প্রশ্ন: প্রথম প্রেম?
সন্দীপ্তা: নাচ। তার পর সাইকোলজি। ঘটনাচক্রে অভিনয়ের জগতে প্রবেশ এবং সেটাও ভাল লেগে যায়।
প্রশ্ন: ছবি আঁকতেও পারেন বোধহয়...
সন্দীপ্তা: আমার ছবি আঁকা নিয়ে বেশ মজা হয় ইন্ডাস্ট্রিতে। কোথাও বেশিক্ষণ বসে থাকতে হলেই ছবি আঁকা শুরু করি। হাতের সামনে দেওয়াল, বোর্ড যা পাই। স্ক্রিপ্টের পিছনদিকের পাতাগুলোও ভরে ফেলি।
প্রশ্ন: কী আঁকেন?
সন্দীপ্তা: পাহাড়ের ফাঁক দিয়ে সূর্য, সামনে কুঁড়ে ঘর। নদী আর দূরে কয়েকটা গাছ। ছোটবেলা থেকে সেই একটাই ছবি আঁকি।
প্রশ্ন: সাইকোলজি ছেড়ে হঠাৎ অভিনয় জগতে পা দেওয়ার অভিজ্ঞতা কেমন ছিল?
সন্দীপ্তা: খুব ইন্টারেস্টিং। লাইট- ক্যামেরা আমায় ভীষণ ভাবে টানতে শুরু করল। প্রথম বুঝতে শিখলাম ক্যামেরাকে। কোন অ্যাঙ্গেলে দাঁড়ালে বা বসলে ক্যামেরায় কেমন দেখায়, কী ভাবে আলো ফেললে সেটা পর্দায় আরও ভাল ফোটে, এরকম নানা বিষয় কাছ থেকে দেখেই অভিনয় ব্যাপারটার প্রতিও আগ্রহ তৈরি হল। তার পর এই তো চলছে...
প্রশ্ন: ধারাবাহিক 'দুর্গা' শেষ হওয়ার সময় আরও নতুন কিছু করার কথা ভাবছিলেন?
সন্দীপ্তা: শেষ হওয়ার আগেই নতুন নতুন কাজের প্রস্তাব আসছিল। বেশিরভাগই মুম্বই থেকে। কিন্তু যাওয়ার প্রশ্নই ওঠে না। মাস্টার্স করছি তখন। পড়াশোনা ছেড়ে যেতে ইচ্ছে হয়নি।
প্রশ্ন: পড়ার জন্য মুম্বইয়ে কাজের সুযোগ হাতছাড়া করলেন?
সন্দীপ্তা: হ্যাঁ! সাইকোলজি নিয়ে পড়া শুরু করেছি যখন, শেষ তো করতেই হবে। আগে ভেবেছিলাম এম বি এ করব, কিন্তু অভিনয়ে ঢোকার পর ভাবলাম অন্তত নিজের ভাল লাগার বিষয়টা শেষ অবধি পড়ি। 'দুর্গা' শেষ হতে মাস্টার্স করতে শুরু করলাম, যাতে অভিনয়ের পাশাপাশি আর একটা দিক খোলা থাকে।
প্রশ্ন: অনেকে বলেন ইন্ডাস্ট্রিতে সব মানুষ সমান নয়, নতুন কেউ এলে তাঁকে চেপে দেওয়ার চেষ্টা চলে...
সন্দীপ্তা: হয় অনেক সময়, তবে আমি খুব ভাগ্যবতী এই দিক থেকে। যাঁদের সঙ্গে কাজ করেছি প্রথম, তাঁরা বড় মাপের শিল্পী। অসম্ভব সহযোগিতা করেছেন আমার সঙ্গে। প্রত্যেকে আমায় ভালবেসে আপন করে নিয়েছিলেন, না হলে হয়তো পারতাম না।
প্রশ্ন: আপনি কি মানুষজনের মন পড়ে ফেলে সেই মতো আচরণ করতেন?
সন্দীপ্তা: হা হা। সবার মন পড়ার চেষ্টাই করি না। সাইকোলজিস্টদেরও তো মাথা আর মনের বিশ্রাম প্রয়োজন। আমি যেমন সে ভাবেই চলেছি। যাঁর যা-ই অভিসন্ধি থাকুক, নিজের ইচ্ছেশক্তি, ভাগ্য এবং দক্ষতার জোরে আমি এগিয়ে চলেছি।
প্রশ্ন: যতই নিজের মতো থাকুন, গসিপ এড়ানো গেল কি? সেই তো রাহুলের সঙ্গে আপনাকে জড়িয়ে কথা উঠল...
সন্দীপ্তা: হ্যাঁ। আশ্চর্য ব্যাপার, মানুষকে বুঝিয়েও পারা যায় না কিছু জিনিস। যেটা ভাবতে ভাল লাগে, সবাই সেটাই ভাবেন তাই অকারণ গল্প রটে।ভিত্তিহীন কথা তো ধরে বসে থাকলে হয় না। আমি ওসব গায়ে মাখি না।
প্রশ্ন: রাহুল যেমন নিজের দিকটা নানা ভাবে স্পষ্ট করেছেন, আপনার দিকটা ততটা জানা যায়নি। কিছু বলতে চান?
সন্দীপ্তা: রাহুল আর আমি খুব ভাল বন্ধু ছিলাম। এ নিয়ে কোনওদিন কোনও বিভ্রান্তির জায়গাই তৈরি হয়নি। আমার জন্য তো ওদের বিচ্ছেদ হয়নি! এ কথা প্রিয়াঙ্কাও বলেনি কোনওদিন। বিচ্ছেদের সময় কাউকে শিখণ্ডী করে নিতে আসলে ভাল লাগে মানুষের।
প্রশ্ন: রাহুল-রুকমাকে একসঙ্গে দেখা যেতেই আপনাকে নিয়ে ফের কথা উঠল...
সন্দীপ্তা: ওদের একসঙ্গে দেখে যাঁরা আমার কথা ভেবে কষ্ট পাচ্ছেন, তাঁদের জন্য সমবেদনা রইল।
প্রশ্ন: নেতিবাচক এত কিছু শুনেও কী ভাবে এমন স্বাভাবিক, তরতাজা থাকেন?
সন্দীপ্তা: জীবনের ইতিবাচক দিক কম নয়। কে কী বলল তা নিয়ে মন খারাপ করে বসে থাকলে তো আসল ভাল ব্যাপারগুলোই হারিয়ে যাবে! আমি যে মূল্যবোধগুলো নিয়ে বড় হয়েছি সে সবই আমার বাঁচার মন্ত্র। আর আমার বাবা-মা যত ক্ষণ পাশে আছেন আর কোনও কিছুরই পরোয়া করি না।
প্রশ্ন: আপনার মধ্যে একটা শিক্ষিত বুদ্ধিমত্তার ছাপ রয়েছে। তথাকথিত ভাবে কমার্শিয়াল ছবির নায়িকা বলতে যা বোঝায় সেই ধরনের চরিত্রে কি আপনি স্বচ্ছন্দ?
সন্দীপ্তা: অবশ্যই। যে কোনও চরিত্র করতে পারাটাই অভিনয় দক্ষতা। সেটাই চ্যালেঞ্জ। আমি সত্যিই নানান ধরনের কাজের প্রস্তাবের অপেক্ষা করি। অনেক ভাল চিত্রনাট্য লেখা হয়, কিন্তু জানি না কেন আমার কাছে সেগুলোর ডাক আসে না।
প্রশ্ন: একটা তো পছন্দের ঘরানা আছে, 'রাবণ' না 'বেলাশেষে', আপনার টাইপ কোনটা?
সন্দীপ্তা: অবশ্যই 'বেলাশেষে'। শিবুদাদের স্ক্রিপ্ট আমার খুব ভাললাগে। সেরকম সুযোগ পেলে নিশ্চয়ই করব।
প্রশ্ন: সমান্তরাল ধারার ছবিতেও সে ভাবে আপনাকে দেখতে পাওয়া যায় না কেন?
সন্দীপ্তা: ঠিক জানি না...অনেকেই বলেন আমি ভাল কাজ করি। প্রশংসা পাই অনেক। কিন্তু ভাল চরিত্রের বেলায় কেন প্রস্তাব আসে না সেই অঙ্কটা আজও বুঝি না।
প্রশ্ন: এখন কী নিয়ে ব্যস্ত?
সন্দীপ্তা: কাজের পাশাপাশি সোশ্যাল মিডিয়া। ইউটিউব শর্টস থেকে শুরু করে রিলস্। তার পর নাচ তো আছেই। সে সব নিয়ে সারাদিন কেটে যায়।
প্রশ্ন: আবার বেড়াতে যাচ্ছেন কোথাও?
সন্দীপ্তা: হ্যাঁ। বেড়ানোর জন্যই তো বাঁচা! এবার যাচ্ছি দক্ষিণ এশিয়ার এক দ্বীপে।
প্রশ্ন: একা না সবান্ধব?
সন্দীপ্তা: (হেসে ) না, একা যাচ্ছি না। বন্ধুরা থাকছেন। ইন্ডাস্ট্রির কেউ নন তাঁরা।
প্রশ্ন: প্রেম করছেন না তাহলে?
সন্দীপ্তা: সময় নেই এ সবের। বিয়ে করলে সবাইকে ডেকে ঘটা করে জানাব। আপাতত এমন কোনও আপডেট নেই।
প্রশ্ন: শুনেছি আপনার ফ্যাশন সেন্স খুব চমকপ্রদ, জামাকাপড় কেনেন বেছে...
সন্দীপ্তা: খুবই ভাল লাগে শপিং করতে। বিশেষত পুরুষ বন্ধুদের পোশাক বেছে দিতে। ওরা যখন কেনাকাটা করতে যায়, আমায় নিয়ে যেতে চায়।
প্রশ্ন: একইসঙ্গে সেলিব্রিটি এবং সাইকোলজিস্ট, কী ভাবে সামলান? রোগীদের প্রতিক্রিয়া কী?
সন্দীপ্তা: সাইকোলজি আমার সঙ্গে জুড়েই থাকবে। রাজাবাজার সায়েন্স কলেজে কাউন্সিলিং করাতাম। লকডাউনের পর থেকে অনলাইনে এবং বাড়িতেও করাই। শুরুতে ভয় পেতাম, আমায় সবাই কী ভাবে নেবেন, আদৌ মনের কথা বলবেন তো? কিন্তু পরে বুঝলাম এটা আমি পারি। কেউ কোনওদিন আমার অন্য পরিচয়ের কারণে স্বাভাবিক হতে পারছেন না, এমন হয়নি।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy