ফের অভিযোগে বিদ্ধ দুই বাংলার চর্চিত নায়িকা পরী মণি। খবর, বৃহস্পতিবার তাঁর বিরুদ্ধে স্থানীয় থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন এক গৃহকর্ম সহায়িকা। তাঁর অভিযোগ, পরী মণির শিশুকন্যাকে খাওয়ানো নিয়ে বচসা বাধে। যার ফলে তাঁকে রীতিমতো মারধর করেন নায়িকা। তিনি অসুস্থ বোধ করায় হাসপাতালে যেতে চান। সেটাও নাকি নিয়ে যাননি অভিযুক্ত! এই খবর প্রথম প্রকাশ্যে আসে বাংলাদেশের সংবাদমাধ্যম ‘প্রথম আলো’য়। নিমেষে সেই খবর ভাইরাল। যার জেরে শুক্রবার মধ্যরাতের পর সমাজমাধ্যমে সরাসরি কথা বলতে বাধ্য হন অভিনেত্রী। পাল্টা প্রশ্ন রাখেন, “অভিযোগ দায়ের হওয়ার অর্থই কি আমি দোষী? কেউ খতিয়ে দেখবেন না, প্রকৃত ঘটনা কী?”
ঠিক কী হয়েছে পরী মণির গৃহকর্ম সহায়িকার ক্ষেত্রে? ও পার বাংলার বিভিন্ন সংবাদমাধ্যম থেকে জানা গিয়েছে, মাসখানেক আগে পরী মণির বাড়িতে তাঁর এক বছরের কন্যাকে দেখভালের জন্য নিযুক্ত হন পিংকি আক্তার নামে ওই কর্মী। একরত্তিকে দু’ঘণ্টা অন্তর খাওয়ানোর নির্দেশ দিয়েছিলেন নায়িকা। অভিযোগকারিণী পিংকি সেই অনুযায়ীই দেখভাল করতেন। তাঁর দাবি, বুধবারও সেই নির্দেশ অনুযায়ী শিশুকন্যাকে খাইয়ে অন্য কাজে ব্যস্ত হয়ে পড়েন। হঠাৎই শিশুটি কেঁদে উঠলে উপস্থিত সৌরভ বলে এক ব্যক্তি পিংকিকে দুধ খাওয়ানোর পরামর্শ দেন। পূর্বপরিচিত হওয়ায় অভিযোগকারিণী তাঁর পরামর্শ মেনে দুধ তৈরি করতে গেলে নিজের ঘর থেকে বেরিয়ে আসেন পরী মণি। কেন দু’ঘণ্টার আগেই পিংকি শিশুকন্যাকে খাওয়াচ্ছেন, এই নিয়ে বচসা বাধে। তা ক্রমে হাতাহাতিতে পরিণত হয়। অভিযোগ, পরী নাকি গৃহকর্ম সহায়িকার মাথা ঠুকে দেন। বেধড়ক মারধর করেন।
পিংকির দাবি, এ ভাবে মারধর খেতে খেতে একটা সময় পরে তিনি অসুস্থ বোধ করতে থাকেন। অজ্ঞান হয়ে পড়েন। জ্ঞান ফেরার পর তিনি তাঁকে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার অনুরোধও জানান। কিন্তু তাঁর আবেদনে নাকি কেউ কান দেননি। নিজেকে বাঁচাতে পিংকি বাধ্য হয়ে জরুরি পরিষেবার ফোন করে পুলিশের সাহায্য চান। তুতো ভাইকে ডাকেন। পরী মণির বাড়ি থেকে বেরিয়ে প্রথমে কুর্মিটোলা জেনারেল হাসপাতালে প্রাথমিক শুশ্রূষা করান। ঢাকার ভাটারা থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন। অভিযোগ দায়েরের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন ভারপ্রাপ্ত আধিকারিক (ওসি) মাজহারুল ইসলাম।
আরও পড়ুন:
বিষয়টি নিয়ে কী বক্তব্য পরী মণির? তিনি সাফ জানিয়েছেন, তাঁর হাতেও অনেক পাল্টা প্রমাণ আছে। সে সব এখনই প্রকাশ্যে আনতে চান না। কারণ, বিষয়টি আইনি পথে চলছে। এ-ও জানান, গৃহকর্মীদের সঙ্গে তাঁর খুবই ভাল সম্পর্ক। এক এক জন কম করে বছর দুয়েক ধরে তাঁর বাড়িতে রয়েছেন। এঁদের নিয়েই তাঁর পরিবার। একই সঙ্গে ক্ষোভ প্রকাশ করেন সংবামাধ্যমের ভূমিকায়। জানতে চান, “ইদে মেহন্দি দিয়ে হাতে ইংরেজি ‘এস’ অক্ষরটি লিখেছি। আপনারা তাই নিয়েও বলতে ছাড়েননি। গায়ক শেখ সাদীর সঙ্গে আমার নাম জুড়ে দিয়েছেন। তার প্রতিবাদ করেছিলাম। তাই কি এ ভাবে আপনারা শোধ তুললেন?”
পরী মণির হয়ে মুখ খুলেছেন তাঁর আপ্তসহায়ক তুরান মুন্সিও। তাঁর কথায়, “পিংকি নিজে বিশেষ ভাবে সক্ষম। তাই এক মাস পূর্ণ হওয়ার আগেই তাঁর হাতে বেতন তুলে দিয়েছেন নায়িকা। পরী মণি তাঁর গৃহকর্মীদের নিয়েই থাকেন। কারণ, দুই সন্তান ছাড়া তাঁর নিজের বলতে কেউ নেই। প্রত্যেককে ভীষণ ভালবাসেন তিনি।”