। এমনকি এখনও হচ্ছে। এটুকু বলতে পারি, রাহুল আমার খুবই ভাল বন্ধু। আমি যেমন সব সময় ওর পাশে থেকেছি, ওকেও একই ভাবে পাশে পেয়েছি।

রাহুলের সঙ্গে সন্দীপ্তা।

রাহুলের সঙ্গে সন্দীপ্তা।

প্রশ্ন: ‘শুধু বন্ধু’র সঙ্গে বেনারস, পুরুলিয়ায় ছুটি কাটাতে যাওয়া যায়?

সন্দীপ্তা:
আমি আর রাহুল তো একা ছুটি কাটাতে যাইনি। আমাদের সঙ্গে আমাদের বন্ধুরাও থাকে। কিন্তু সেই বিষয়টা সবাই যেন এড়িয়ে যেতে চায়! বন্ধুরা মিলে একসঙ্গে ছুটিতে বেড়াতে যেতে পারব না? শীতকালে আমি, আমার মা, বাবা, রাহুল এবং আরও কয়েক জন বন্ধু মিলে পুরুলিয়া গেলাম। খবরের শিরোনাম হল ‘হবু শ্বশুর-শাশুড়িকে নিয়ে বেড়াতে গিয়েছেন রাহুল’। কেন এ রকমটা হবে বলুন তো! ত্বরিতা (চট্টোপাধ্যায়) আমার খুব ভাল বন্ধু। ওর সঙ্গেও নানা জায়গায় যাই, আড্ডা দিই। ওর সঙ্গে কিন্তু এ ভাবে নাম জড়ানো হয় না। কিন্তু রাহুলের সঙ্গে হয়। কিছু মানুষের মানসিকতাই এ রকম।

প্রশ্ন: কিন্তু নিন্দুকেরা যে বলে, আপনার জন্যই রাহুল-প্রিয়াঙ্কার বিচ্ছেদ হয়েছে…

সন্দীপ্তা:
কে কী ভাবল, সেটা আমি নিয়ন্ত্রণ করতে পারব না। গত বছর পুজোয় আমি আর প্রিয়াঙ্কা একটা গানের ভিডিয়োতে একসঙ্গে কাজও করলাম। ও হয়তো আমার খুব ভাল বন্ধু নয়। কিন্তু দেখা হলেই আমরা কথা বলি, একে অপরকে দেখে হাসি। আর এই সৌজন্যটুকু না দেখানোর কোনও কারণ আমি খুঁজে পাই না।

প্রশ্ন: লকডাউনে কাউন্সেলিং শুরু করলেন। মানুষের মনের দুঃখ সারাতে সাহায্য করছেন। নিজের মনে দুঃখ নেই?

সন্দীপ্তা:
থাকবে না কেন! সবার মনেই দুঃখ থাকে। কিন্তু জীবনের ছোট ছোট জিনিসগুলোর মধ্যে আনন্দ খুঁজে নিতে পারলেই দুঃখ অনেকটা কমে যায়। আমিও সেটাই করি।

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE