তিন্নির জন্য সৌজন্য-গুনগুনের মধ্যে ফের নতুন সংঘাত?
৩০০ পর্বে পা দিয়েই স্বমহিমায় ‘খড়কুটো’। চলতি সপ্তাহে স্টার জলসায় ‘চ্যানেল সেরা’ এই ধারাবাহিক। রেটিং চার্টে দ্বিতীয়। অনেক ওঠাপড়া, দর্শকের মান-অভিমানের সাক্ষী। সাক্ষী করোনা অতিমারি, লকডাউন, ‘শ্যুট ফ্রম হোম’-এর। ধারাবাহিকের গল্প, নানা অভিজ্ঞতা কতটা ছাপ ফেলল সফল প্রযোজক শৈবাল বন্দ্যোপাধ্যায়ের মনে? আনন্দবাজার অনলাইনের সঙ্গে কথোপকথনের সময় শৈবাল স্মৃতিমেদুর। জানালেন, ‘‘লীনা গঙ্গোপাধ্যায় বলেছিলেন, লকডাউনের সময় সবার মন ভাল করতে এমন যৌথ পরিবারের গল্প বলব যারা শুধুই হাসি-মজায় দিন কাটানোর চেষ্টা করে। দেখলাম, লীনা যা বলেছেন সেটাই পর্দায় বাস্তবায়িত হয়েছে। বিয়ের দৃশ্য দিয়ে শুরু। সেখানে হরেক রকম মানুষের মেলা। বিচিত্র তাদের গতিবিধি, আচরণ। দেখে সত্যিই আশা জেগেছিল।’’ তারই ফলাফল টানা অনেকটা সময় ধরে রেটিং চার্টে ‘খড়কুটো’-এর ‘সেরার সেরা’ তকমা পাওয়া। যদিও একটা সময় সেই জায়গা থেকে ছিটকেও গিয়েছে ধারাবাহিক। তাই নিয়ে নেটমাধ্যমে অভিমান প্রকাশ করেছেন দর্শকেরা। শৈবালের দাবি, এটাই স্বাভাবিক। এবং, দর্শকেরাও মন থেকে ধারাবাহিকটিকে গ্রহণ করেছেন বলেই অভিমান প্রকাশ করেছেন। এক টানা ‘সেরা’-র তকমা ধরে রাখা কারওর পক্ষেই সম্ভব নয়।
পাশাপাশি প্রযোজকের দাবি, লকডাউনে জন্ম নিয়ে আনলক পর্ব, অতিমারির দ্বিতীয় ঢেউ পেরিয়ে বাড়ি থেকে শ্যুটিং করেও কিন্তু জনপ্রিয়তা কমেনি ধারাবাহিকের। এর জন্য তিনি আন্তরিক ধন্যবাদ জানাচ্ছেন প্রযোজক-লেখক-চিত্রনাট্যকারকে।
কেউ গুনগুনকে না দেখে থাকতে পারেন না। কারওর মনের মানুষ সৌজন্য। শৈবালের সবচেয়ে প্রিয় কোন চরিত্র? আত্মসমর্থনের ভঙ্গিতেই তাঁর স্বীকারোক্তি, ‘‘প্রত্যেকটি চরিত্রই এত দুর্দান্ত যে এ ভাবে কাউকে আলাদা করে ‘প্রিয়’ হিসেবে বেছে নেওয়া অসম্ভব।’’
ধারাবাহিকে চমক আরও আছে। চিত্রনাট্য বলছে, সৌজন্য-গুনগুনের সম্পর্কের দোটানায় ফের হাজির তিন্নি দিদি! যা দেখে দর্শকেরা ইতিমধ্যেই নেটমাধ্যমে মন্তব্য করেছেন, ‘নাও! আবার ঝামেলা শুরু’। একই সঙ্গে গুনগুনের প্রতিজ্ঞা, সে নিজেকে বদলে ফেলবে। পড়াশোনা শেষ করে নিজের পায়ে দাঁড়াবে। সৌজন্যকে দেখিয়ে দেবে, চাইলে সে-ও সব কিছুই করতে পারে।
সত্যি এ বারে বড় হয়ে যাচ্ছে গুনগুন? ‘‘এটাই ৩০০ পর্বের বড় মোচড়। সবাই ভাবতে থাকুন, গুনগুন বড় হয়ে যাবে না আগের মতোই থাকবে’’, আনন্দবাজার ডিজিটালকে সাফ জবাব ‘গুনগুন’ ওরফে তৃণা সাহার। তার পরেই যেন স্বগতোক্তি তাঁর, গুনগুনের আর বড় হওয়া হবে না। যেমন আছে তেমনই থাকবে। আসলে, মাঝেমাঝে যখনই ধাক্কা খায়, মন খারাপ হয় তখনই এ সব ভাবে, বলে। তৃণার দাবি, গুনগুন বদলে গেলে ধারাবাহিকের সেই মজাটাও হয়তো থাকবে না। দর্শকেরাও চান না গুনগুন বদলাক। তবে পুরোটাই নির্ভর করছে লীনা গঙ্গোপাধ্যায়ের উপর। তিনি যেটা ভাল বুঝবেন সেটাই হবে।
শুধুই দর্শকেরা নন, গুনগুন একই রকম থাকুক এমনটা চান ধারাবাহিকের ‘পটকা’ ওরফে অম্বরীশ ভট্টাচার্যও। ফিরে দেখতে গিয়ে অকপটে স্বীকার করলেন, ‘‘মেগা মানেই একটা সময়ের পর ভীষণ একঘেয়েমি। এর আগে আমার কাছে তেমনটাই মনে হত। এক সহ-অভিনেতা। এক রূপসজ্জার ঘর। একই গল্পের বাড়বৃদ্ধি। আগ্রহ হারিয়ে ফেলতাম। ‘খড়কুটো’ সত্যিই ব্যতিক্রম। ৩০০ পর্ব পেরিয়ে আসার পরেও রোজ মনে হয় যেন নতুন ধারাবাহিক, নতুন চরিত্রে অভিনয় করছি।’’ কী করে এটা সম্ভব হচ্ছে? অম্বরীশের দাবি, পুরো কৃতিত্ব লীনা গঙ্গোপাধ্যায়ের। তিনি একঘেয়েমিতে যেমন দর্শকদের ভুগতে দিচ্ছেন না তেমনি অভিনেতাদেরও। গল্পের নিত্য নতুন মোচড়ে অভিনয় করতে তাই সবাই মুখিয়ে থাকেন। পাশাপাশি, তিনি অভিনেতাদের পারস্পরিক সু-সম্পর্কের কথাও বলেছেন। অম্বরীশের মতে, ‘‘যত ভাল অভিনেতাই হোন, টিমওয়র্ক না থাকলে অভিনয়ে তার ছাপ পড়ে। আমরা প্রত্যেকে ‘খড়কুটো’ পরিবারের সদস্য। তাই আমাদের স্বতঃস্ফূর্ততা মন ছুঁয়ে যায় দর্শকদেরও।’’
ধারাবাহিকে তিন্নি ফিরেই সটান সৌজন্যের বাড়ি চলে এসেছে। বিদেশে যাওয়ার ফর্মে সৌজন্যকে সই করাতে। তার মানে আবার সৌজন্য-গুনগুনের মধ্যে ফের নতুন সংঘাত? ফোনে পাওয়া যায়নি ‘সৌজন্য’ ওরফে কৌশিক রায় ‘তিন্নি’ ওরফে রুকমা রায়কে। তবে আগের সম্প্রচারিত পর্বে সৌজন্য গুনগুনের কাছে স্বীকার করেছে, তিন্নি তাদের মধ্যে রয়েই যাবে ছোট্ট হাইফেনের মতো। তাদের ঝগড়া, ভালবাসা বাড়াতে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy