জনগনের কাছে হাত নেড়ে পাশে থাকার আর্জি জগদীশের বুধবার কোচবিহারে। নিজস্ব চিত্র।
চ্যালেঞ্জ ছিল দুটি। এক, মনোনয়নের দিন বিজেপি প্রার্থী তথা কেন্দ্রীয় প্রতিমন্ত্রী নিশীথ প্রামাণিক যে ভিড় জড়ো করেছিলেন, তাকে ছাপিয়ে যাওয়া। দুই, দলের ঐক্যবদ্ধ একটি ছবি কর্মী-সমর্থকদের সামনে তুলে ধরা। বুধবার মনোনয়ন পত্র জমা দেওয়ার পরে, তৃণমূলের কোচবিহার লোকসভা আসনের প্রার্থী জগদীশ বর্মা বসুনিয়া দাবি করলেন, তিনি দুটোতেই সফল হয়েছেন। হাসিমুখে বললেন, ‘‘জো জিতেগা ওহি সিকন্দর।’’ যা শুনে বিজেপির কোচবিহার জেলা সভাপতি সুকুমার রায়ের টিপ্পনী, ‘‘গণনার পরেই প্রমাণিত হয়ে যাবে, কে সফল আর কে বিফল।’’
এ দিন বেলা ১২টা নাগাদ কোচবিহার জেলা পার্টি অফিসে তৃণমূল কর্মীদের জমায়েতের নির্দেশ দেওয়া হয়। তার আগেই সিতাই থেকে কোচবিহারে পৌঁছে যান জগদীশ। জগদীশের বাড়ি সিতাইয়ে। কোচবিহারে পৌঁছে তিনি যান নতুন মসজিদে। সেখানে প্রার্থনা সেরে তিনি পৌঁছন কোচবিহার মদনমোহন মন্দিরে। সেখানে পুজো দেওয়ার পরে, মিছিল নিয়ে কোচবিহার জেলাশাসকের দফতরের দিকে রওনা হন জগদীশ। তাঁর সঙ্গে ছিলেন উত্তরবঙ্গ উন্নয়নমন্ত্রী উদয়ন গুহ, তৃণমূলের কোচবিহার জেলা সভাপতি অভিজিৎ দে ভৌমিক, প্রাক্তন মন্ত্রী রবীন্দ্রনাথ ঘোষ, বিনয়কৃষ্ণ বর্মণ, প্রাক্তন সাংসদ পার্থপ্রতিম রায় এবং ‘গ্রেটার কোচবিহার পিপলস অ্যাসোসিয়েশন’-এর একটি অংশের নেতা বংশীবদন বর্মণ। কোচবিহার জেলাশাসকের দফতরে পার্থপ্রতিম রায় ছাড়া, জেলার শীর্ষ তৃণমূল নেতাদের প্রত্যেকেই হাজির হয়েছিলেন।
মিছিল নিউটাউন মোড়ে তৃণমূলের জেলা পার্টি অফিস থেকে শুরু হয়ে সুনীতি রোড দিয়ে কোচবিহার জেলাশাসকের দফতরে পৌঁছয়। দলীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, লোক জমায়েতের জন্য আলাদা ভাবে বিধানসভাভিত্তিক দায়িত্ব নিয়েছিলেন তৃণমূলের শীর্ষ নেতারা। মনোনয়নের পরে জগদীশ বলেন, ‘‘স্বতঃস্ফূর্ত ভাবে মানুষ মনোনয়নে যোগ দিয়েছেন। আমরা জয়ের জন্য একশো শতাংশ আশাবাদী। ভোটে জয়ী হয়ে সবুজ আবির খেলব।’’ যদিও বিজেপির কোচবিহার জেলা সাধারণ সম্পাদক বিরাজ বসুর বক্তব্য, ‘‘তৃণমূলের সঙ্গে মানুষ নেই। জোর করে লোক নিয়ে এসেও মিছিল বড় করতে পারেনি তৃণমূল। সে জন্য মানুষকে বিভ্রান্ত করার চেষ্টা করছে।’’
মনোনয়ন দেওয়ার পরে, এ দিন প্রতিপক্ষকে বিঁধে জগদীশ বলেন, ‘‘বিজেপি প্রার্থী নিশীথ প্রামাণিকের বিরুদ্ধে বহু মামলা রয়েছে। মানুষ এ বার অপরাধীমুক্ত কোচবিহার চাইছে। আর এ বার আমরা সবাই ঐক্যবদ্ধ।’’
২০১৯ সালের লোকসভা নির্বাচনে কোচবিহার আসনে বিজেপির নিশীথের কাছেই পরাজিত হয়েছিল তৃণমূল। দল মনে করে, ওই ভোটে পরাজয়ের পিছনে বড় কারণ ছিল ‘গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব’। এ বার শুরু থেকেই তাই দ্বন্দ্ব মেটাতে কড়া নির্দেশ জারি করেন তৃণমূল রাজ্য নেতৃত্ব। দলীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, এ বার তৃণমূলের প্রাক্তন সাংসদ পার্থপ্রতিম রায়কে টিকিট দেওয়া হয়নি। তা নিয়ে পার্থপ্রতিমের অনুগামীদের মধ্যে ক্ষোভ ছড়ায়। তা মেটানোর জন্য পার্থপ্রতিমের সঙ্গে আলোচনাও করেন রাজ্য নেতৃত্ব। এ দিন পার্থপ্রতিম রায় শুরু থেকেই মিছিলে ছিলেন। তিনি বলেন, ‘‘কোনও দ্বন্দ্ব নেই
আমাদের মধ্যে। আমরা এ বার জয়ী হবই।’’ বংশীবদন বলেন, ‘‘রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় আমাদের দাবি মেনে কোচবিহারে একের পর এক উন্নয়ন করেছেন। রাজবংশী ভাষার স্কুল পর্যন্ত অনুমোদন করেছেন। তাই আমরা তৃণমূলের পক্ষে রয়েছি।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy