ঠাকুরপুকুর-কাণ্ডে দেরিতে হলেও টলিপাড়ার একাধিক শিল্পী সমাজমাধ্যমে সরব হয়েছেন। মত্ত অবস্থায় গাড়ি চালানোর মতো ঘটনা যে তাঁরা কোনও ভাবেই সমর্থন করেন না, সে কথাই তাঁদের বক্তব্য থেকে স্পষ্ট হয়েছে। অভিনেত্রী শ্রীলেখা মিত্র সমাজমাধ্যমে সক্রিয়। বিভিন্ন সামাজিক সমস্যায় তিনি নিজের মতো করে প্রতিবাদ করেন। কিন্তু ঠাকুরপুকুরের ঘটনায় অভিনেত্রী কেন মুখ খুলছেন না, তা নিয়ে কটাক্ষের শিকার হয়েছেন অভিনেত্রী।
শ্রীলেখা কেন প্রতিবাদে শামিল হচ্ছেন না, তা নিয়ে সমাজমাধ্যমে একাধিক পোস্ট ঘুরছে। একটি পোস্টে লেখা হয়েছে, ‘‘বলছি কুকুরদের প্রতি এত ভালবাসা আর প্রেম শ্রীলেখা মিত্রের। কিন্তু ঠাকুরপুকুরের ঘটনায় তো রাস্তায় নামতে দেখছি না? এটা কেমন ব্যাপার!’’ অন্য একটি ছবি, যেখানে শ্রীলেখার সঙ্গে টলিপাড়ার একাধিক অভিনেতা রয়েছেন, সেখানে আলাদা করে শ্রীলেখাকে চিহ্নিত করে লেখা হয়েছে, ‘‘টলিউড চুপ কেন?’’ তবে চুপ না থেকে শ্রীলেখা পাল্টা উত্তর দিয়েছেন।
পোস্টগুলির স্ক্রিনশট ভাগ করে নিয়ে তিনি লেখেন, ‘‘আমি ঠেকা নিয়ে রাখিনি সব বিষয়ে কথা বলার। তার জন্য ফেসবুক বা কোনও দল আমাকে টাকা দেয় না। যেটা চোখে পড়ে, খারাপ লাগে, লিখি আর মাঝেমাঝে ক্লান্ত হয়ে যাই কী হবে আর ভেবে।’’
আরও পড়ুন:
এই প্রসঙ্গে আনন্দবাজার ডট কমের তরফে শ্রীলেখার সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি জানান, সমাজমাজমাধ্যমে এক জন নির্দিষ্ট ব্যক্তি বার বার তাঁর উদ্দেশে পোস্টগুলি করেছেন। শ্রীলেখার কথায়, ‘‘কেউ তো ভেবে নিতে পারেন না যে আমি সব বিষয়ে কথা বলব। ঠাকুরপুকুরের ঘটনা প্রকাশ্যে আসার পর আমি ফেসবুকে প্রতিবাদ জানিয়েছি। সেটা মনে হয় ওই ব্যক্তির নজরে পড়েনি।’’ এরই সঙ্গে রসিকতা করতে ভুললেন না অভিনেত্রী। তাঁর অনুমান, ‘‘হতেও তো পারে তিনি আমার অনুরাগী। তাই সব বিষয়ে আমার বক্তব্যকে গুরুত্ব দিতে চাইছেন বলে ধন্যবাদ জানাতে চাই।’’
তবে শ্রীলেখাকে অতীতেও কটাক্ষের শিকার হতে হয়েছে। বলছিলেন, ‘‘সম্প্রতি গাজ়া নিয়ে যখন পোস্ট করলাম, তখন বিজেপির আইটি সেল থেকে আমাকে টার্গেট করা হল। ক্ষতবিক্ষত শিশুদের ছবি দেখে যাঁদের হাসি পায়, আশা করব তাঁদের বাড়ির সন্তানেরা যেন সুস্থ থাকে!’’ সম্প্রতি পথকুকুরদের কল্যাণে একটি উদ্যোগে কড়া বক্তব্য রেখেছিলেন শ্রীলেখা। তার ফলেও যে তাঁকে নিশানা করা হতে পারে, সেই সম্ভাবনাও উড়িয়ে দিচ্ছেন না অভিনেত্রী। বললেন, ‘‘সারমেয় এবং মানুষের মধ্যে সারমেয়দেরই আমি আগে বেছে নেব। ওদের জন্য আমি প্রাণ দিতে পারি। সেখানে আমি কোনও প্রসঙ্গে প্রতিবাদ করছি কি করছি না, তা নিয়ে মানুষের এত মাথাব্যথা কেন বুঝতে পারছি না।’’
ব্যক্তিগত জায়গা থেকে শ্রীলেখা মত্ত অবস্থায় গাড়ি চালানোকে সমর্থন করেন না। অতীতে তাঁর মদ্যপানের ছবি ঘিরেও কটাক্ষ ধেয়ে এসেছে। শ্রীলেখার কথায়, ‘‘আমি নিজে প্রায় মদ্যপান করি না বললেই চলে। বাড়িতে কোনও মদের বোতলও থাকে না। কখনও কোথাও পার্টিতে মদ্যপান করলে সঙ্গে গাড়ির চালক থাকে।’’ অভিনেত্রীর মতে, সচেতন নাগরিক হিসেবে দায়িত্ব পালন করলে, সমাজ আরও সুন্দর হয়ে ওঠে। শ্রীলেখা বললেন, ‘‘অতীতেও যখন টলিপাড়ায় মত্ত অবস্থায় গাড়ি চালানোর ঘটনা ঘটেছে, আমি প্রতিবাদ করেছিলাম। আমার আনন্দ কখনওই অন্য কারও দুঃখের কারণ হতে পারে না। তাই আশা করব আইন তার কাজ করবে।’’