‘কিশমিশ’-এর টিনটিন হয়ে উঠতে দেবের চেষ্টায় এতটুকু ভেজাল নেই! কতটা মেদ ঝরিয়েছে! রোজ নতুন নতুন ঝুঁকি নিচ্ছে! দারুণ কিন্তু! রুক্মিণীকেও জব্বর স্মার্ট লেগেছে! খরাজ মুখোপাধ্যায়ের অভিনয় নিয়ে আলাদা করে আর কী বলার থাকতে পারে! পরের পর গোল দিয়েছেন মাঠ জুড়ে।
‘কিশমিশ’-এ জমজমাট দেব-রুক্মিণী!
প্রিয় সোহিনী,
আগে কখনও চিঠি লিখেছি তোকে? বোধহয় না! আজ উপায় নেই! লিখতেই হল!
খানিক আগে ‘কিশমিশ’ দেখে বেরোলাম! ছবি দেখতে দেখতে আমাদের কলেজবেলা ফিরে এল জানিস! গ্রিন জোন, পোর্টিকো, কফিহাউজ, শ্যামবাজার! আরও কত কী! গল্পটা অনেকটা তোর, আমার মতো! কী অদ্ভুত মিল! ঝকঝকে দুই কলেজ যাওয়া তরতাজা প্রাণ!
খামখেয়ালি, অপরিণত, ল্যাদখোড় টিনটিন। অন্যদিকে দায়িত্ববান, পরিণত, ঝকঝকে রোহিনী। দেখেছিস তোর নামের সঙ্গে নায়িকার কী কাকতালীয় ছন্দমিল!
শুরুটাও অনেকটা আমাদের মতো! শুধু জার্নিটা উলটপুরান! টিনটিন কলকাতা থেকে পৌঁছল দার্জিলিং। আমি কোচবিহার থেকে সোজা কলকাতা। ঝগড়া, খুনসুটি, কমিক্স স্ট্রিপ, কলেজ ব্যান্ডের মধ্যে দিয়ে কখন যে ঝপাঝপ প্রেমটা হয়ে গেল! বুঝে ওঠাই হল না! আর তার পরেই কেতায় ভর করে টিনটিনের দুরন্ত প্রেমের প্রস্তাব। রেগে কাঁই রোহিনী! ‘‘ভালবাসার মানে বুঝিস? দায়িত্ব নিতে জানিস? দুম করে চলে এলেন প্রেমের প্রস্তাব নিয়ে!’’ স্বভাবতই, সটান বাতিল। টিনটিনের হৃদয় ভেঙে চৌচির!
মিল খুঁজে পাচ্ছিস তো? সেই ফার্স্ট ইয়ারের শুরুতেই তুই যখন দূরছাই করে বাতিল করলি! সে কী যন্ত্রণা! দুঃখ বিলি কেটে যায় গোটা শরীরে! কান্না যেন থামতেই চায় না! তখন এক এবং একমাত্র বন্ধু দেবদাসের শাহরুখ খান। পরের পর ডায়লগ আউড়ে নেশায় দিনযাপন!
বিশ্বাস কর টিনটিনেরও ছবিতে এক অবস্থা। এতটুকু বাড়িয়ে বলছি না!
কিন্তু এত তাড়াতাড়ি কি নটে গাছটি মুড়োলে চলে! ঠিক যে ভাবে তুই থার্ড ইয়ারে বাউন্স ব্যাক করলি! রোহিণীও ৩৬০ ডিগ্রি ঘুরে প্রেমের ঝুলি হাতে হাজির! টয়ট্রেন থেকে ট্রামলাইন। ভিক্টোরিয়ায় ঘোড়ার গাড়িতে প্রেমবিলাস কিংবা হাতে হাত রেখে ম্যালের সূর্যোদয়! কী নেই 'কিশমিশ'-এ! ইলিশ-চিংড়ির লড়াই আছে, পাড়ার রোয়াকে রাজনীতির কচকচি আছে! উত্তম-সৌমিত্র ডন বৈঠক আছে! ভরপুর ‘রমকম’ প্যাকেজ বলতে যা বোঝায় ঠিক তা-ই। শেষটাও কি তোর আমার মতো? জানি খুব জানতে ইচ্ছে করছে!
উহুঁ! ওটা বলছি না! চটপট দেখে ফেল না ছবিটা! যতই উচ্চারণের ত্রুটি থাক, টিনটিন হয়ে উঠতে দেবের চেষ্টায় এতটুকু ভেজাল নেই! কতটা মেদ ঝরিয়েছে! রোজ নতুন নতুন ঝুঁকি নিচ্ছে! দারুণ কিন্তু!
রুক্মিণীকে জব্বর স্মার্ট লেগেছে! খরাজ মুখোপাধ্যায়ের অভিনয় নিয়ে আলাদা করে আর কী বলার থাকতে পারে! পরের পর গোল দিয়েছেন মাঠ জুড়ে। রাশভারী চরিত্রে অঞ্জনা বসুকে দিব্যি মানিয়েছে। বরং জুন মালিয়া কিছুটা নিষ্প্রভ! যাই বল, ছবির আসল নায়কের আবির্ভাব কিন্তু বিরতির একটু আগে। চোখে সানগ্লাস, ধূসর চেক ব্লেজার, গলায় মাফলার উড়িয়ে কমলেশ্বর মুখপাধ্যায়ের প্রবেশ!
প্রথম ছবি হিসেবে পরিচালক রাহুল মুখোপাধ্যায় ভীষণ তরতাজা, ঝকঝকে! নীলায়নের গান আলাদা করে মনে থেকে যাবে! মধুরার ক্যামেরার লেন্সে এক ধরনের স্ট্রিট স্মার্টনেস আছে!
আর দেরি করিস না। চটপট দেখে ফেল। পারলে সঙ্গে তিতাস, ইন্দ্রাণীকেও নিয়ে যা। একটা রিইউনিয়ন হয়ে যাবে! ঠকবি না! কথা দিচ্ছি। ছবি দেখতে দেখতে নিশ্চিত কলেজেবেলায় ফিরতে ইচ্ছে করবে!
তোর টিনটিন।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy