নিজস্ব চিত্র
তারকেশ্বরের সভা থেকেই ফের বহিরাগত তত্ত্ব তুলে ধরলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। শনিবার তিনি বলেন, ‘‘দিল্লি থেকে তারকেশ্বরের প্রার্থী নিয়ে এসেছে বিজেপি। ভোট হয়ে গেলে সে চলে যাবে। কিন্তু আমাদের প্রার্থী এখানকার বাসিন্দা। বিজেপি-র প্রার্থী তো রাজ্যসভার সদস্য, ভোটে দাঁড়ানোর কী দরকার?’’ তারকেশ্বরে বিজেপি-র প্রার্থী স্বপন দাশগুপ্ত। তিনি রাজ্যসভারও সাংসদ। নাম না করে তাঁকেই বহিরাগত তকমা দিলেন মমতা। পাশাপাশি বললেন, ‘‘তৃণমূলে যেমন গদ্দার আছে, তেমনই বিজেপি-তেও আছে।’’
তারকেশ্বর বিধানসভার তৃণমূল প্রার্থী রামেন্দু সিংহ রায়ের সমর্থনে চৌতারা ইছাপুর মাঠে নির্বাচনী সভা করেন মমতা। শনিবার বেলা আড়াইটে নাগাদ হেলিকপ্টারে চৌতারা পৌঁছন মুখ্যমন্ত্রী। সভা থেকে তারকেশ্বরের মতো একাধিক তীর্থস্থানের উন্নয়নে তৃণমূল সরকার কী কাজ করেছে, তা তুলে ধরেন তিনি। মমতা বলেন, ‘‘ধনেখালি আমার প্রিয় জায়গা। এখানকার তৈরি তাঁতের শাড়ি আমি পরি। শাড়িতে আমি পছন্দ মতো এঁকে দিই, ওঁরা তৈরি করে দেয়।’’ তাঁতিদের জন্য তাঁত হাব করা হয়েছে। সরকারের কাজের বরাত তাঁতিদের দেওয়া হচ্ছে বলে জানান মুখ্যমন্ত্রী। তিনি বলেন, ‘‘সরকারের অনেক ধুতি-শাড়ি লাগে। আমি চাই আমাদের অর্ডার নিয়েই ওঁরা ভাল থাকুন।’’
ইতিহাসের কৃতীদের জন্মস্থান হিসাবে হুগলি পরিচিত। উমেশচন্দ্র বন্দ্যোপাধ্যায় থেকে প্রফুল্ল ঘোষ— এই জেলা নানা মানুষের জন্য বিখ্যাত। মমতা সেই কথা তুলে ধরে বলেন, ‘‘বাংলার মানুষ শান্তিপ্রিয়, সভ্যতাপ্রিয় কেন? কারণ বাংলার নিজস্ব সভ্যতা সংস্কৃতি এই শিক্ষা দেয়। যে দেশে রবীন্দ্রনাথ, নজরুল জন্মান সেখানে এই সংস্কৃতিই তো কাম্য। কিন্তু আজ বিজেপি বাংলাকে ভাগ করে দিতে চাইছে। দেশ যখন পরাধীন ছিল, তখন ইংরেজরা বাংলাকে ভাগ করতে চেয়েছিল। তখন ইংরেজদের বিরুদ্ধে বঙ্গভঙ্গ আটকাতে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর রুখে দাঁড়িয়েছিলেন। নরেন্দ্র মোদী, অমিত শাহরা এখন বাংলাকে ভাগ করতে চাইছে। ওরা বাংলাকে ইচ্ছে করে ‘বঙ্গাল’ বলে। ইচ্ছে করে অপমান করে বাংলাকে।’’
ভিক্টোরিয়া মেমোরিয়ালের ঘটনাও ফের তুলে আনেন তৃণমূল নেত্রী। বলেন, ‘‘নেতাজির ১২৫তম জন্ম দিবসের অনুষ্ঠানে মোদী জিন্দাবাদ ধ্বনি দেয়। তাই ওই অনুষ্ঠানে আমি একটাও কথা বলিনি। নেতাজিকে শ্রদ্ধা করি তাই বসেছিলাম। আমার লজ্জায় মাথা হেঁট হয়ে যাচ্ছিল। নেতাজি সুভাষচন্দ্রের থেকেও বড় নেতা হয়ে গিয়েছেন এঁরা।’’
বহিরাগত তত্ত্ব তুলে মমতার ক্ষোভ, ‘‘নন্দীগ্রামে আমি নাকি বাইরের লোক! আর মীরজাফর, গদ্দাররা হয়ে গেল নিজের লোক। অনেক অত্যাচার করেছে। নন্দীগ্রাম আমার চোখ খুলে দিয়েছে। উত্তরপ্রদেশ, বিহার থেকে গুন্ডা নিয়ে এসেছে। বোমা এনেছে। মুজফ্ফর নগর থেকে পেট্রল বোমা এনেছে। দক্ষিণ ২৪ পরগনা, উত্তর ২৪ পরগনা, হুগলির সব জায়গাতে জাতিগত ভেদ করে রেখেছে। হুগলি লোকসভা আসনে রত্না দে নাগ কী ভাবে হেরে যান? ওই আসনে লকেট চট্টোপাধ্যায়ের কী ভূমিকা আছে?’’ মমতার তোপ, ‘‘ওঁরা রামকৃষ্ণ, বিবেকানন্দের ধর্ম মানে না। মা দুর্গাকে ওঁরা গালাগাল দেয়। ওঁরা মহিলা বিরোধী।’’
ভোটের দিন সতর্ক থাকার বার্তা দিয়ে মমতা বলেন, ‘‘মনে রাখবেন, ওরা টাকা দিয়ে ভোট কেনার চেষ্টা করছে। এমন করছে নজরে পড়লেই ভিডিয়ো করে রাখুন। আমাকে পাঠান। না হলে সোশ্যাল মিডিয়ায় দিন। পরে আমরা ব্যবস্থা নেব।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy