ড্রাগ র্যাকেট প্রসঙ্গে কী কী বলছেন টলিউড তারকারা। গ্রাফিক: তিয়াসা দাস।
একা রিয়া চক্রবর্তী নন, নিয়মিত ড্রাগ নেওয়ার তালিকায় দীপিকা পাড়ুকোনের নাম উঠে আসার পর থেকে তাঁকে এবং রণবীর সিংহকে নিয়েও সোশ্যাল মিডিয়া ছয়লাপ অশালীন মিমে। এখানেই আপত্তি সাংসদ, অভিনেতা মিমি চক্রবর্তীর। এই মত বাংলার বাকি অভিনেতাদেরও? তাঁরাও কি মনে করেন দেশের বর্তমান পরিস্থিতি থেকে সবার নজর ঘোরাতেই বলিউডের মাদক যোগের রিপিট টেলিকাস্ট?
দেশের সমস্যা ঢাকতে এত কিছু?
সুশান্ত সিংহ রাজপুতের মৃত্যু থেকে বলিউডের মাদক যোগ— পুরোটাই এখন ভীষণ বিরক্তিকর এবং অর্থহীন হয়ে দাঁড়িয়েছে সায়নী ঘোষের কাছে। পাল্টা প্রশ্ন রেখেছেন আনন্দবাজার ডিজিটালের কাছে, ‘‘অতিমারি, ভঙ্গুর অর্থনীতি, কৃষি বিলের মতো গুরুত্বপূর্ণ বিষয় ছেড়ে দীপিকার ড্রাগ, হ্যাশ নিয়ে এত মাতামাতি কেন?’’ অভিনেত্রী সন্দিগ্ধ, দেশের প্রকৃত অবস্থান থেকে দেশবাসীর নজর ঘুরিয়ে দেওয়ার জন্য এ সব হচ্ছে না তো!
বলিউডের মতো টলিউডেও ড্রাগ র্যাকেট চলে? হাসতে হাসতে সায়নী উড়িয়ে দিলেন এই প্রশ্ন, ‘‘বাংলা ইন্ডাস্ট্রির এত পয়সা নেই যে নেশার পিছনে সময় কাটাবে বা টাকা খরচ করবে। এখানে পানীয় চলে। বড় ধরনের শুকনো নেশা? একেবারেই না।’’
আরও পড়ুন: জেরার সময় স্ত্রী দীপিকার পাশে থাকতে চান রণবীর
উল্টে তাঁর দাবি, দেশের ভিতরেই নেশার উপকরণ তৈরি হয় রমরমিয়ে। হিমাচলে হাসিস, মারিজুয়ানা জলভাত। কেরল, কোডাইকানাল-এও মেলে এ সব। সে সব এত দিনেও বন্ধ হল না! বিস্মিত সায়নী। এখানেই শেষ নয়। একাধিক উদাহরণ টানলেন নিজের যুক্তির সপক্ষে, শুধু অভিনেতারাই নন, ক্রিকেটার, রাজনীতিবিদ হয়ে বড় বড় সাধুবাবারা সারা ক্ষণ ডুবে এই নেশায়। হিন্দু পুরাণ মতে, স্বয়ং দেবাদিদেব মহাদেবের প্রসাদ গাঁজা-ভাঙ। কারওরই তো তাই নিয়ে মাথাব্যথা নেই! হিন্দি, বাংলা বহু ছবি তৈরি হয়েছে এই বিষয় নিয়ে। এখনকার সিরিজগুলোতে খুল্লামখুল্লা শুট হচ্ছে ড্রাগ নেওয়ার দৃশ্য। সেখানে সুশান্তের মৃত্যুরহস্যের কিনারা করতে গিয়ে দীপিকার ২০১৭-র চ্যাট সামনে এনে তাঁকে এ ভাবে অপদস্থ করতে হল!
দীপিকার মাদকাসক্তির সঙ্গে রাজপুতের অপমৃত্যুর যোগ তিনি অন্তত কোনও ভাবেই খুঁজে পাচ্ছেন না।
হয়ে এসেছে বলে হয়েই যাবে!
হালের গরমাগরম বিষয়টিকে একদম অন্য আঙ্গিকে বিশ্লেষণ করলেন অভিনেতা সাহেব ভট্টাচার্য। তাঁর যুক্তি, ‘‘হতেই পারে সুশান্তের মৃত্যুরহস্য ধামাচাপা দিতে বেশি করে আলো ফেলা হচ্ছে মাদক কাণ্ডের উপর।’’ আবার বরাবরই এই ধরনের কাজ হয়ে আসছে বলে অনন্তকাল ধরে হয়েই যাবে, এটাও কি ঠিক? প্রশ্ন অভিনেতার।
আরও পড়ুন: এনসিবি ডেকে পাঠাল কর্ণ জোহরের বিশেষ বন্ধু ক্ষিতিজ রবি প্রসাদকে, চলছে জেরা
শুধু বলিউডের অভ্যন্তরে নয়, টিনসেল টাউনের এই মাদক যোগের প্রকাশ্য ঝলক দেখা যায় নাইট রাইডার্সের বিভিন্ন পার্টিতে, জানালেন সাহেব। তিনি নিজের চোখে দেখেছেন। তাই এই বিষয়টি নিয়ে যদি অবশেষে আইনি পদক্ষেপ করা হয়, তিনি খুশি। সঙ্গে এটাও যোগ করলেন, আজ পুরুষ অভিনেতাদের ডাকা হয়নি বলে কাল ডাকা হবে না, এমনটা কোথাও বলা হয়নি। তা হলে মেরুকরণের বিষয়টি আসছে কোথা থেকে?
বয়ফ্রেন্ডকে হাসিস জুগিয়েছেন রিয়া, কোন মহাভারত অশুদ্ধ হয়েছে?
‘‘আমি যখন নেশা করতাম বন্ধুরাই জোগান দিত। একই কাজ যদি রিয়া তাঁর বয়ফ্রেন্ডের জন্য করে থাকেন কী অপরাধ করেছেন?’’
সুশান্তমৃত্যু-রিয়া-বলিউডের মাদক যোগ, এই ত্রিফলাতে এ ভাবেই পাল্টা হুল ফোটালেন টলিউডের আর এক অভিনেতা অনিন্দ্য চট্টোপাধ্যায়। অনিন্দ্য টানা অনেকগুলো বছর ডুবে ছিলেন নেশায়, নিজেই স্বীকার করলেন। নেশা ছাড়াতে ৩০ বার রিহ্যাবে যেতে হয়েছিল তাঁকে।
কেন অভিনেতারা এ ভাবে ডুব দেন মাদকে? অনিন্দ্য বলছেন, শুরুটা ‘একটু চেখে দেখি’র হাতছানি অথবা নিছক মজা করতে গিয়ে। এর পর অনেকেই নেশার জালে জড়িয়ে পড়েন। যা শুধু বলিউড নয়, গোটা দেশে আকছার ঘটছে যুগ যুগ ধরে। সুশান্ত সিংহ মৃত্যুর কিনারা করতে গিয়ে কেন যে এ দিকে টান পড়ল সেটাই বুঝতে পারছেন না অভিনেতা!
আরও পড়ুন: ‘নায়িকারা মাদকাসক্ত, নায়কেরা কি ধোয়া তুলসি পাতা?’ দীপিকার মাদকযোগ তদন্তে প্রতিবাদ মিমির
অনিন্দ্যর মতে, পুরোটাই রাজনৈতিক ‘প্রোপাগান্ডা’ বলে মনে হচ্ছে তাঁর। দাবি করেছেন, এ সব আটকাতে হলে সবার আগে সিল করতে হবে বর্ডার। যাতে দেশের ভিতর থেকে বাইরে বা বিদেশ থেকে এ দেশে ঢুকতে না পারে এলএসডি, হাসিস, মারিজুয়ানা, কোকেন। অনিন্দ্য বেশি কষ্ট পেয়েছেন সুশান্ত ভক্তদের আচরণে। যেই সবাই জানলেন গাঁজা খেতেন সুশান্ত অমনই ‘জাস্টিস ফর এসএসআর’ রব স্তব্ধ। একটা মানুষ গাঁজা খেতেন বলে ব্রাত্য হয়ে গেলেন?
যাঁর অপমৃত্যু নিয়ে এত তোলপাড় সেই অনুসন্ধান তো অন্ধকারেই থেকে গেল!
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy