গ্রাফিক: শৌভিক দেবনাথ।
শনিবার পঞ্চম দফায় ভোটগ্রহণ রাজ্যে। এই দফায় ভোট হবে ৬ জেলার ৪৫ আসনে। কালিম্পং জেলার একমাত্র আসনের পাশাপাশি জলপাইগুড়ির ৭ এবং দার্জিলিঙের ৫ আসনে ভোটগ্রহণ। এ ছাড়াও ভোট দেবেন উত্তর ২৪ পরগনার ১৬, পূর্ব বর্ধমানের ৮ এবং নদিয়ার ৮ আসনের ভোটাররা।
৪৫ আসনের মধ্যে রাজ্য রাজনীতি অথবা বিনোদন জগতের চেনা মুখে এগিয়ে রয়েছে তৃণমূল। আর এই দফায় বিজেপি-র তেমন মুখের সংখ্যা যে হেতু কম, তাই প্রতিপক্ষ দুই খ্যাতনামার লড়াই তিন আসনে— বিধাননগর, বরাহনগর এবং রাজারহাট-গোপালপুরে।
বিধাননগরের লড়াই পুরোপুরি দুই রাজনৈতিক ব্যক্তিত্বের মধ্যে। এখানে এক সময়ের সহযোদ্ধা সুজিত বসু ও সব্যসাচী দত্ত এখন যুযুধান। দু’জনেই তৃণমূলের বিদায়ী বিধায়ক। দমকল মন্ত্রী সুজিত বিধাননগরেরই বিধায়ক। আর বিধাননগরের প্রাক্তন মেয়র সব্যসাচী রাজারহাট-নিউটাউনের বিদায়ী বিধায়ক। এ বার পদ্মের হয়ে তিনি প্রার্থী বিধাননগরে। পঞ্চম দফার ভোটে অবশ্যই হাড্ডাহাড্ডি লড়াইয়ের কেন্দ্র হয়ে থাকবে বিধাননগর।
বরাহনগরেও দুই চেনা মুখের লড়াই। তৃণমূলের প্রার্থী রাজ্যের বিদায়ী মন্ত্রী তাপস রায়। এই আসন থেকেই পর পর দু’বারের বিধায়ক তাপসের বিরুদ্ধে বিজেপি-র প্রার্থী অবশ্য রাজনীতিতে নবগতা। বেশ কিছু দিন আগেই গেরুয়াশিবিরে যোগ দিলেও এই প্রথম নির্বাচনের ময়দানে পার্নো। প্রচারের শেষ দিন বুধবার পার্নোর মিছিলে হামলার অভিযোগে উত্তেজনার পরিবেশ তৈরি হয় বরাহনগরে। দুই প্রতিপক্ষ দলের বাদানুবাদে শিরোনামে আসা বরাহনগর নজরে থাকবে ভোটগ্রহণের দিনেও।
আরও একটি কেন্দ্রের দিকে নজর থাকবে শনিবার। এই আসনেও এক পোড় খাওয়া রাজনীতিকের বিরুদ্ধে এক শিল্পীর লড়াই। এক দিকে বিজেপি-র প্রাক্তন বিধায়ক তথা রাজ্যের দলীয় মুখপাত্র শমীক ভট্টাচার্য ও অন্য দিকে তৃণমূলের প্রার্থী রাজনীতিতে নবাগতা কীর্তন শিল্পী অদিতি মুন্সি। অদিতি নতুন হলেও তাঁর পরিবারের রাজনীতি-যোগ আগে থেকেই। স্বামী দেবরাজ চক্রবর্তী বিধাননগর পুরসভার প্রাক্তন কাউন্সিলার।
পঞ্চম দফার ভোটগ্রহণে তৃণমূলের আরও অনেক প্রার্থীই নজরে থাকবেন। তাঁদের মধ্যে অভিজ্ঞ রাজনীতিক যেমন রয়েছেন তেমনই আছেন খ্যাতনামীরা। যেমন রাজ্যের মন্ত্রী ব্রাত্য বসু। গত দুই বিধানসভা নির্বাচনে জয়ের পরে এ বারেও তিনি প্রার্থী দমদম আসন থেকে। জলপাইগুড়ি জেলার ডাবগ্রাম-ফুলবাড়ি কেন্দ্রে প্রার্থী রাজ্যের মন্ত্রী গৌতম দেব। এই কেন্দ্র থেকেই ২০১১ এবং ২০১৬ সালের বিধানসভা নির্বাচনে জিতেছেন তিনি। হয়েছেন রাজ্যের প্রথম উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন মন্ত্রী। এ ছাড়াও পঞ্চম দফার ভোটে প্রার্থী রাজ্যের মন্ত্রী সিদ্দিকুল্লা চৌধুরী। আগে মঙ্গলকোট থেকে জয়ী সিদ্দিকুল্লা এ বার প্রার্থী পূর্ব বর্ধমানের মন্তেশ্বর আসনে।
এই দফাতেই ভোটে লড়ছেন মদন মিত্র। রাজ্যের প্রাক্তন পরিবহণ মন্ত্রী চিটফান্ড কাণ্ডে জেলবাসের পরে অনেকটা সময় রাজনীতির মূলস্রোতে ছিলেন না। ফিরলেও ২০১৬ সালের বিধানসভা নির্বাচনে সিপিএমের কাছে কামারহাটি আসনে হেরে যান। এর পরে ২০১৯ সালে ভাটপাড়া উপনির্বাচনেও পরাজিত হন বিজেপি-র কাছে। এ বার কামারহাটিতে পুরনো আসন ফিরে পাওয়ার লড়াই মদনের।
রানাঘাট উত্তর-পশ্চিম আসন থেকে ২০১৬ সালে কংগ্রেসের টিকিটে বিধায়ক হলেও পরে তৃণমূলে যোগ দেন শঙ্কর সিংহ। এ বার নীলবাড়ির লড়াইয়ে ওই আসন থেকেই তৃণমূলের প্রার্থী তিনি। এই দফায় প্রার্থী তৃণমূলের তাপস চট্টোপাধ্যায়। ২০১১ সালের বিধানসভা নির্বাচনে সিপিএম প্রার্থী হিসেবে লড়ে তিনি রাজারহাট-নিউটাউন আসনে তৃণমূলের সব্যসাচী দত্তর কাছে পরাজিত হন। এ বার ওই একই কেন্দ্রে তৃণমূলের প্রার্থী তিনি। ২০১৫ সালে তৃণমূলে যোগ দেওয়া তাপস অতীতে রাজারহাট-গোপালপুর পুরসভায় বাম বোর্ডের চেয়ারম্যানও ছিলেন।
আর আছেন চিরঞ্জিৎ চক্রবর্তী। রাজনীতিতে নতুন নন। পর পর দু’টি বিধানসভা নির্বাচনে জয়ী হওয়া চিরঞ্জিত এ বারও সেই বারাসত কেন্দ্রেই তৃণমূলের প্রার্থী। তৃতীয় বারের বিধানসভা লড়াইতে এসেও চিরঞ্জিত যতটা না রাজনীতিক তার চেয়ে এখনও অনেক বেশি তারকা।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy