রসিকা, কীর্তি, জিমি এবং পঙ্কজ।
স্বজনপোষণ। যার দাপটে কোণঠাসা বলিউডের তাবড় প্রতিভাবান অভিনেতা। তার বদলে বলিউডে রাজপাট চালাচ্ছেন এমন কিছু তারকা, যাঁদের পরিবারের কেউ না কেউ ইন্ডাস্ট্রির সঙ্গে যুক্ত। কিন্তু প্রতিভা কি কোনও দিন কদর পাবে না? টিনসেল টাউন বলছে, প্রতিভা চাপা থাকে না। ঠিক জায়গা করে নেয়। তারই জ্বলন্ত উদাহরণ জিমি শেরগিল, মিতা বশিষ্ঠ, রাধিকা আপ্তে, শেফালি শাহ, পঙ্কজ ত্রিপাঠী সহ ১১ অভিনেতা। যাঁরা বলিউডে ততটাও খ্যাতিমান নন। কিন্তু ওটিটি প্ল্যাটফর্মে নিজেদের প্রতিভার ছাপ রেখেছেন।
জিমি শেরগিল: নায়ক হওয়ার সমস্ত উপাদান তাঁর মধ্যে ছিল। গুলজারের ‘মাচিস’ দিয়ে অভিনয়ে হাতেখড়ি। ‘মহব্বতেঁ’, ‘তনু ওয়েডস মনু’, ‘মুন্নাভাই এমবিবিএস’, ‘আ ওয়েডনেস ডে’, ‘স্পেশ্যাল ২৬’, ‘মাই নেম ইজ খান’ 'তনু ওয়েডস মনু'-র মতো ছবিতে কাজ করেছেন। তার পরেও একটা সময় হারিয়ে যেতে বসেছিলেন জিমি। ২০২০-তে তিনিই প্রবল ভাবে ফিরে এসেছেন ‘ইওর অনার’ সিরিজে। ইজরায়েলি সিরিজের ছায়ায় তৈরি হিন্দি সিরিজে জিমি দায়রা আদালতের বিচারক বিশান খোসলা। জিমি নিজে স্বীকার করেছেন, এই সিরিজ তাঁর অভিনয় জীবনে টাটকা অক্সিজেন এনে দিয়েছে।
শেফালি শাহ: ২৫ বছরেরও বেশি বলিউডে কাজ করার পর শেফালি শাহ ওটিটি তারকা! নেটফ্লিক্সের ‘দিল্লি ক্রাইম’ তাঁকে বিশাল জনপ্রিয়তা এনে দিয়েছে। এই সিরিজে তিনি পুলিশ অফিসার। শেফালি নিজে স্বীকার করেছেন, রিচি মেহতার এই শো নাকি তাঁর জীবন বদলে দিয়েছে। শেফালির দাবি, “৪০ পেরোলেই অভিনেত্রীরা বুড়ি। মা, দিদিমার চরিত্র তাঁদের কপালে জোটে। আমায় শেষ কবে মুখ্য চরিত্রে অভিনয় করতে দেখেছেন? অনেকেই হয়ত ডাকবেন বলে ভেবেছেন। কিন্তু সাহস করে কেউ ডেকে উঠতে পারেননি। ওটিটি প্ল্যাটফর্ম সেটা পেরেছে।’’ তাই সুযোগ পেয়ে নিজেকে প্রমাণ করেছেন অভিনেত্রী।
পঙ্কজ ত্রিপাঠী: ২০০৪-এ ‘রান’ ছবির হাত ধরে অভিনয়ে আসেন। প্রয়াত বলিউড অভিনেতা ইরফান খানের সঙ্গে ‘আংরেজি মিডিয়াম’-এও অভিনয় করেছেন। কিন্তু রহস্যরোমাঞ্চ সিরিজ ‘মির্জাপুর’-এ অভিনয়ের পরেই নাকি ভাগ্য বদলে গিয়েছে পঙ্কজ ত্রিপাঠীর। এমনই দাবি অভিনেতার। স্বীকার করেছেন, ওটিটি-র দৌলতেই গ্রামের সবাই তাঁকে চিনেছেন। নিয়মিত তাঁর অভিনয় দেখেন।
রাধিকা আপ্তে: শুধুই দক্ষিণী ছবিতে নয়, স্বাধীন, সমান্তরাল ছবিতেও তাঁর অভিনয় মনে রাখার মতো। মারাঠি, তেলুগু, বাংলা, হিন্দি এবং ইংরেজি ছবিতে তিনি অনায়াস। রাধিকা আপ্তে তার পরেও বড় পর্দায় উপেক্ষিত। ওটিটি-র পাটরানি। কেন? টানটান গল্প, দমবন্ধ করা নাটক, বহুস্তরীয় চিত্রনাট্য আর আবেগ ওটিটির প্রাণভোমরা। রাধিকা সবটাই তাঁর অভিনয় গুণে ফুটিয়ে তুলছেন সহজে।
মিতা বশিষ্ঠ: আইনের যেমন ভাল আর মন্দ দিক আছে, অভিনয় জীবনেও সেই দুটো দিক বর্তমান। মিতা বশিষ্ঠ তাঁর জ্বলন্ত উদাহরণ। ছোট, বড় পর্দা হয়ে মঞ্চেও অনায়াস গতিবিধি মিতার। ‘চাঁদনি’, ‘দিল সে’, ‘গুলাম’, ‘তাল’-এর মতো ছবি তাঁর ঝুলিতে। ছোট পর্দায় মনে রাখার মতো কাজ ‘ভারত এক খোঁজ’, ‘মি. যোগী’, ‘কাহানি ঘর ঘর কি’, বাংলা ছবি 'পাতালঘর'। মিতাও ওয়েব সিরিজমুখী। জিমি শেরগিল, সুহাসিনী মূলে অভিনীত ‘ইওর অনার’-এ পুলিশ অফিসার। মিতা এখানেও যথারীতি অনবদ্য।
সবিতা ধুলিপালা: তাঁর ঝুলিতে ‘রমন রাঘব ২.০’-র মতো ছবি। আর অজস্র ছোট ছোট চরিত্র। বলিউডের ক্রমাগত কড়া নাড়া আর প্রত্যাখ্যান। এ ভাবেই যখন ফুরিয়ে যাচ্ছিলেন সবিতা, তখনই সুযোগ পান জোয়া আখতারের 'মেড ইন হেভেন' সিরিজে। বাকিটুকু জাদু! সবিতা অভিনীত ‘তারা খন্না’ তাঁকে নাম, যশ, খ্যাতি, অর্থ-- সব দিয়েছে। শো-এর দ্বিতীয় সিজন খুব তাড়াতাড়ি মুক্তি পাবে।
প্রতীক গাঁধী: একটা সময় তাঁর আয় ছিল শূন্য। এখন ওটিটি, বড়পর্দা মিলে তিনি বেজায় ব্যস্ত। পুরোটাই হয়েছে সিরিজ ‘স্ক্যাম ১৯৯২’-এর দৌলতে। সেখানে তিনি হর্ষদ মেহতা। বাকিটা ইতিহাস। স্বয়ং শাবানা আজমি প্রতীকের প্রশংসায় পঞ্চমুখ। বলেছেন, ‘‘২০ বছর পরে মনে রাখার মতো অভিনয় দেখলাম।’’ বলিউড, গুজরাতি সিনে দুনিয়া প্রতীককে ছবিতে পেতে আগ্রহী।
রসিকা দুগাল: নন্দিতা দাসের ছবি ‘মান্টো’ যাঁরা দেখেছে্ন, তাঁরা রসিকাক দুগালকে মনে রাখতে বাধ্য। তার পরেও তিনি যথারীতি উপেক্ষিত। তবে প্রতিভা কখনই চাপা থাকে না। ‘মির্জাপুর’, ‘দিল্লি’র মতো ওয়েব সিরিজে অভিনয় করে রসিকা নিজেকে প্রমাণ করেছেন।
জয়দীপ আহলাওয়াত: এক দশক ধরে অভিনয়ে। ছোট পর্দায় যথেষ্ট জনপ্রিয়। তার পরেও যেন হালে পানি পাচ্ছিলেন না জয়দীপ আহলাওয়াত। ওটিটি তাঁকে অধরা খ্যাতি এনে দিয়েছে। অনুষ্কা শর্মা প্রযোজিত ‘পাতাল লোক’ তাঁর স্বীকৃতির অভিজ্ঞান। পাশাপাশি তিনি নিজেকে প্রমাণ করেছেন কর্ণ জোহরের ‘আজিব দস্তান’ ছবিতে। সমকামী সুপুরুষ হিসাবে।
কীর্তি কুলহারি: তাঁর ঝুলিতে ‘মিশন মঙ্গল’, ‘উরি: দ্য সার্জিকাল স্ট্রাইক’, এবং ‘পিঙ্ক’-এর মতো ছবি। তার পরেও কীর্তি কুলহারি ওটিটি-তে জনপ্রিয়! অভিনেত্রীর দাবি, একের পর এক সিজন, সাহসী বিষয়, অভিনয়ের স্বাধীনতা আর নিমেষে ঘরে ঘরে পৌঁছে যেতে পারে বলেই ওটিটি এত জনপ্রিয়। তার দৌলতে জনপ্রিয় অভিনেতারাও।
দিব্যেন্দু শর্মা: ‘প্যায়ার কা পঞ্চনামা’ ছবি কার্তিক আরিয়ানকে বিখ্যাত করেছিল। একই ছবিতে অভিনয় করেও দিব্যেন্দু শর্মা সবার নজরের আড়ালে। অভিনেতা জনপ্রিয়তা পেলেন ‘মির্জাপুর’-এ অভিনয় করে। সে কথা স্বীকার করেন তিনি নিজেও।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy