Advertisement
২২ নভেম্বর ২০২৪
Ruma Guha Thakurta

‘মা কাউকে বিরক্ত না করে নিজের মতোই চলে গেল’

রুমা গুহঠাকুরতা চলে যাওয়ার পর আনন্দবাজার ডিজিটালকে মায়ের কথা বললেন অয়ন গুহঠাকুরতাআমার ছোটবেলা কেটেছে মায়ের সঙ্গে সঙ্গে। আমার মা রুমা গুহঠাকুরতা। 

রুমা গুহঠাকুরতার স্মৃতিচারণ করলেন ছোট ছেলে অয়ন।

রুমা গুহঠাকুরতার স্মৃতিচারণ করলেন ছোট ছেলে অয়ন।

শেষ আপডেট: ০৩ জুন ২০১৯ ১১:৩৪
Share: Save:

আমার ছোটবেলা কেটেছে মায়ের সঙ্গে সঙ্গে। আমার মা রুমা গুহঠাকুরতা

কাল রাতেই আমাদের বালিগঞ্জ প্লেসের বাড়িতে এক সঙ্গে মা আর ছেলে ক্রিকেট দেখছিলাম। গল্প করছিলাম। মা খুব ক্রিকেট দেখতে ভালবাসত। এই কিছু দিন হল দাদার বাড়ি থেকে (অমিতকুমার) মা আমার কাছে এল। নাতি আর নাতবৌকে এক সঙ্গে দেখবে বলে। ওদের দু’জনকে দেখে খুব খুশি ছিল মা।

সেই মা ভোর বেলা নিজের ঘরে হঠাৎ পাথর হয়ে গেল।
কী বলব মা কে নিয়ে? মা? নাকি রুমা গুহঠাকুরতা?
ওরকম গায়িকা, অভিনেত্রী, গুহঠাকুরতা বাড়ির বড় বউ... সব মিলিয়ে মা এক আশ্চর্য ব্যাক্তিত্ব ছিল।

আরও পড়ুন: প্রয়াত রুমা গুহ ঠাকুরতা

ছোটবেলা জুড়ে শীতকালে ময়দানে বিদ্যাসাগর মেলা, সমবায় মেলা, নেতাজি সুভাষ মেলা, বিবেকানন্দ মেলা, সুখাদ্য মেলা... সারা শীতকালটাই মেলা হত।

আরও পড়ুন: কিশোরের বায়োপিক করা কঠিন, বললেন অমিত​

বিদ্যাসাগর মেলা থেকে সুভাষ মেলা সবেতেই গানের জলসা আর দেশাত্মবোধক গানের ডালি নিয়ে হাজির হত আমার মা, রুমা গুহঠাকুরতা ও তার ক্যালকাটা ইউথ কয়্যার। আমার মা-র লড়াই আর দাপট পুরোটাই গানের মধ্যে, মঞ্চের আঙিনায় আলোকিত হত। কয়্যারের অ্যালবাম রিলিজ। ঠিক হল ইন্দিরা গাঁধীর হাত দিয়ে হবে। আমি মায়ের সঙ্গে ইন্দিরা গাঁধীর বাড়ি গেলাম। ওই প্রথম ও ভাবে ইন্দিরা গাঁধীকে দেখা।

আমার দাদু ছিলেন সত্যজিৎ রায়। মায়ের মামা। মার সঙ্গে ওই পরিবারের খুব মিলমিশ ছিল। ‘প্রতিদ্বন্দ্বী’তে তো আমি মার উৎসাহেই ছোট একটা কাজ করেছিলাম।

লাল পাড় সাদা ধনেখালি শাড়ি মায়ের প্রিয়। জৌলুস নয়, কণ্ঠ, শব্দ, ভাষাই ছিল ওর সম্পদ। গমগম করত কলকাতার এক এক সন্ধে।
‘বিস্তির্ণ দু’পারে’, ‘ওঠো গো ভারত লক্ষ্মী’, ‘মুক্তির মন্দির সোপান তলে’, ‘হেই সামালো ধান হো কাস্তেটা দাও শান হো জান কবুল আর মান কবুল আর দেবনা আর দেবনা রক্তে বোনা ধান মোদের প্রাণ হো।’— সব গণসঙ্গীত, স্বদেশ পর্যায়ের গানে কী দারুন সেই স্মৃতি। আজ ভাবলেও অবাক লাগে ময়দান কত কত মুক্তমঞ্চে ইতিহাসের গানের সাক্ষী।
খুব স্নেহশীল ছিলেন মা। আর বরাবর নিজের কারণে কাউকে যন্ত্রণা দিতে চাননি। সেই রেশ মৃত্যুতেও রেখে গেল মা। কাউকে না জানিয়ে, আমাদের বিরক্ত না করে নিজের মতো করে ছেড়ে গেল আমাদের।

এই যাওয়ার মধ্যেও বলা রইল... ‘স্বর্গ যদি কোথাও থাকে নামাও তাকে মাটির পর’ আজ ভোর যেন এই কথাই জানিয়ে গেল।

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy