এই প্রথম মাকে ছাড়া মায়ের জন্মদিন! আজ মা ৭৭। সকাল থেকে মনটা ভীষণ মা-মা করছে। কোথায় গেলে একটু দেখতে পাব মাকে? কোথায় গেলে চেনা গায়ের গন্ধ পাব? জানি না। শুধু মাকে খুঁজে চলেছি। কাকে কথায় কথায় জড়িয়ে ধরব? অভিমান করলে মান ভাঙাব? মা যে আমার সবটা জুড়ে ছিল।
আমার মা সদাহাস্যময়ী, সব সময় হাসতে ভালবাসত। ঘাড়ে প্রচুর দায়িত্ব, মাথায় নানা সমস্যার বোঝা। মায়ের কিন্তু হাসিমুখ। জন্মদিনে তো মায়ের হাসি থামতই না। এই দিনে মা যেন আরও ছেলেমানুষ। বড় হওয়ার পর থেকেই আমি আর ভাই মায়ের জন্মদিন পালন করি। ওই দিন মায়ের পছন্দের সমস্ত রান্না হয়। যত দিন শাড়ি পরতে পেরেছে তত দিন নতুন শাড়ি, পরে নতুন জামা পরেছে। ভাই মায়ের মাথায় জন্মদিনের টুপি পরিয়ে দিত। সামনে সাজানো কেক। মা যেন কিশোরী। চওড়া হেসে কেক কাটত, আমাদের খাওয়াত। আজও কেক আসবে মায়ের জন্য। লাউ চিংড়ি, ফিশ ফ্রাই, ইলিশ— রান্না হয়েছে। নতুন জামা সাজিয়ে দিয়েছি ছবির সামনে। সব আছে, শুধু মা নেই। নেই, মানে কোথাও নেই...!
গত বছর মায়ের জন্মদিনের দিন শহরে থাকতে পারিনি। শুটিংয়ে বাইরে ছিলাম। মায়ের কি অভিমান হয়েছিল? তাই সব ছেড়ে চলে গেল?
আরও পড়ুন:
এ বছর আমি কলকাতায়। মা এই প্রথম আমাদের থেকে কত দূরে। আজ ভাই বাড়িতে আলাদা আয়োজন করেছেন। মায়ের নামে পুজো দিয়েছি। বেশ কিছু অসহায়, দরিদ্র শিশু ও বয়স্ককে খাওয়াব। মা খেতে, খাওয়াতে খুব ভালবাসত বলে। আজ তোমার জন্য এত কিছু। তুমি কি আকাশপারে তোমার নতুন বাড়িতে বসে দেখতে পাচ্ছ মা? নিশ্চয়ই ভাল আছে? বেশি কিছু চাইছি না, কেবল আগে যেমন আগলে রাখতে আমায়— সে ভাবেই আগলে রেখো। আশীর্বাদ কোরো, যেন কাজ করতে করতে চিরবিদায় নিতে পারি।