প্রতীকী ছবি।
গত লোকসভা নির্বাচনে দক্ষিণ কলকাতায় ২৬টি ওয়ার্ডে এগিয়ে গিয়েছিল বিজেপি। দক্ষিণ কলকাতা লোকসভার অধীন কলকাতা পৌরসভার ৫৯টি ওয়ার্ডের মধ্যে ২৬টিতে বিজেপির এ ভাবে এগিয়ে যাওয়ার বিষয়টি তৃণমূল নেতৃত্বের মনে আশঙ্কা তৈরি করেছিল সেই সময়ে। যদিও পরবর্তী সময়ে বিধানসভা এবং পুরসভার নির্বাচনে সেই ক্ষতে প্রলেপ দিয়ে জমি পুনরুদ্ধার করেছিল বাংলার শাসকদল। কিন্তু এ বারের লোকসভা নির্বাচনে যাতে ২০১৯ সালের পুনরাবৃত্তি না হয়, সেই বিষয়ে সতর্ক তৃণমূল নেতৃত্ব। গত শুক্রবার কলকাতা শহরের এক হোটেলে পুরসভার দলীয় কাউন্সিলরদের নিয়ে বৈঠক করেছেন মেয়র ফিরহাদ হাকিম। সেই বৈঠকে উত্তর এবং দক্ষিণ কলকাতার কাউন্সিলরদের স্পষ্ট বার্তা দিয়েছেন, সব ওয়ার্ড থেকে প্রার্থীদের ভাল লিড দিতে হবে। যে হেতু দক্ষিণ কলকাতা তৃণমূলের ‘গড়’, সে হেতু এই এলাকার কাউন্সিলরদের বাড়তি দায়িত্ব নিয়ে কাজ করতে হবে। কারণ, তৃণমূলের ‘দুর্গ’ দক্ষিণ কলকাতায় বাস করেন মুখ্যমন্ত্রী থেকে শুরু করে দলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়-সহ তৃণমূলের এক ঝাঁক প্রথম সারির নেতা। তাই সবাইকে বাড়তি দায়িত্ব নিতে হবে।
দক্ষিণ কলকাতার জন্য বিশেষ পরিকল্পনা তৈরি হয়েছে তৃণমূলের অন্দরে। যে ২৬টি ওয়ার্ডে গত লোকসভা নির্বাচনে পিছিয়ে পড়েছিল তৃণমূল, সেই সব ওয়ার্ডে বিদায়ী সাংসদ তথা প্রার্থী মালাকে নিয়ে কর্মিসভা করা হবে। শুধু দলীয় কর্মীদের সঙ্গেই নয়, ওই ওয়ার্ডের মানুষজনের সঙ্গেও যাতে মালা নিজে কথা বলতে পারেন, তারও ব্যবস্থা করা হবে। পাশাপাশি দক্ষিণ কলকাতা জেলা তৃণমূলের সভাপতি দেবাশিস কুমার দলের কাউন্সিলরদের নির্দেশ দিয়েছেন, একক ভাবে ওয়ার্ডের ভোট কৌশল সাজালে চলবে না, ব্লক কমিটি ও ব্লক সভাপতিদেরও জুড়ে নিতে হবে। পারস্পরিক সমন্বয়ের ভিত্তিতে এ বারের লোকসভা নির্বাচনে প্রার্থীর জন্য কাজ করতে হবে। প্রসঙ্গত, ২০১৯ সালের লোকসভা নির্বাচনে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের কেন্দ্র ভবানীপুর থেকে শুরু করে অন্য মন্ত্রীদের বিধানসভা থেকেও ওয়ার্ডভিত্তিক ভাল ব্যবধানে এগিয়ে গিয়েছিল বিজেপি। তাই সেই ঘটনার পুনরাবৃত্তি যাতে না হয়, তার জন্য প্রথম থেকেই কোমর বাঁধছে তৃণমূল। দক্ষিণ কলকাতার এক প্রাক্তন তৃণমূল কাউন্সিলরের কথায়, ‘‘বিজেপি দক্ষিণ কলকাতায় সাংগঠনিক ভাবে দুর্বল। আমরা দেখেছি, প্রার্থী দেবশ্রী চৌধুরীকে নিয়ে প্রচারে বেরোলেও খুব বেশি লোক হচ্ছে না। এমনকি, বিজেপির দলীয় কর্মীদের মধ্যে উৎসাহ নেই। দক্ষিণ কলকাতা জেলা বিজেপি নেতৃত্বের মধ্যে একটা গা-ছাড়া ভাব লক্ষ করছি। কিন্তু তা সত্ত্বেও আমরা আমাদের ১০০ শতাংশ দিয়ে ভোটে লড়াই করব, যাতে প্রমাণ করা যায়, গত বার যা হয়েছিল তা কাকতালীয়।’’
উল্লেখ্য, গত লোকসভা নির্বাচনে মুখ্যমন্ত্রীর কেন্দ্র ভবানীপুরে ৬৩, ৭০, ৭১, ৭২, ৭৩, ৭৪ ওয়ার্ডে জিতেছিল বিজেপি। মেয়রের বিধানসভা কেন্দ্র কলকাতা বন্দরের ৭৬, ৭৯, ৮০ নম্বর ওয়ার্ডে এগিয়ে ছিল বিজেপি। প্রয়াত মন্ত্রী সুব্রত মুখোপাধ্যায়ের কেন্দ্র বালিগঞ্জে ৬৮, ৬৯, ৮৫, বিদ্যুৎমন্ত্রী শোভনদেব চট্টোপাধ্যায়ের কেন্দ্র রাসবিহারীতে ৮১, ৮৪, ৮৬, ৮৭, ৯৩, প্রাক্তন মেয়র শোভন চট্টোপাধ্যায়ের কেন্দ্র বেহালা পূর্বের ১১৬,১১৭,১২৪, বর্তমানে জেলবন্দি মন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের বেহালা পশ্চিম বিধানসভার ১১৮, ১১৯ ও ১৩২, মন্ত্রী জাভেদ খানের কসবা বিধানসভার ৬৭, ১০৭ ও ১০৮ নম্বর ওয়ার্ডে জিতেছিল বিজেপি। তাই এই ফল থেকে শিক্ষা নিয়ে এ বার অনেক আগেই উদ্যোগী হচ্ছে মমতার দল।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy