Advertisement
E-Paper
BB_2025_Lead Zero Banner

টলিউডের ব্যস্ততম অভিনেতাদের তালিকায় নাম অনির্বাণের, কেমন লাগছে একেনবাবুর?

নববর্ষেই আসছে বাঙালির প্রিয় গোয়েন্দা একেন। এ বার তার যাত্রা রাজস্থানে। যাঁর জন্য এই চরিত্রটি দর্শকের এত ভালবাসা পেয়েছে, সেই অনির্বাণ চক্রবর্তীর সঙ্গে আড্ডা জমাল আনন্দবাজার অনলাইন।

Anirban Chakraborti exclusively speaks about his new film The Eken, Ruddhaswas Rajasthan release on Bengali New year

একেনবাবুকে কি পছন্দ করেন অনির্বাণ? গ্রাফিক: শৌভিক দেবনাথ।

পৃথা বিশ্বাস

শেষ আপডেট: ০৭ এপ্রিল ২০২৩ ০৮:১৩
Share
Save

রহস্য গল্প মানেই বাঙালির পছন্দ। তাই বাজারে গোয়েন্দার সংখ্যাও নেহাত কম নেই। সেই ভিড়ে দিব্যি জায়গা করে নিয়েছে গোলগাল-হাসিখুশি গোয়েন্দা একেনবাবু। এই নিয়ে মোট আট বার পর্দায় আসছে সে। ১৪ এপ্রিল প্রেক্ষাগৃহে মুক্তি পাচ্ছে ‘দ্য একেন, রুদ্ধশ্বাস রাজস্থান’। যাঁর জন্য এই চরিত্রটির এত জনপ্রিয়তা, সেই অনির্বাণ চক্রবর্তীর সঙ্গে অওউধ ১৫৯০-তে বসল আড্ডা।

প্রশ্ন: এই নিয়ে দ্বিতীয় বার নববর্ষের দিন আপনার ছবি মুক্তি পাচ্ছে। পুজো যদি দেব-সৃজিতের হয়, নববর্ষ তা হলে একেনের?

অনির্বাণ: (একগাল হেসে...) এ ভাবে বলা ঠিক হবে না। তবে এটা ঠিক যে, এই নিয়ে পর পর দু’বছর নববর্ষে একেনের ছবি মুক্তি পাচ্ছে। তবে আগামী বছরও হবে কি না, তা পুরোটাই নির্ভর করছে দর্শক কতটা একটা ফ্র্যাঞ্চাইজ়িকে ভালবাসা দিচ্ছেন, তার উপর।

প্রশ্ন: ৬টা সিজ়ন আর ২টো ছবির পরও এই নিয়ে সংশয় রয়েছে নাকি?

অনির্বাণ: এ কথা ঠিক যে, একেনের জনপ্রিয়তা দিন দিন বাড়ছে। ওয়েব সিরিজ় তো যথেষ্ট জনপ্রিয়। তবে এ বার ছবির ট্রেলার লঞ্চের পর দেখলাম গত বারের চেয়েও ছবি ঘিরে উৎসাহ বেড়েছে। এত ভালবাসা পেয়ে আশ্বস্ত লাগে।

প্রশ্ন: এ বছরে এখনও পর্যন্ত কোনও বাংলা ছবি হিট করেনি বলে সকলে একেন নিয়েই আশা রাখছেন। তাতে কি বাড়তি চাপ তৈরি হয়েছে?

অনির্বাণ: অনেকের কাছ থেকেই এমন কথা শুনেছি। কিন্তু আমি ও ভাবে ভাবি না। দর্শক আমার অভিনয়, এই ছবিটা পছন্দ করলেন কি না, সেইটুকু নিয়ে আমার চাপ। ব্যবসার দিকটা অত বোঝার মতো আমার মানসিকতা নেই।

প্রশ্ন: নিজের অভিনীত ছবিগুলো পরে দেখে নিজের কতটা পছন্দ হয়?

অনির্বাণ: আমি নিজের যে কোনও ছবি দেখলেই পরে অনেক খুঁত পাই। কোনওটার হয়তো কিছু অংশ ভাল লাগল, কোনওটা আবার ভালই লাগল না। আমার অভিনীত যে কোনও চরিত্রও আমি ডিট্যাচ়ড হয়ে দেখি। যেমন একেনবাবুকে আমার বেশ বিরক্তিকর লাগে। মনে হয়, যদি আমার চারপাশে থাকত, আমি বোধহয় মেরেই দিতাম। এত ঘ্যানঘ্যান করে, এত বিরক্ত করে, খাবার নিয়ে অসভ্যতা করে— আমার বেশ বিরক্তই লাগে। পর্দায় দেখে দর্শকের হয়তো খুব মিষ্টি, ছেলেমানুষ মনে হতে পারে। আমার কিন্তু মনে হয় লোকটা খুব সেয়ানা। অপরিচিতরা আবার ধরে নেন, আমি মানুষটাই বোধহয় একেনের মতো। কিন্তু একটু কথা বলার পরেই যখন দেখেন, আমি সারা ক্ষণ মজা করছি না, বা ভুল হিন্দি বলছি না, তখন হতাশ হয়ে পড়েন।

প্রশ্ন: পর্দায় একেনবাবু আসছে, কিন্তু এ বার স্রষ্টা নেই। নিশ্চয়ই আপনাদের একটু ফাঁকা ফাঁকা লাগছে?

অনির্বাণ: সিজ়ন ৬ যখন মুক্তি পেল, তখন সুজনবাবু (দাশগুপ্ত, লেখক) কলকাতাতেই ছিলেন। দেখেছিলেন পুরোটা। এই ছবিরও চিত্রনাট্য লেখার সময় ছিলেন। জানতেন শুটিং শেষ হয়ে গিয়েছে। কিন্তু ছবিটা আর দেখে যেতে পারলেন না। সুজনবাবু বয়সে আমাদের চেয়ে অনেকটা বড় হলেও গোটা টিমের সঙ্গে দারুণ মিশে গিয়েছিলেন। সত্যিই উনি মারা যাওয়ার পর তখন একটা ভয়েড তৈরি হয়েছিল। তবে আমাদের কোনও প্রিয়জন যখন দূরে চলে যান, আমরা মনে করি, নিশ্চয়ই কোথাও থেকে দেখছেন। ধরে নেব, সুজনবাবুও ছবিটা দেখবেন।

প্রশ্ন: পাহাড়ের পর এ বার মরুভূমি। একেনবাবুর গল্পগুলোর পরিসর দিন দিন আরও বাড়ছে তা হলে?

অনির্বাণ: সাফল্য পেয়েছি বলে এটা সম্ভব হয়েছে। তবে একটা মজার কথা হল, গত ছবিটা ছিল দার্জিলিঙে। যে দিন মুক্তি পেল, সে দিনই আমরা সকলে একজোট হয়ে ঠিক করি, পরের ছবিতে আর পাহাড়ে যাওয়া চলবে না। এ বার মরুভূমি গেলে কেমন হয়! তখন গল্পও বাছা হয়নি। পরে ঠিক করা হয় কোন গল্পটা রাজস্থানে মানাবে। আসলে একেনের বেশির ভাগ গল্পের প্রেক্ষাপট আমেরিকায়। আমরা সেগুলো এখানকার কোনও জায়গায় এনে ফেলি। তাই ভাল করে দেখা হল, কোন গল্প রাজস্থানে মানাবে, সেখানকার সংস্কৃতির সঙ্গে মিলিয়ে দেওয়া যাবে। তবে এটা ঠিক যে, প্রোডাকশনের স্কেলও বাড়ছে। আমরা আগের ছবিটা যে ভাবে শুটিং করেছিলাম, এটা তার চেয়েও আরও ভাল ভাবে করার চেষ্টা করেছি।

Anirban Chakrabarty

পর পর দু’বছর নববর্ষে একেনের ছবি মুক্তি পাচ্ছে। পুজোর স্লটের মতো নববর্ষও কি তা হলে একেন বুক করে ফেলল? ছবি: সংগৃহীত।

প্রশ্ন: রাজস্থানে গোয়েন্দা গল্প বাঙালির কাছে ভীষণ নস্ট্যালজিক। সে দিক থেকে এই প্রেক্ষাপট বেছে নেওয়া তো বেশ সাহসী পদক্ষেপ।

অনির্বাণ: যে কোনও বাঙালি হঠাৎ জোধপুর সার্কিট হাউজের সামনে গিয়ে যদি পড়েন, বা সোনার কেল্লা প্রথম বার দেখতে যান, তা হলে তাঁর যে রকম অনুভূতি হবে, একেনবাবুরও তেমনই হচ্ছে ছবিতে। এবং সেগুলো নিয়ে বেশ কিছু সংলাপও রয়েছে। আমরা তার মধ্যে দিয়েই সত্যজিৎ রায়কে এবং ‘সোনার কেল্লা’কে ট্রিবিউট জানিয়েছি। তবে গল্পের নিরিখে কিন্তু অন্য কোনও মিল নেই ফেলুদার সঙ্গে।

প্রশ্ন: আপনাকে নানা রকম চরিত্রে দেখা যায়। কিন্তু এই বাজারে গোয়েন্দা ছবি কি একটু ‘সেফ বেট’?

অনির্বাণ: ঠিক সে ভাবে বলা যায় না। এই ছবিটা নিয়ে আমি একেন চরিত্রটায় মোট ৮ বার অভিনয় করছি। আর কোনও চরিত্রে তো এত বার অভিনয় করার সুযোগ পাইনি। জটায়ু অবশ্য আমি তিন বার করেছি। কিন্তু একেন হিসাবে এত বার দর্শক আমায় ভালবাসা দিয়েছেন যে, একটু হলেও আশ্বস্ত লাগে। তবে সেই আত্মবিশ্বাসটাই আবার বাড়াবাড়ির পর্যায় চলে গেলে মুশকিল হবে। তা হলে তো আবার কাজের প্রতি নিষ্ঠা থাকে না। তাই ‘সেফ বেট’ বলব না।

প্রশ্ন: চেতনার ‘মহাত্মা বনাম গান্ধী’ নাটকে আপনি গান্ধীর ভূমিকায়। বহু দিন পর নতুন নাটকে অভিনয় করছেন তো?

অনির্বাণ: যে হেতু এই নাটকটা গান্ধীর রাজনৈতিক জীবনের বাইরে বেরিয়ে একদম ব্যক্তিগত জীবন নিয়ে, তাই এক অচনা গান্ধীকে দেখতে পান দর্শক। ফলে আমার কাজটা বেশ কঠিন। বড় ছেলের সঙ্গে আদর্শগত পার্থক্য নিয়ে টানাপড়েন। নিজে যখন সে বিষয়ে পড়াশোনা করছি বা অভিনয় করছি, এক বার মনে হচ্ছে, এঁর যুক্তি ঠিক, আবার কখনও মনে হচ্ছে, ওঁর যুক্তি ঠিক। একটা ঐতিহাসিক চরিত্রকে আজীবন আবিষ্কার করা যায়। যে হেতু আমি ব্যক্তিগত দিকটাই ধরার চেষ্টা করছি, তাই গান্ধীজির কোনও ক্লিপিং দেখে বা যাঁরা অভিনয় করেছেন, তাঁদের অনুকরণ করার কোনও রকম চেষ্টা করিনি। আমি মঞ্চ থেকে একেবারে ছুটি নিইনি। মাঝেমাঝে ‘মারীচ সংবাদ’ কিংবা ‘মেফিস্টো’র যখন শো হয়, তখন অভিনয় করি। কিন্তু একটা সম্পূর্ণ নতুন প্রোডাকশনের প্রস্তুতির জন্য যে সময় দিতে হয়, তা অনেক দিন পারিনি। এত দিন পর একটি নতুন নাটকে কাজ করে তাই খুব ভাল লাগছে। কারণ একটা নাটকের মহড়ার অভিজ্ঞতাটা একজন অভিনেতাকে খুব সমৃদ্ধ করে। সেটা এত দিন মিস্‌ করছিলাম। এখন তো আমার সময় নিয়ে বড্ড টানাটানিও চলে।

প্রশ্ন: সে তো ভাল কথা! টলিউডের ব্যস্ততম অভিনেতাদের তালিকায় এখন আপনার নাম রয়েছে...।

অনির্বাণ: (হাসি) না, না, ঠিক তেমন নয়। তবে আমি তো এক সময় হঠাৎ করেই চাকরি ছেড়ে অভিনয় করতে আসি। এত অনিশ্চয়তা ছিল। এমনিতেও এই পেশায় কাল কী হবে জানা নেই। তাই এক দিক থেকে তো ভালই লাগে যে এতগুলো কাজ একসঙ্গে করছি। পরিচালক-প্রযোজকরা পর পর ডাকছেন। সব ছবি না চললেও আমি চেষ্টা করি প্রত্যেকটা চরিত্রের মাধ্যমে নতুন কিছু ছুঁয়ে দেখার। সেই অনুশীলনের মধ্যে থাকাটাও জরুরি। তাই এখনও পর্যন্ত আমি খুব খুশি।

প্রশ্ন: টলিউড ছেড়ে সর্বভারতীয় স্তরে এগিয়ে যাওয়ার ইচ্ছে নেই?

অনির্বাণ: আমার কাছে যে হিন্দি ছবি বা ওয়েব সিরিজ়ের ভূরি ভূরি প্রস্তাব রয়েছে, তেমন নয়। কিছু কাজ করেছি, কিছু কাজ করতে পারিনি সময়ের জন্য। হয়তো সে সময়ে আমার আগামী দু-তিন মাসের জন্য সব ডেট আগে থেকেই দেওয়া বাংলা ছবির কাজে। তখনই অন্য কোনও বড় কাজের জন্য অনেক দিন কমিট করতে পারব না। এ রকম একাধিক বারই ঘটেছে আমার সঙ্গে।

প্রশ্ন: আফসোস হয়?

অনির্বাণ: শুরুতে একটু হলেও হয়। বিশেষ করে কোনও বড় কাজ যদি মনের মতো হয়, তা হলে শুরুর কিছু দিন খুব আফসোস হয়। নাম করতে চাই না, কিন্তু সত্যিই সম্প্রতি একটা খুব ভাল প্রস্তাব ছেড়ে দিতে হয়েছে। আবার কিছু দিন পর মেনে নিই। কারণ কিছু করার থাকে না।

Celebrity Interview Ekenbabu Anirban Chakrabarti Upcoming Movie Bengali New Year

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:

Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy

এটি একটি প্রিন্ট আর্টিক্‌ল…

  • এমন অনেক খবরই এখন আপনার হাতের মুঠোয়

  • সঙ্গে রোজ পান আনন্দবাজার পত্রিকার নতুন ই-পেপার পড়ার সুযোগ

  • ই-পেপারের খবর এখন শুধুই ছবিতে নয়, টেক্সটেও

প্ল্যান সিলেক্ট করুন

মেয়াদ শেষে নতুন দামে আপনাকে নতুন করে গ্রাহক হতে হবে

Best Value
এক বছরে

৫১৪৮

১৯৯৯

এক বছর পূর্ণ হওয়ার পর আপনাকে আবার সাবস্ক্রিপশন কিনতে হবে। শর্তাবলী প্রযোজ্য।
*মান্থলি প্ল্যান সাপেক্ষে
এক মাসে

৪২৯

১৬৯

এক মাস পূর্ণ হওয়ার পর আপনাকে আবার সাবস্ক্রিপশন কিনতে হবে। শর্তাবলী প্রযোজ্য।