মুর্শিদাবাদে ভোটের লাইনে ভোটাররা। ছবি পিটিআই।
ভোটদানেও পুরুষদের পিছনে ফেলে দিলেন মহিলারা। গত সোমবার ও বৃহস্পতিবার দু’দফায় মুর্শিদাবাদের ২০ টি বিধানসভা কেন্দ্রের নির্বাচন শেষ হয়েছে। নির্বাচন শেষে দেখা গিয়েছে, প্রথম দফার ৯ টি কেন্দ্রে মোট ৮২.১২ শতাংশ ভোট পড়েছে। আর সেই দিন ৮৫.০৪ শতাংশ মহিলা ভোট দিয়েছেন এবং ৭৯.২৬ শতাংশ পুরুষ ভোট দিয়েছেন। বৃহস্পতিবার যে ১১টি কেন্দ্রে নির্বাচন হয়েছে তাতে মোট ভোট পড়েছে ৮১.০৪ শতাংশ। সেই দিন ৮৩.১০শতাংশ মহিলা ও ৭৯.০৫ শতাংশ পুরুষ ভোট দিয়েছেন।
শুধু শতাংশের বিচারে নয়, সংখ্যার বিচারেও ভোটদানে পুরুষদের পিছনে ফেলে দিয়েছেন মুর্শিদাবাদের মহিলারা। জেলা প্রশাসন সূত্রের খবর, প্রথম দিনের ৯ টি কেন্দ্রে ১১ লক্ষ ৩৯ হাজার ৩০২ জন পুরুষ ভোটার ছিলেন। তাঁদের মধ্যে ভোট দিয়েছেন ৯ লক্ষ ৩ হাজার ৬৯ জন। অন্যদিকে ওই ৯ টি কেন্দ্রে ১১ লক্ষ ১১ হাজার ৮০৩ জন মহিলা ভোটার রয়েছে। ভোট দিয়েছেন ৯ লক্ষ ৪৫ হাজার ৫৮১ জন।
দ্বিতীয় দফার ১১টি কেন্দ্রে ১৩ লক্ষ ৮২হাজার ৯৯১ জন পুরুষ ভোটারের মধ্যে ১০ লক্ষ ৯৩হাজার ৩০৫জন ভোট দিয়েছেন। আবার ১৩ লক্ষ ৩৪ হাজার ১২৬ জন মহিলা ভোটারের মধ্যে ১১ লক্ষ ৮ হাজার ৭৩০ জন ভোট দিয়েছেন।
পুরুষদের তুলনায় মহিলারা যে বেশি ভোট দিয়েছেন তা সোমবার ও বৃহস্পতিবার আঁচ পাওয়া গিয়েছিল। বুথে বুথে পুরুষদের তুলনায় মহিলাদের লম্বা লাইন ছিল। তা দেখে অনেকেই বলছিলেন, ভোটদানে পুরুষদের পিছনে ফেলে দেবেন মহিলারা। যেমন রঘুনাথগঞ্জ বিধানসভা কেন্দ্রে ভোট পড়েছে ৭৬.১৪ শতাংশ। সেথানে মাত্র ৬৭.৬৬ শতাংশ পুরুষ ভোট দিয়েছেন। ওই কেন্দ্রে ৮৪.৮৯ শতাংশ মহিলা ভোট দিয়েছেন। সোমবার ভোটের লাইনে মহিলাদের আধিক্য দেখে রঘুনাথগঞ্জের তৃণমূলের প্রার্থী আখরুজ্জামান বলেছিলেন, ‘‘পুরুষ ভোটার কাজে বাইরে আছেন। অনেকেই বাড়ি ফিরতে পারেননি। ফলে পুরুষদের তুলনায় মহিলারা বেশি ভোট দিচ্ছেন।’’
প্রশাসন সূত্রের খবর, জেলায় ৯ টি কেন্দ্রের মধ্যে সব থেকে বেশি ভোট পড়েছে রানিনগরে। সেখানে ৮৬.৩১ শতাংশ ভোট পড়েছে। সেখানে প্রায় ৮৮শতাংশ মহিলা ভোট দিয়েছেন। প্রায় ৮৫শতাংশ পুরুষ ভোট দিয়েছেন। তবে ভগবানগোলায় ৮৮.৪৬ শতাংশ মহিলা ভোট দিয়েছেন, সেখানে পুরুষরা ভোট দিয়েছেন ৮২.৬০ শতাংশ।
কীভাবে মহিলাদের ভোটদানে এগিয়ে আনা সম্ভব হল? জেলা প্রশাসনের এক কর্তা জানান, ভোটদানে এগিয়ে আসার জন্য মহিলাদের নানাভাবে সচেতন করা হয়েছে। স্কুল-কলেজে ভোট সাক্ষরতা ক্লাব করা হয়েছে, স্বনির্ভর গোষ্ঠীর মহিলাদের মধ্যে সচেতন করা হয়েছে। যার জেরে মহিলারা ভোটদানে এগিয়ে এসেছেন। তবে মহিলাদের এগিয়ে আসার ক্ষেত্রে যেমন এসব কারণ রয়েছে, তেমনই পুরুষদের পিছিয়ে থাকারও কারণ রয়েছে। প্রশাসনের এক আধিকারিক বলেন, ‘‘জেলার একটি বড় সংখ্যাক ভোটার পরিযায়ী শ্রমিকের কাজের সঙ্গে যুক্ত। গত বছর লকডাউনের জেরে তাঁরা বাড়ি ফিরেছিলেন। কিন্তু পরিস্থিতি থিতু হতেই কয়েক মাস আগে তাঁরা ভিন রাজ্যে কাজে ফিরেছেন। আমরা ভোটদানে আহ্বান জানালেও তাঁরা এই অল্প সময়ে শুধুমাত্র ভোটের জন্য বাড়ি ফিরতে চাননি। তাই পুরুষদের পিছনে ফেলে দিয়েছেন মহিলারা।’’
তবে মুর্শিদাবাদের মহিলারা এখন সব কাজেই পুরুষদের সঙ্গে টক্কর দিচ্ছেন। গত কয়েক বছর থেকে দেখা যাচ্ছে মাধ্যমিক কিংবা উচ্চ মাধ্যমিকে ছেলে পরীক্ষার্থীর তুলনায় মেয়ে পরীক্ষার্থী বেশি। এমনকি পরীক্ষার পাশের হারেও মেয়েরা ছেলেদের পিছনে ফেলে দিয়েছে এমন
উদাহরণ রয়েছে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy