বিনোদন দুনিয়ার মানুষদের পেশাগত জীবন অনিশ্চিত। এই পর পর কাজ, অভিনয়ে সাফল্য, প্রচুর উপার্জন, যশ, খ্যাতি; তার পরেই হয়তো টানা কয়েক মাস উপার্জনহীন। এই জন্য অনেকেই অভিনয়ের পাশাপাশি উপার্জনের বিকল্প পথ খুঁজে নিয়েছেন। যেমন, দেবের রেস্তরাঁ রয়েছে। মেয়েদের রূপচর্চার জন্য সালোঁ খুলেছেন রাজা গোস্বামীর স্ত্রী মধুবনী গোস্বামী। সইদ আরেফিন, নীল-তৃণার পোশাক বিপণি রয়েছে। সেই তালিকায় নতুন সংযোজন যিশু-নীলাঞ্জনা সেনগুপ্তের জনপ্রিয় ধারাবাহিক ‘হরগৌরী পাইস হোটেল’-এর অভিনেত্রী শুভস্মিতা মুখোপাধ্যায়। আনন্দবাজার ডট কমকে অভিনেত্রী জানিয়েছেন, গত আড়াই বছরের সমস্ত সঞ্চয় দিয়ে তিনি তাঁর মা লোপামুদ্রা মুখোপাধ্যায়ের জন্য একটি নেল আর্ট সালোঁ খুলে দিয়েছেন!
ইতিমধ্যেই এই সালোঁর জন্য খরচ হয়ে গিয়েছে চার লক্ষেরও বেশি টাকা! ভবিষ্যৎ নিয়ে কিছু না ভেবেই সমস্ত সঞ্চয় খরচ করে ফেললেন?
প্রশ্ন ছিল শুভস্মিতার কাছে। অভিনেত্রী পাল্টা কয়েকটি যুক্তি দিয়েছেন। তাঁর কথায়, “প্রথমত, আমি বড় হয়ে গিয়েছি, অভিনয়ে ব্যস্ত। আমার মা একা হয়ে পড়েছেন। মা অনেক দিন ধরেই চাইছিলেন, কিছু একটা করবেন। আমাকেই সেই দায়িত্ব দিয়েছিলেন। অনেক ভেবে তাই সালোঁ খুলে দিলাম। দুই, অনেকে হয়তো বলবেন, মায়ের এই সালোঁ ভবিষ্যতে আমারই। অর্থাৎ, ভবিষ্যতে কোনও আর্থিক সমস্যায় পড়লে এই সালোঁ বিকল্প উপার্জনের পথ দেখাবে। আমিও বিষয়টি অস্বীকার করছি না। এই কারণেই অভিনয় দুনিয়ার অনেকেই অভিনয়ের পাশাপাশি বিকল্প পেশা খুঁজে নিয়েছেন।”
রইল বাকি শুভস্মিতার ভবিষ্যৎ চিন্তা। অভিনেত্রীর কথায়, “ছোটবেলায় মা-বাবার বিচ্ছেদ দেখেছি। ছোট থেকে একা হাতে সংসার চালাচ্ছি। অভাব কাকে বলে জানি। অনেক ওঠাপড়ার মধ্যে দিয়ে গিয়েছি। তাই আর ভয় পাই না। জানি, ঠিক লড়ে নেব।” তাই তিনি নিশ্চিন্তে দোকানের ভার মা আর দিদার উপর ছেড়ে দিয়েছেন। তাঁকে বড় করে তোলার নেপথ্যে রয়েছেন এই দুই মানুষ। খুব দরকার না পড়লে আপাতত তিনি অভিনয়ের বাইরে অন্য কোনও দিকে মনোযোগ দেবেন না।
আরও পড়ুন:
দিন কয়েক আগে গুরুতর অসুস্থ হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছিলেন অভিনেত্রী। গ্যাসট্রিকের ক্ষত, ফুসফুসের সংক্রমণে শয্যাশায়ী হয়ে পড়েছিলেন তিনি। এখন আগের তুলনায় অনেকটাই সুস্থ। ছোট পর্দাতেই ফের তাঁকে দেখা যাবে? না কি বড় পর্দার জন্য চেষ্টা করছেন? শুভস্মিতার কথায়, “প্রসেনজিৎ চট্টোপাধ্যায়ের সঙ্গে কাজের সুযোগ পেয়েও হারালাম। ‘কাকাবাবু’তে আমাকে যে চরিত্রের জন্য ভাবা হয়েছিল তার তুলনায় আমাকে ছোট দেখায়। ফলে, হল না। তবে আমি হতাশ নই। জানি, বড়-ছোট পর্দা বা সিরিজ়— কোনও না কোনও মাধ্যমে ঠিক কাজ পাব।”