(বাঁ দিকে) অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। শুভেন্দু অধিকারী (ডান দিকে)। — ফাইল চিত্র।
সন্দেশখালিকাণ্ডের স্টিং ভিডিয়ো নিয়ে তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় এবং ভোটকুশলী সংস্থা আইপ্যাকের দিকেই আঙুল তুললেন রাজ্যের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। তাঁর দাবি, এর নেপথ্যে রয়েছে পুলিশও। কারণ হিসাবে শুভেন্দুর মত, সন্দেশখালিতে তৃণমূল শূন্য। সেখানে তৃণমূল মানেই পুলিশ। শুভেন্দুর হুঁশিয়ারি, সন্দেশখালিতে এ বার সাধারণ মানুষই আন্দোলনের পথে যাবেন। সোমবার বিকেলের মধ্যেই সে সংক্রান্ত খবর পাওয়া যাবে বলেও দাবি করেন বিরোধী দলনেতা।
সন্দেশখালিকাণ্ডে প্রকাশ্যে আসা দু’টি স্টিং ভিডিয়ো নিয়ে তোলপাড় রাজ্য রাজনীতি। কোনও ভিডিয়োর সত্যতাই যাচাই করেনি আনন্দবাজার অনলাইন। দু’টি ভিডিয়োতেই পদ্মশিবিরের স্থানীয় নেতা গঙ্গাধর কয়ালকে যা বলতে শোনা গিয়েছে, তা অস্বস্তিকর পরিস্থিতি তৈরি করেছে বিজেপি এবং শুভেন্দুর পক্ষে। শুভেন্দু এই নিয়ে পাল্টা অভিষেকের দিকেই আঙুল তুলেছেন। পাশাপাশি, এ-ও দাবি করেছেন, সন্দেশখালিতে তৃণমূলকে সাহায্য করেছে পুলিশ। বসিরহাট পুলিশ জেলার সুপার এবং বসিরহাটের এসডিপিও-র দিকে সরাসরি আঙুল তুলেছেন তিনি। শুভেন্দুর কথায়, ‘‘তৃণমূল ওখানে শূন্য। তৃণমূল মানে পুলিশ, পুলিশ মানে তৃণমূল। এই যে আইপ্যাককে দিয়ে পুরো ভিডিয়ো ষড়যন্ত্র হয়েছে, এটা যেমন ভাইপোর মস্তিষ্কপ্রসূত, তেমনই নেপথ্যে রয়েছেন বসিরহাটের এসপি মেহেদি হাসান, এসডিপিও আমিনুল। দু’জনেই জড়িত।’’
সন্দেশখালি নিয়ে জাতীয় মহিলা কমিশনের চেয়ারম্যান রেখা শর্মার বিরুদ্ধে নির্বাচন কমিশনে অভিযোগ জানিয়েছে তৃণমূল। রবিবার দিল্লির জাতীয় নির্বাচন কমিশনের দফতরে তৃণমূলের তরফে এই অভিযোগ দায়ের করেছেন দলের রাজ্যসভার দলনেতা ডেরেক ও’ব্রায়েন। অভিযোগ, ভোটের সময় জাতীয় মহিলা কমিশনের সদস্যেরা বিজেপির সঙ্গে হাত মিলিয়ে ‘ষড়যন্ত্র’ করছেন। অবিলম্বে নির্বাচন কমিশনকে এ বিষয়ে হস্তক্ষেপ করার দাবি জানানো হয়েছে। তৃণমূলের দাবি, সঙ্গে রয়েছেন স্থানীয় বিজেপি নেত্রী পিয়ালি দাস। এই প্রসঙ্গে শুভেন্দু বলেন, ‘‘নির্বাচন কমিশনকে বলব, সন্দেশখালির যে মা-বোনদের জন্য প্রধানমন্ত্রী লড়াই করছেন, তাঁদের বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলায় কমিশন হস্তক্ষেপ করুক।’’
সন্দেশখালির তৃণমূল বিধায়ক সুকুমার মাহাতোর দিকেও আঙুল তুলেছেন শুভেন্দু। তিনি বলেন, ‘‘সুকুমার মাহাতো চোর। সকলে জানেন। ওর পিএ (আপ্তসহায়ক) কত টাকা তুলেছেন চাকরি দেওয়ার নাম করে, তার তালিকা রয়েছে আমার কাছে। এ সব যত করবে, বিচ্ছিন্ন হবে।’’ তিনি এ-ও দাবি করেছেন, সন্দেশখালিতে বিজেপির বিরুদ্ধে অভিযোগ উঠলেও জিতবেন তাঁরাই। তাঁর কথায়, ‘‘শুধু সন্দেশখালি থেকে এক লক্ষ লিড দেব। লিখে রাখুন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়, আপনার কপালে কী দুঃখ রয়েছে, দেখে রাখুন!’’
সন্দেশখালিতে মহিলারা যে ধর্ষণের অভিযোগ তুলেছিলেন, প্রথম ভিডিয়োতে সেই নিয়েই মুখ খুলতে শোনা গিয়েছিল বিজেপির মণ্ডল সভাপতি গঙ্গাধরকে। তিনি দাবি করেছিলেন, ‘টাকার বিনিময়ে’ অভিযোগ করা হয়েছিল। নেপথ্যে শুভেন্দু ছিলেন বলেও গঙ্গাধরকে বলতে শোনা যায়। শনিবার রাতে প্রকাশিত দ্বিতীয় ভিডিয়োতে ভোট করাতে কত অস্ত্র এবং মদের খরচ জোগান দিতে হবে, সেই নিয়ে ছিল আলোচনা। সন্দেশখালির আন্দোলনকারী মহিলাদের ‘সাহায্য’ করার দাবিও তুলেছিলেন গঙ্গাধর। রবিবার রাতে প্রকাশ্যে আসে তৃতীয় একটি ভিডিয়ো। স্টিং নয়। ভিডিয়োয় এক পুরুষকণ্ঠ দাবি করছেন, তাঁর মা-কে স্থানীয় বিজেপি নেত্রী পিয়ালি (দাস) সন্দেশখালি থানায় যেতে বলেন। যখন জাতীয় মহিলা কমিশনের চেয়ারপার্সন রেখা থানায় উপস্থিত। অভিযোগ, সাদা কাগজে সই করানো হয়। এবং সাত দিন পর ‘ধর্ষণ মামলা’ জানার পর অভিযোগকারিণী ভেঙে পড়েন। এই ভিডিয়োটি তৃণমূল প্রকাশ করেছে। এই আবহে ধর্ষণের ‘অসত্য অভিযোগ’ তুলে নিতে চাওয়ায় সন্দেশখালির এক বধূকে বাড়িতে গিয়ে হুমকি দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে বিজেপির বিরুদ্ধে। অভিযোগ করেছে বধূর পরিবার। ওই পরিবারের দাবি, বিজেপির বসিরহাটের প্রার্থী রেখা পাত্র নিজে গিয়ে হুমকি দিয়ে এসেছেন ওই মহিলাকে। বলা হয়েছে, অভিযোগ তুলে নিলে বিজেপি আর তাঁদের দায়িত্ব নেবে না। এই আবহে শুভেন্দু পাল্টা পুলিশের দিকেই আঙুল তুলেছেন।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy