বাংলা ছবিতে সোমনাথ কুন্ডুর তৈরি একাধিক লুক দর্শককে চমকে দিয়েছে। গ্রাফিক: শৌভিক দেবনাথ।
টলিপাড়ায় শিল্পীদের রূপটান তাঁর হাতে অন্য মাত্রা পেয়েছে। একের পর ‘লুক’ তৈরি করে দর্শকের কাছে নিজের আলাদা পরিচিতি তৈরি করেছেন। ইন্ডাস্ট্রিতে তিন দশক পূর্ণ করলেন জনপ্রিয় রূপটান শিল্পী সোমনাথ কুন্ডু। লড়াই থেকে শুরু করে গ্রহণযোগ্যতা, আগামীর স্বপ্ন এবং নতুনদের প্রতি বিশ্বাস। সম্প্রতি দক্ষিণ কলকাতার এক ক্যাফেতে মনখোলা আড্ডায় পাওয়া গেল শিল্পীকে।
প্রশ্ন: ইন্ডাস্ট্রির প্রথম সারির রূপটান শিল্পী গাড়িতে নয়, অটোয় চেপে সাক্ষাৎকার দিতে এলেন!
সোমনাথ: (হেসে) এখনও গাড়ি কিনিনি। এত দিন যা খরচ করেছি, সবটাই তো মেকআপের উন্নতিতে। আমার বাড়ির নীচেই একটা স্টুডিয়ো তৈরি করছি। কাজ চলছে। শেষ হলে তার পর টাকা জমিয়ে একটা গাড়ি কেনার ইচ্ছে রয়েছে। প্রোডাকশন তো আমাকে যাতায়াতের জন্য গাড়ি দেয়। নিজের গাড়ি নেই বলে আমি বিন্দুমাত্র লজ্জিত নই।
প্রশ্ন: আপনি তো টলিপাড়ায় তিন দশক পূর্ণ করলেন।
সোমনাথ: ১৯৯৪ সাল থেকে স্ট্রাগল করছি। ১৯৯৬ সালে গিল্ডের কার্ড পাই। সে দিক থেকে দেখলে, ২৯ বছর চলছে।
প্রশ্ন: আপনি কী ভাবে এই পেশায় এলেন?
সোমনাথ: আমার বাবা এবং ঠাকুরদা— দু’জনেই ইন্ডাস্ট্রিতে পোশাকের কাজ করতেন। হঠাৎ করেই বাবা অসুস্থ হয়ে পড়লেন। আমি তখন সবে উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষা দিয়েছি। আমার আঁকার হাত খুব ভাল ছিল। বাবা চাইছিলেন যে, আমি মেকআপের কাজে চলে আসি। তিনি বলেছিলেন, ‘‘বাড়িতে তুই ক্যানভাসে ছবি আঁকিস। এ বার মানুষের মুখই হয়ে উঠবে তোর ক্যানভাস।’’ সেই ভাবেই কাজ শুরু করি।
প্রশ্ন: তা হলে তো নিশ্চয়ই শুরুতে স্ট্রাগল...
সোমনাথ: (থামিয়ে দিয়ে) করতে হয়েছে। বাবা সুব্রত সিংহের অধীনে আমাকে কাজ শুরু করতে বলেছিলেন। কিন্তু বাকিটা নিজেকেই করে নিতে হয়েছিল।
প্রশ্ন: প্রথম কাজের স্মৃতি মনে পড়ে?
সোমনাথ: ঋতুপর্ণ ঘোষের ‘বাহান্ন এপিসোড’। তখন আমি সহকারী হিসেবে কাজ করতাম। ওই একই সময়ে সুজিত গুহের ‘মনের মানুষ’ ছবিতেও কাজ করেছিলাম।
প্রশ্ন: এক সময়ে তো রূপটান শিল্পীদের নিয়ে সেই ভাবে চর্চা হত না। এখন পরিস্থিতি অনেকটাই বদলেছে।
সোমনাথ: ইন্ডাস্ট্রির মেকআপ শিল্পীদের নিয়ে তো বিগত পাঁচ-ছ’বছর একটু আলোচনা হচ্ছে। প্রবীরদা (প্রবীরকুমার দে), অনিরুদ্ধদা (অনিরুদ্ধ চাকলাদার) বিজ্ঞাপনের জগতে ছিলেন বলে চর্চায় ছিলেন। সত্যি বলতে, সেখানে আমরা, সিনেমার রূপটান শিল্পীরা, তার আগে আড়ালেই ছিলাম। কারণ, তখন সবই বাণিজ্যিক ছবি। একই রকমের মেকআপ। কিছু নায়ক ছিলেন, যাঁরা ভাবতেন যে, তাঁরা ক্যামেরার সামনে দাঁড়ানো মানেই ছবি হিট হবে! কিন্তু এখন তো ছবির বিষয়বস্তুই বদলে গিয়েছে। অনেক ইন্টারেস্টিং কাজ হচ্ছে। তাই মানুষও আরও বেশি করে আমাদের কথা জানতে চাইছেন। সমাজমাধ্যমের পাশাপাশি সংবাদমাধ্যমকেও তার জন্য আমি ধন্যবাদ দিতে চাই।
প্রশ্ন: টলিপাড়ায় রূপটানের একটা বিশেষ অংশ যে প্রস্থেটিক্স, সেটা তো আপনার হাত ধরেই প্রচার পেল। আপনি বিষয়টা সম্পর্কে প্রথম কী ভাবে জানতে পারেন?
সোমনাথ: ‘চাচী ৪২০’ ছবিতে কমল হাসনের লুক দেখে চমকে গিয়েছিলাম। মনে হল, তা হলে মেকআপের সাহায্যে এ রকম লুকও তৈরি করা সম্ভব! তার পর খোঁজ এবং পড়াশোনা শুরু করলাম।
প্রশ্ন: কিন্তু তখন তো ইন্টারনেট ছিল না। কলকাতায় বইপত্র পাওয়া যেত?
সোমনাথ: কিছুই ছিল না। প্রদীপ মাথারো নামে একজন পঞ্জাবি ভদ্রলোকের থেকে আমি মেকআপের সরঞ্জাম নিতাম। ওঁর সঙ্গে মমদি (অভিনেত্রী মমতাশঙ্কর) আমার পরিচয় করিয়ে দিয়েছিলেন। তিনিই আমাকে প্রচুর বিদেশি বই আনিয়ে দিতেন। কিছু ইংরিজিতে, তবে বেশির ভাগ জার্মান ভাষার লেখা। অন্যকে দিয়ে অনুবাদ করিয়ে নিতাম। কিছু বুঝতে পারতাম, কিছু পারতাম না। তবে হাল ছাড়িনি।
প্রশ্ন: ‘ধূমকেতু’ ছবিতে দেবের প্রস্থেটিক লুক নাকি আপনার করার কথা ছিল।
সোমনাথ: প্রস্থেটিকের সরঞ্জামের তখন দাম বেশি। আমি স্থানীয় জিনিস ব্যবহার করে অভ্যাস করতাম। অনেক সিনিয়র শিল্পী পারিশ্রমিকের প্রসঙ্গ তুলে ডিসকারেজ করতেন। কাজের এফেক্ট দেখে অনেকে আবার উৎসাহও দিতেন। কিন্তু কাজের সময় দেখতাম, মুম্বই থেকে শিল্পীদের নিয়ে আসা হচ্ছে। আমার উপর তখন ভরসা করতে পারতেন না। ‘ধূমকেতু’র ক্ষেত্রেও সেটাই হয়েছিল।
প্রশ্ন: বাংলায় আপনার প্রথম প্রস্থেটিকের কাজ কোন ছবিতে?
সোমনাথ: সোহম আর শুভশ্রীর একটা ছবিতে। কিন্তু দুর্ভাগ্যবশত ছবিটা মুক্তি পায়নি। কমলেশ্বরদা (পরিচালক কমলেশ্বর মুখোপাধ্যায়) ‘মহাভারত’ করতে চেয়েছিলেন। ওই প্রজেক্টে দামিনী বেণী বসুর লুকসেট আমি করেছিলাম। কিন্তু, সেটাও আর তৈরি হয়নি।
প্রশ্ন: তা হলে দর্শক আপনার কাজ শেষ পর্যন্ত দেখলেন...
সোমনাথ: সৃজিতদার (সৃজিত মুখোপাধ্যায়) ‘জ়ুলফিকার’। ওই ছবিতে আমাকে নেওয়া হয়েছিল দেব ও নুসরতের (নুসরত জাহান) মেকআপের জন্য, কিন্তু সৃজিতদা আমাকে যিশুদা অভিনীত কাশীনাথ কুন্ডু চরিত্রটার লুকের দায়িত্ব দেন। নকল নাক, বসন্তের দাগ, কাঁচাপাকা চুল— লুকটা সৃজিতদার দেখেই পছন্দ হয়েছিল।
প্রশ্ন: ১৯৯৮ সালে প্রস্থেটিকের ভাবনা, বাস্তবায়ন ২০১৬ সালে!
সোমনাথ: (হেসে) হ্যাঁ। তার পর থেকেই একে একে কাজ করতে শুরু করলাম।
প্রশ্ন: কিন্তু সৃজিতের মতো পর পর সুযোগ আপনাকে তখন অন্য কেউ দেয়নি।
সোমনাথ: ‘ইয়েতি অভিযান’, ‘এক যে ছিল রাজা’, ‘ভিঞ্চি দা’, ‘গুমনামী’। ওঁর কাছে আমি সত্যিই কৃতজ্ঞ।
প্রশ্ন: অন্যান্য পরিচালকের ছবিতেও প্রস্থেটিকের প্রচুর কাজ করেছেন। কেরিয়ারে আপনার কাছে সবচেয়ে চ্যালেঞ্জিং লুক কোনটা ছিল?
সোমনাথ: (একটু ভেবে) ‘গুমনামী’। কারণ, ওই ছবিতে বুম্বাদার (প্রসেনজিৎ চট্টোপাধ্যায়) নাম ঘোষণা হওয়ার পর থেকেই পক্ষে-বিপক্ষে চর্চা শুরু হয়। খুব ভয় পেয়েছিলাম। কিন্তু লুক তৈরির পর বুম্বাদার উৎসাহ ছাড়া হয়তো ছবিটা আমি করতেই পারতাম না।
প্রশ্ন: ছবির লুক আবার সংসদে নেতাজির ছবির সঙ্গে মিলে গেল। দেশ জুড়ে শুরু হল বিতর্ক! জাতীয় পর্যায়ে আপনার সন্ধান শুরু হল।
সোমনাথ: (হাসতে হাসতে) আমি তখন পক্সে আক্রান্ত। বাড়িতে শুয়ে আছি। জাতীয় সংবাদমাধ্যমের অনেকেই ফোন নম্বর জোগাড় করে আমার সাক্ষাৎকার নিয়েছিলেন। পরে সৃজিতদা এবং বুম্বাদা, দু’জনেই সমাজমাধ্যমে লুকের জন্য আমাকে ধন্যবাদ জানিয়েছিলেন।
প্রশ্ন: কোনও চরিত্রের লুক তৈরি করতে হলে আপনি কী ভাবে প্রস্তুতি নেন?
সোমনাথ: আজ পর্যন্ত সব সময়ে চিত্রনাট্য চেয়ে নিয়েছি। এক-দু’বার ব্যতিক্রম হয়েছে। যেমন ‘দেবদাস’-এর সময় শক্তি সামন্তের কাছ থেকে চিত্রনাট্য চেয়ে নেওয়ার সাহস হয়নি। আবার কোনও কোনও পরিচালকের থেকে চিত্রনাট্য চেয়েছি বলে সেই ছবিতে কাজও হারিয়েছি।
প্রশ্ন: যে সমস্ত অভিনেতার সঙ্গে কাজ করেছেন, তাঁদের মধ্যে রূপটান নিয়ে সবচেয়ে খুঁতখুঁতে কে?
সোমনাথ: সবাই সিরিয়াস। তবে বুম্বাদা যেন সকলের উপরে। একদম ‘লক্ষ্মী ছেলে’। ‘গুমনামী’র সময় আমার কথায় লুকের জন্য তিনি ন্যাড়া হতেও রাজি ছিলেন! শুনে চমকে গিয়েছিলাম। একটা ছোট্ট ঘটনা বলি?
প্রশ্ন: বলুন।
সোমনাথ: ‘শেষপাতা’ ছবিতে বুম্বাদার প্রস্থেটিক্স লুকে একটা মেচেতার ছোপ তৈরি করেছিলাম। এক দিন দাদা বললেন দাগটা নাকি কম মনে হচ্ছে। আমি বিশ্বাস করলাম না। পরে দিনের আলোয় দেখি, দাদা ঠিক বলেছেন। আমি অবাক! জিজ্ঞাসা করতে জানতে পারলাম, দাদা প্রতি দিন মেকআপের পর নিজের একটা ছবি তুলে রাখতেন। তাই তিনি পার্থক্যটা সহজেই ধরে ফেলেন।
প্রশ্ন: বলিউডেও তো কাজ করে ফেললেন।
সোমনাথ: ‘শেষপাতা’ ছবিতে বুম্বাদার লুক দেখে সুজয় ঘোষ আমাকে ‘জানে জান’ ছবিতে সুযোগ দেন। ছবিতে জয়দীপ অহলাওয়াতের মেকআপ আমার করা। ছবিটা মুক্তির দিন তিনি আমাকে ফোনও করেছিলেন। অপর্ণা সেনের ‘দ্য রেপিস্ট’ ছবিতেও অর্জুন রামপাল ও কঙ্কনার মেকআপ আমার করা।
প্রশ্ন: সুযোগ পেলে বলিউডে কার মেকআপ করতে চাইবেন?
সোমনাথ: এক বার ঘুমের মধ্যেই স্বপ্ন দেখেছিলাম। ভাঙাচোরা পুরনো ইন্দ্রপুরী স্টুডিয়ো। বচ্চন স্যার (অমিতাভ বচ্চন) বসে রয়েছেন। আর আমি একমনে ওঁর মেকআপ করছি। ছোট থেকে ওঁর সব ছবি দেখেছি। শুনেছি তিনি খুবই ডিসিপ্লিনড। ওঁর সঙ্গে কাজ করলে অনেক কিছু শিখতে পারব। সুযোগের অপেক্ষায় রয়েছি।
প্রশ্ন: আর হলিউড?
সোমনাথ: মেল গিবসনের ‘অ্যাপোক্যালিপ্টো’ ছবিটা দেখে চমকে গিয়েছিলাম। এ রকম কোনও ছবিতে মেকআপ করার সুযোগ পেলে নিজেকে ধন্য মনে করব।
প্রশ্ন: আর প্রয়াত কোনও ব্যক্তিত্ব হলে?
সোমনাথ: ‘অপরাজিত’ তে সত্যজিৎ রায়কে রিক্রিয়েট করেছিলাম। ‘পদাতিক’-এ মৃণাল সেন। (হেসে) তাই এই মুহূর্তে তিন জনের নাম করতে চাই। শচীন দেব বর্মণ, কিশোরকুমার এবং উত্তমকুমার। এঁদের উপর কোনও ছবি হলেও আমি সেখানে কাজ করতে চাই।
প্রশ্ন: ইন্ডাস্ট্রিতে নাকি আপনার অনেক শত্রু! আপনি নাকি অনেক সহশিল্পীর ভাত কেড়ে নিচ্ছেন। কী বলবেন?
সোমনাথ: বছরে মেরেকেটে ২-৩টে ছবি করি। সব ছবি করিও না। মেকআপ-নির্ভর ছবি করতে চাই বলে, আমার পারিশ্রমিকটা হয়তো একটু বেশি। সে দিক থেকে অনেকের তুলনায় আমি কমই কাজ করি। তাই কারও কাজ হাতিয়ে নিচ্ছি বলে মনে হয় না। (হেসে) যদি কেউ সেটা মনে করেন, আমার ধারণা, এই সাক্ষাৎকারটা পড়লে সেটা ভুল প্রমাণিত হবে।
প্রশ্ন: আপনার ছেলে কি এই পেশায় আসতে ইচ্ছুক?
সোমনাথ: না। শুভজিৎ ইন্ডাস্ট্রিতে আসতে চায় না। কারণ অতিমারির সময় দেখেছে, বাবা এত কাজ জানা সত্ত্বেও বাড়িতে বসে ছিল। ওর তো ডাক্তারি পড়ার ইচ্ছে।
প্রশ্ন: খারাপ লাগে না?
সোমনাথ: একটু মনখারাপ করে। কিন্তু, ছেলে যা চায় ও সেটাই করুক। আমার আপত্তি নেই। পাশাপাশি, আমি বলেই দিয়েছি, কোনও দিন ইন্ডাস্ট্রিতে আসতে হলে ওকে নিজেরটা করে নিতে হবে। আমি কোনও সাহায্য করব না। আর এটাও বলেছি, কাজ শুরু করলে ছেলে বলে কোনও ছাড় নেই। আমি সব সময় চেষ্টা করব ফার্স্ট হতে (হাসি)।
প্রশ্ন: ইন্ডাস্ট্রির সিনিয়র রূপটান শিল্পী হিসেবে কোনও স্বপ্নকে ধাওয়া করেন?
সোমনাথ: আমি এটাই চাই যে, বাংলায় একদল তরুণ দক্ষ শিল্পী তৈরি হোক, যাতে ইন্ডাস্ট্রিকে আর মুম্বইয়ের শিল্পীর অপেক্ষায় বসে না থাকতে হয়। তার জন্য আমিও সব রকম সাহায্য করতে রাজি।
প্রশ্ন: ইন্ডাস্ট্রিতে এখন রূপটান শিল্পীদের মধ্যে অনেকেই হয়তো সমকামী বা রূপান্তরকামী। শুনেছি তাঁদেরকে অনেক সময় কটাক্ষ সহ্য করতে হয়। বিভিন্ন ভাবে হেনস্থার শিকার হতে হয়। আপনি বিষয়টাকে কী ভাবে দেখেন?
সোমনাথ: এটা মানুষের রুচিবোধের উপর নির্ভর করে। যাঁর মধ্যে শিল্পীসত্তা রয়েছে তিনি মেকআপ করতেই পারেন। আমি কারও মধ্যে কোনও ভেদাভেদে বিশ্বাসী নই। আপনি যে ধরনের রূপটান শিল্পীদের কথা বলছেন, তাঁদের সঙ্গে অভিনেত্রীদের স্বাভাবিক ভাবেই একটা আলাদা কমফোর্ট জ়োন তৈরি হয়। সেটা মেকআপে আরও সাহায্য করে। যাঁদের ‘মেয়েলি’ বলে কটাক্ষ করা হয়, আমি দেখেছি, তাঁদের হাতের কাজ আরও নিখুঁত। কী সুন্দর তুলির টান! আমি নিজেই অবাক হই, তাঁদের কাজ দেখেও শিখি। আমি হল্ফ করে বলছি, ইন্ডাস্ট্রিতে যাঁদের প্রকৃত শিক্ষার অভাব রয়েছে, তাঁরাই ওঁদের সঙ্গে খারাপ ব্যবহার করেন! আর যাঁদের সেই শিক্ষা রয়েছে, তাঁরা এই ধরনের শিল্পীকে আপন করে নেন।
প্রশ্ন: আর ইন্ডাস্ট্রির সদস্য হিসেবে কোনও ক্ষোভ?
সোমনাথ: জানি না, এগুলো পড়লে অনেকে আবার আমার উপর রাগও করতে পারেন। তবে সমস্যাটা খুব সহজেই সমাধান করা যায়। আমি চাই, ইন্ডাস্ট্রিতে লাঞ্চ ব্রেকে জুনিয়র আর্টিস্টদের যেন বাকিদের সঙ্গে একই সময়ে খাবার দেওয়া হয়। পাশাপাশি, ফ্লোরে বা স্টুডিয়োয় যেন তাঁদের জন্য নির্দিষ্ট বসার ব্যবস্থা থাকে। তাঁরা সত্যিই খুব কষ্ট করে কাজ করেন।
প্রশ্ন: আপনাকে দেখে যাঁরা ভবিষ্যতে এই ‘অনিশ্চিত’ পেশায় আসতে চাইবেন, তাঁদের উদ্দেশে কোনও পরামর্শ?
সোমনাথ: মন যেটা চাইছে, সেটাই করা উচিত। মাথায় রাখতে হবে, চটজলদি সাফল্য আসে না। ‘ধূমকেতু’তে সুযোগ পাইনি বলেই হয়তো জেদের বশে আজ নিজেকে প্রমাণ করতে পেরেছি। তাই লেগে থাকতে হবে। আমাদের পেশা অনেকটা প্রতিমাশিল্পীদের মতো। কয়েক মাসের কাজের উপর নির্ভর করে সারা বছর সংসার চলে। তাই মাথা ঠান্ডা রেখে, সততা বজায় রেখে কাজ করা উচিত।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy