Advertisement
০৫ নভেম্বর ২০২৪
Paayel Sarkar Interview

রাজনীতি আমার কেরিয়ারের কোনও রকম ক্ষতি করেনি: পায়েল

রাজনীতি থেকে সচেতন ভাবে দূরত্ব বজায় রাখছেন। আপাতত অভিনয়কেই আঁকড়ে পথ চলতে চাইছেন পায়েল।

ইন্ডাস্ট্রিতে নিজের জায়গা ধরে রাখতে পরিশ্রমের কোনও বিকল্প নেই বলেই মনে করছেন পায়েল।

ইন্ডাস্ট্রিতে নিজের জায়গা ধরে রাখতে পরিশ্রমের কোনও বিকল্প নেই বলেই মনে করছেন পায়েল। ছবি: সংগৃহীত।

অভিনন্দন দত্ত
কলকাতা শেষ আপডেট: ২৭ জানুয়ারি ২০২৩ ১৯:৩৪
Share: Save:

শিশির কুমার ভাদুড়ির জীবনের আধারে তৈরি ছবিতে বিশেষ চরিত্রে রয়েছেন পায়েল সরকার। সম্প্রতি, এক সন্ধ্যায় আনন্দবাজার অনলাইনের সঙ্গে আড্ডায় পায়েল।

প্রশ্ন: কী ব্যাপার বলুন তো। হঠাৎ পিরিয়়ড ছবি করতে রাজি হয়ে গেলেন!

পায়েল: পিরিয়ড ছবি। তার উপর বায়োপিক। বাংলায় অনেক সময়েই বাজেটের কারণে এই ধরনের ছবি তৈরি হয় না। চিত্রনাট্য পড়ার দিন থেকে ছবিটার জন্য প্রস্তুতি নিতে শুরু করেছিলাম। প্রচুর খেটেছি। এই ছবিটা আমার কেরিয়ারে অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ ছবি হয়ে রয়ে যাবে।

প্রশ্ন: ‘বড়বাবু’ ছবিতে আপনার চরিত্রটা কী রকম?

পায়েল: শিশির ভাদুড়ির জীবন ছিল বর্ণময়। তাঁর সংস্পর্শে এসেছিলেন একাধিক নারী। ছবিতে আমি কঙ্কাবতীর চরিত্রে। কঙ্কাবতী তাঁর জীবনে অনেকটা পরের দিকে এসেছিলেন। দু’জনের বয়সের পার্থক্যও অনেকটাই।

প্রশ্ন: আপনি পরিশ্রমের কথা বলছিলেন। কঙ্কাবতী হয়ে ওঠার জন্য নিজেকে কী ভাবে তৈরি করেছিলেন?

পায়েল: রেশমিদি (ছবির পরিচালক রেশমি মিত্র) নিজে নাটক থেকে এসেছেন। আমাকে বেশ কিছু বই পড়তে দিয়েছিলেন। নীলদাও (নীল মুখোপাধ্যায়) আমাকে বেশ কিছু পড়ার জিনিস দিয়েছিলেন। আমার তো নাটকের কোনও ব্যাকগ্রাউন্ড নেই। তাই এই ছবির জন্য নিজেকে তৈরি করতে অনেকটাই সময় নিয়েছিলাম।

‘বড়বাবু’ ছবিতে কঙ্কাবতীর চরিত্রে পায়েল।

‘বড়বাবু’ ছবিতে কঙ্কাবতীর চরিত্রে পায়েল। ছবি: সংগৃহীত।

প্রশ্ন: অতিমারির পর থেকে বাংলা ছবির পরিস্থিতি নিয়ে আলোচনার শেষ নেই। এখন টলিপাড়ায় ছবি তৈরির ক্ষেত্রে কোনও পার্থক্য নজরে এসেছে?

পায়েল: নিঃসন্দেহে বাংলা ছবি তৈরির ধরন বদলেছে। এখন বাণিজ্যিক মশালা ছবি সেই অর্থে তৈরি হচ্ছে না। ওটিটিতে খুব ইন্টারেস্টিং কাজ হচ্ছে। আমি নিজেও ওটিটিতে কাজ করছি।

প্রশ্ন: কিন্তু কখনও কি এটা মনে হয় যে আপনি আরও বেশি বা অন্য ধরনের কাজ করতে পারতেন?

পায়েল: দেখুন, ‘কী করতে পারতাম’, সেটা নিয়ে ভাবার মতো মানুষ আমি নই। সামনের দিকে তাকিয়ে বাঁচতেই পছন্দ করি। আমি শাহরুখ খানের খুব বড় ফ্যান। ওঁকে শুধু অভিনেতা হিসেবে নয়, ওঁর কথা থেকে শুরু করে কামব্যাক— সবটাই আমাকে ভীষণ অনুপ্রাণিত করে। ওই মানুষটা যদি পিছনে না তাকিয়ে এগিয়ে যেতে পারেন, সেখানে আমি তো নগণ্য!

প্রশ্ন: ‘পাঠান’ দেখে ফেলেছেন নিশ্চয়ই।

পায়েল: ব্যস্ততার কারণে এখনও দেখে উঠতে পারিনি। কিন্তু অবশ্যই দেখব। অনেক দিন পর আবার সিনেমা হলে বসে শাহরুখের ছবি দেখব ভেবেই মারাত্মক আনন্দ হচ্ছে।

প্রশ্ন: ইন্ডাস্ট্রিতে অনেকগুলো বছর কাটালেন। সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ শিক্ষণীয় জিনিসটা কোনটা?

পায়েল: পরিশ্রমের কোনও বিকল্প নেই। কেরিয়ারের শুরুর দিকে এটা ততটা বুঝতাম না। কিন্তু এখন অভিজ্ঞতা থেকে বুঝি, চেষ্টায় যেন কোনও খামতি না থেকে যায়।

শাহরুখ খান পায়েলের জীবনের অন্যতম অনুপ্রেরণা।

শাহরুখ খান পায়েলের জীবনের অন্যতম অনুপ্রেরণা। ছবি: সংগৃহীত।

প্রশ্ন: টলিপাড়ায় শাসকদলের প্রভাব নিয়ে নতুন করে কিছু বলার নেই। অনেকেই বলেন, রাজনীতিতে আসার পর আপনাকে কোণঠাসা করা হয়েছে। কী বলবেন?

পায়েল: (একটু চুপ থাকার) রাজনীতিতে আসার পর আমি যতটা নিয়মিত কাজ করছি, রাজনীতি- পূর্ব কেরিয়ারে কিন্তু এক সঙ্গে সে রকম কাজ করিনি। তাই কে বা কারা এগুলো বলছেন আর কেনই বা বলছেন, আমার জানা নেই।

প্রশ্ন: তার মানে কেরিয়ারে গতি এসেছে বলতে চাইছেন।

পায়েল: রাজনীতি আমার কেরিয়ারের ক্ষতি করেনি, এটাই বলতে পারি।

প্রশ্ন: রাজনীতি থেকে সরে এলেন কেন?

পায়েল: তিন-চার মাস রাজনীতির মধ্যে থেকে এটাই বুঝেছি যে অভিনয়টাই আমার প্রায়োরিটি এবং প্যাশন। রাজনীতিতে সময় দিতে হয়। হয়তো দিনের ২৪ ঘণ্টার চেয়েও রাজনীতি আপনার থেকে বেশি সময় দাবি করে। সেই সময় আমার নেই। এই মুহূর্তে রাজনীতি করতে চাই না। ভবিষ্যতে বা ১০ বছর পর কী হবে, সেটা তখন দেখা যাবে।

প্রশ্ন: রাজনীতিতে পা রাখাকে তা হলে সঠিক সিদ্ধান্ত বলবেন, না কি ভুল সিদ্ধান্ত?

পায়েল: আমি বিশ্বাস করি, জীবনে কোনও সিদ্ধান্তই ভুল হতে পারে না। প্রতিটা পদক্ষেপ মানুষকে কিছু দেয় বা শেখায়। সে রকমই রাজনীতিও আমাকে অনেক কিছু শিখিয়েছে।

প্রশ্ন: দলের (বিজেপি) সঙ্গে আপনার এখন সম্পর্কটা কী রকম?

পায়েল: দল থেকে পদত্যাগ করিনি। ওরাও আমাকে জোর করেননি আর আমিও এখনই কিছু করতে চাইছি না।

প্রশ্ন: ইন্ডাস্ট্রিতে শাসকদলের সাংসদ ও বিধায়কের আধিক্য। বিজেপিতে নাম লেখানোর পর তাঁদের সঙ্গে সমীকরণে কি কোনও পরিবর্তন হয়েছে?

পায়েল: ইন্ডাস্ট্রির শিল্পীরা খুবই পরিণতমনস্ক। এই তো কাঞ্চনদা (মল্লিক)-র সঙ্গে একটা কাজ শেষ করলাম। কমলদার (কমলেশ্বর মুখোপাধ্যায়) অনেক ছবিতে আমি কাজ করেছি। প্রত্যেকে একে অপরের সঙ্গে যোগাযোগ রেখে চলেন। আসলে, রাজনৈতিক বিশ্বাসকে আমরা বন্ধুত্বের মধ্যে পাঁচিল তুলতে দিই না।

প্রশ্ন: সামনেই তো আপনার জন্মদিন। সে দিনের কী পরিকল্পনা?

পায়েল: (হেসে) সাধারণত পরিবার আর হাতেগোনা বন্ধুদের সঙ্গেই আমি জন্মদিনটা কাটাতে পছন্দ করি। গত বছর তো শুটিংয়ে দার্জিলিংয়ে ছিলাম। এ বারেও আউটডোর থাকবে শুনছি। তাই এখনও কোনও রকম পরিকল্পনা করে উঠতে পারিনি।

অন্য বিষয়গুলি:

Payel Sarkar Tollywood Actor Interview
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE