অভিনেতা অরিন্দম শীল এবং বিজেপি নেতা শঙ্কুদেব পণ্ডা
টলিউডের তৃণমূল ঘনিষ্ঠ অভিনেতা-পরিচালক অরিন্দম শীল কি বিজেপিতে যাচ্ছেন? এমন জল্পনা বেশ কয়েক দিন ধরেই। তবে এই প্রশ্নের উত্তরে সোমবার সকালেই তিনি আনন্দবাজার ডিজিটালকে বলেছেন, ‘‘না, কথাটা একেবারেই সত্যি নয়। বিজেপি-তে যোগদান করছি না। বিজেপি-র উপরমহল পর্যন্ত জানে, আমি বিজেপি-তে যাচ্ছি না। বিজেপি কেন, রাজনীতিতেই আমার আর কোনও উৎসাহ নেই।’’ এই কথা হওয়ার কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই দেখা গেল তাঁরই অফিসে বিজেপি যুব মোর্চার রাজ্য সহ-সভাপতি শঙ্কুদেব পণ্ডাকে।
সেখানে কোনও রাজনৈতিক আলোচনা হয়েছে কি না, তা না জানালেও টুইটে বৈঠকের ছবি পোস্ট করে শঙ্কু লিখেছেন, ‘আজ বিকেল অরিন্দমদার সঙ্গে চায়ে পে চর্চা। আলোচনা হল সোনার বাংলা নিয়েও’। এর মধ্যে কোনও রাজনীতির কথা না থাকলেও গেরুয়া শিবিরের ব্যবহার করা ‘চায়ে পে চর্চা’ এবং ‘সোনার বাংলা’ শব্দের আড়ালে কি অরিন্দেমের সঙ্গে বিজেপি-র বোঝাপড়ার ইঙ্গিত? এ নিয়ে প্রশ্ন করা হলে শঙ্কুদেব বলেন, ‘‘চা খেতে খেতে আড্ডা হয়েছে। ‘সোনার বাংলা’ কেমন হওয়া উচিত, তা নিয়েও আলোচনা হয়েছে।’’ রাজনীতির কথা হয়েছে কি? শঙ্কুর কুশলী জবাব, ‘‘কোনও কিছুই অরাজনৈতিক নয়।’’
অরিন্দম অবশ্য দাবি করেছেন, সকালে তিনি যা জানিয়েছেন, এখনও সেই অবস্থানেই অটল। এ বৈঠক নিয়ে প্রশ্ন করা হলে তিনি বলেন, ‘‘এর মধ্যে কোনও রাজনীতি নেই। উনি আসতে চেয়েছিলেন। আমার অফিসে ডেকে অতিথি আপ্যায়ন করেছি। আমি এখনও বলছি শুধু বিজেপি-তেই নয়, কোনও রাজনৈতিক দলেই আমি যোগ দেব না। তেমন কোনও সিদ্ধান্ত নিলে সেটা, সবার আগে আনন্দবাজার ডিজিটালকে জানাব।’’
দিন কয়েক আগেই বিজেপি নেতার সঙ্গে বৈঠকের পর জল্পনা তৈরি হয় অভিনেতা প্রসেঞ্জিৎ চট্টোপাধ্যায়কে নিয়ে। সরস্বতী পুজোর দিন প্রসেনজিতের দক্ষিণ কলকাতার বাড়িতে গিয়ে সস্ত্রীক তাঁর সঙ্গে দেখা করেছেন বিজেপি-র সংগঠক এবং অমিত শাহকে নিয়ে বইয়ের লেখক অনির্বাণ গঙ্গোপাধ্যায়। টলিউডের ‘বুম্বাদা’ অবশ্য সমস্ত জল্পনা সপাটে মাঠের বাইরে ফেলে আনন্দবাজার ডিজিটালে লিখেছেন, ‘আমি বিজেপি-তে যোগ দিচ্ছি না। রাজনীতিতেও যোগ দিচ্ছি না’। অরিন্দমের ক্ষেত্রেও কি একই পরিণতি হতে চলেছে? এমন প্রশ্নের জবাবে শঙ্কুদেব বলেন, ‘‘বিজেপি সবার হাতে ঝান্ডা ধরিয়ে দেবে, এমনটা নয়। সবাইকে নির্দিষ্ট ক্ষেত্রে কাজের সুযোগ করে দেওয়াটাই আমাদের লক্ষ্য। বাংলায় অনেক কৃতি মানুষই রয়েছেন, যাঁরা তৃণমূলের সঙ্গে থেকেও যোগ্য সম্মান ও বাংলার জন্য ভাল কাজ করার সুযোগ পাননি।’’
প্রসঙ্গত, গত ৩০ জানুয়ারি দিল্লিতে অমিত শাহ-র বাড়ি গিয়ে বিজেপি-তে যোগ দেওয়া অভিনেতা রুদ্রনীল ঘোষের সঙ্গেও শুরু দিকে এ ভাবেই বৈঠক হয়েছিল শঙ্কুদেবের। সেই বৈঠকের খবর প্রকাশ্যে এলেও আনন্দবাজার ডিজিটালকে রুদ্রনীল বলেছিলেন, “আমি সক্রিয় রাজনীতিতে যোগ দিতে চাই জানার পরে কংগ্রেসের তরফেও যোগাযোগ করা হয়েছে। প্রদেশ সভাপতি অধীর চৌধুরীর ঘনিষ্ঠ এক ব্যক্তি ফোন করেছিলেন। তবে আমি কাউকেই কোনও কথা দিইনি। আমার নিজের কাছেই এখনও কিছু রাজনৈতিক প্রশ্ন রয়েছে।’’ এর ক’দিন যেতে না যেতেই কলকাতার হরিদেবপুরে এক অভিনেতার জন্মদিনের অনুষ্ঠানে শুভেন্দুর সঙ্গে সাক্ষাৎ হয় রুদ্রনীলের। তার পরেই যোগদান।
এর পরে ৩১ জানুয়ারি ডুমুরজলায় বিজেপি-র সমাবেশে অরিন্দম যাবেন বলে দাবি করেছিলেন রুদ্রনীল। কিন্তু সে বারও ওই দাবি ঠিক নয় বলে জানান অরিন্দম। তাঁকে ওই সভায় দেখা যায়নি। তবে সম্প্রতি ‘টলিউডে মাফিয়ারাজ চলছে’ বলে রুদ্রনীল মন্তব্য করলে তার প্রতিবাদ করেন অরিন্দম। ‘মাফিয়ারাজ’ শব্দটায় আপত্তি আছে জানিয়ে তিনি বলেন, ‘‘আমি তো শান্তিতেই কাজ করতে পারছি। এমনকি বাইরে থেকে পরিচালকরা এসে কলকাতায় কাজ করে যাচ্ছেন। অনেকেই জানতেও পারছেন না।’’
তবে বাংলা ভোটের প্রাক্কালে সোমবার বিকেলে অরিন্দমের সঙ্গে শঙ্কুদেবের বৈঠক নিছক ‘সৌজন্যমূলক’, না এর পিছনে অন্য কোনও ‘সমীকরণ’ রয়েছে, তার জবাব সময়ই দেবে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy