আদিত্য-শেখর-সঞ্জয়
তিন জনের নামের ওজন এত বেশি যে, ঠিক-ভুলের গণ্ডিতে তাঁদের বিচার করা যাবে না। তবে গত এক মাসে একটি বিষয় স্পষ্ট, সুশান্ত সিংহ রাজপুতের মৃত্যু-পরবর্তী তরজায় ধীরে ধীরে বেআব্রু হয়ে পড়ছে মহারথীদের পারস্পরিক অন্তর্দ্বন্দ্ব। পুলিশি জেরায় এখনও অবধি সামনে আসা তথ্য পাল্টে দিচ্ছে অনেক সমীকরণ।
সুশান্তের আত্মহত্যার মামলায় বয়ান দিতে হয়েছে পরিচালক সঞ্জয় লীলা ভন্সালী ও যশ রাজ ফিল্মসের কর্ণধার আদিত্য চোপড়াকে। আপাত ভাবে, তাঁদের দু’জনের বয়ানে বৈপরীত্য স্পষ্ট। পুলিশের কথা অনুযায়ী, সঞ্জয় তাঁর বয়ানে বলেছেন যশ রাজ ফিল্মসের সঙ্গে চুক্তিবদ্ধ থাকায় সুশান্তের সঙ্গে তিনি কাজ করতে পারেননি। পুলিশি সূত্র বলছে, আদিত্য চোপড়া সরাসরি এই অভিযোগ অস্বীকার করেছেন। আদিত্য তাঁর বয়ানের সপক্ষে যুক্তি দেখিয়েছেন, চুক্তিতে থাকাকালীন সুশান্ত ‘এমএস ধোনি-দি আনটোল্ড স্টোরি’র মতো ছবি করতে পেরেছেন। তা হলে সঞ্জয়ের ছবি করতে অসুবিধে কোথায় ছিল? তাঁর বক্তব্য, ভন্সালী বা তাঁর টিমের কেউ সুশান্তকে কাস্ট করার বিষয়ে যশ রাজের সঙ্গে যোগাযোগ করেননি।
তবে একটি নয়, চারটি ছবির জন্য সুশান্তকে প্রস্তাব দিয়েছিলেন সঞ্জয়। অভিযোগ, ‘রামলীলা’র জন্য সুশান্তকে অনুমতি না দেওয়া হলেও রণবীর সিংহকে কাজের অনুমতি দেয় যশ রাজ ফিল্মস। এর পাল্টা আদিত্যের যুক্তি, রণবীর ছবিটি সই করেছিলেন ২০১২ সালের এপ্রিলে। আর সুশান্তের সঙ্গে যশ রাজ ফিল্মসের চুক্তি হয়েছে ওই বছরের নভেম্বর মাসে। তাই উদ্দেশ্যপ্রণোদিত ভাবে সুশান্তকে আটকে দেওয়ার প্রশ্নকে নস্যাৎ করেছেন আদিত্য।
যশ রাজের সঙ্গে সুশান্তের তৃতীয় ছবিটি হওয়ার কথা ছিল ‘পানি’। সেই ছবি স্থগিত হওয়ার নেপথ্যে রয়েছে আদিত্য ও পরিচালক শেখর কপূরের মতবিরোধ, এই তথ্যই পুলিশকে জানিয়েছেন আদিত্য। কিন্তু সেটাই কি একমাত্র কারণ?
সুশান্তের মৃত্যুর পর থেকে যে ভাবে একের পর এক টুইটে ‘পানি’কে বারবার টেনে নিয়ে আসছেন শেখর, তাতে অবশ্য অন্য সম্ভাবনাও উড়িয়ে দেওয়া যাচ্ছে না। বুধবার একটি টুইটে শেখর লিখেছেন, ‘‘ভগবানের ইচ্ছে থাকলে ‘পানি’ এক দিন না এক দিন বানাবই। সে দিন ছবিটি সুশান্তকে উৎসর্গ করব। তবে এমন পার্টনারদের সঙ্গে বানাব যাঁরা বিনয়ী, উদ্ধত নয়...’’
অভিযোগ-পাল্টা অভিযোগের কাঁটায় ইন্ডাস্ট্রি এখন জরাজীর্ণ। জল কত দূর গড়ায়, সে দিকেই আপাতত সকলের নজর।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy