Advertisement
Back to
Lok Sabha Election 2024

নির্ধারক শক্তি কি বাম-ভোট

তৃণমূলের আত্ম-বিশ্লেষণ ছিল, হারের পিছনে আছে দলের অন্তর্দ্বন্দ্ব। গত বছর পঞ্চায়েতে ভোটেও যার প্রবল প্রভাব ছিল।

—প্রতীকী চিত্র।

—প্রতীকী চিত্র।

শুভ্রপ্রকাশ মণ্ডল
কাশীপুর শেষ আপডেট: ২১ মে ২০২৪ ১০:০২
Share: Save:

নিজ-ভূমেই ‘কঠিন’ লড়াইয়ের সামনে তৃণমূলের জেলা সভাপতি সৌমেন বেলথরিয়া।গত লোকসভা ভোট থেকে বিধানসভা ভোটে সৌমেনের নিজের এলাকা কাশীপুর বিধানসভা কেন্দ্রে বিজেপি এগিয়ে থেকেছে। এ বার কি বিজেপির রথের চাকা থামাতে পারবেন সৌমেন, এই ভোটে সেটাই চ্যালেঞ্জ তৃণমূল জেলা সভাপতির। অন্য দিকে, বিজয় কেতন ওড়াতে প্রস্তুতিতে ফাঁক রাখছে না গেরুয়া শিবিরও। তলে তলে বাড়ছে সিপিএমও। তাই নজরে এ বার কাশীপুর।

বাম আমলে এই বিধানসভা সিপিএমের শক্ত ঘাঁটি ছিল। রাজ্যে পালাবদলের পরে তেমনই শক্ত ঘাঁটি হয় তৃণমূলের। কিন্তু গত লোকসভা ভোট থেকে কাশীপুরের রং গেরুয়া।

তৃণমূলের আত্ম-বিশ্লেষণ ছিল, হারের পিছনে আছে দলের অন্তর্দ্বন্দ্ব। গত বছর পঞ্চায়েতে ভোটেও যার প্রবল প্রভাব ছিল। যে কারণে হুড়া ব্লকের সাতটি পঞ্চায়েতের মধ্যে (হুড়া ব্লকের ১০টি পঞ্চায়েতের মধ্যে ৭টি কাশীপুর বিধানসভার অন্তর্ভুক্ত) মাত্র দু’টিতে জিতেছে তৃণমূল। বাকি পাঁচটি পায় বিজেপি।

পাড়া-র পাশাপাশি তাই কাশীপুর বিধানসভার দায়িত্ব সৌমেনের উপরে সঁপেছেন দলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। সূত্রের দাবি, যে সব পঞ্চায়েতে দলের দ্বন্দ্ব ভোগাতে পারে, সেখানে ধরে ধরে বৈঠক করছেন সৌমেন। পাশে দাঁড়িয়েছেন দলের বরিষ্ঠ নেতা সুজয় বন্দ্যোপাধ্যায়। তাতেও অবশ্য নানা অঞ্চলে ক্ষমতাসীন গোষ্ঠীর বিরুদ্ধে বিক্ষুব্ধদের অসন্তোষের ক্ষত পুরোপুরি সারেনি।

তবে সৌমেনের দাবি, ‘‘ধারাবাহিক ভাবে সবার সঙ্গে আলোচনার পরে ছোটখাটো ভুল বোঝাবুঝি, ক্ষোভ-বিক্ষোভ মিটেছে। সবাই মাঠে নেমেছেন। আগের ভোটের ফল অতীত। লোকসভা ভোটে আমাদের প্রার্থী শান্তিরাম মাহাতো কাশীপুর থেকে ভাল ‘লিড’ পাবেন।’’

কাশীপুর ব্লকের ১৩টি অঞ্চলের মধ্যে পাঁচটিতে তৃণমূলের সংগঠন অত্যন্ত পোক্ত।চারটি পঞ্চায়েতে বিজেপির অবস্থা তুলনামূলক ভাল। বাকি চারটিতে অবস্থা কার্যত সমানে সমানে।

তবে রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকদের একাংশের মতে, কাশীপুর ব্লকে লড়াইটা শুধু বিজেপি ও তৃণমূলের মধ্যে সীমাবদ্ধ থাকছে না। এখানে বিধানসভা ভোট, পঞ্চায়েত ভোটে ধারাবাহিক ভাবে বামেদের ভোট বাড়তে শুরু করেছে। ফলে বামের ভোট ‘রামে’ যাওয়ার প্রবণতা যত কমবে, ততই আখেরে তাদের সুবিধা হবে বলে আশায় রয়েছে তৃণমূল।

ঘটনা হল, কাশীপুর সিপিএমের নানা সভা-সমিতিতে ভিড়ের ছবি দেখা যাচ্ছে। বিশেষ করে কাশীপুর এলাকায় বামেদের কর্মসূচিতে যে ভাবে তরুণ প্রজন্মের একাংশ ভিড় জমাচ্ছে তা দেখে উজ্জীবিত বাম-কংগ্রেস মঞ্চ।

পাশাপাশি কাশীপুর বিধানসভায় ভোটের ফারাক গড়ে দিতে পারে আদিবাসী সম্প্রদায়ের ভোট। কমবেশি ২৫ শতাংশ আদিবাসী ভোট আছে কাশীপুরে। বিজেপির বিধায়ক কমলাকান্ত হাঁসদা আদিবাসী সম্প্রদায়ের। অতীতে আদিবাসী সম্প্রদায়ের বড় অংশ তৃণমূলের থেকে মুখ ফিরিয়ে নিয়েছিল। সেই অংশকে কমলাকান্ত ধরে রাখতে পারেন, না কি সৌমেন ফেরাতে পারেন, সে দিকেও নজর রাজনৈতিক মহলের।

অন্যদিকে হুড়া ব্লকে তৃণমূলের মাথাব্যথা বারবার প্রকাশ্যে আসা দলের অর্ন্তদ্বন্দ্ব। তা মেটাতে জেলা শীর্ষ নেতারা একাধিকবার স্থানীয় নেতাদের সঙ্গে বৈঠকে বসেছেন। সূত্রের দাবি, হুড়া ব্লক সভাপতির দায়িত্ব পেয়ে প্রসেনজিৎ মাহাতো সবপক্ষকে এককাট্টা করার চেষ্টা করছেন। পাশে রয়েছেন ব্লকের আর এক বর্ষীয়ান নেতা সুভাষ মাহাতোও। তাঁদের যুগলবন্দি দলের চিন্তা দূর করতে পারেন কি না, সে দিকেও অনেকের নজর।

প্রসেনজিতের দাবি, ‘‘করোনা অতিমারি কিংবা অন্য বিপদে আপদে আমরাই মানুষের পাশে থেকেছি। রয়েছে রাজ্য সরকারের একাধিক প্রকল্পও। তাই মানুষের আশীর্বাদ আমরা পাবই।’’ পাল্টা বিজেপির জেলা সম্পাদক আব্দুল আলিম আনসারির দাবি, ‘‘মানুষ এখন অনেক সচেতন। তাঁরা জানেন, এটা দেশ গড়ার নির্বাচন। সেই কাজে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর বিকল্প কেউ নেই। তাই ভোট পড়বে পদ্মফুলেই।’’ কাশীপুরে কার হাসি, জানা যাবে ৪ জুন।

অন্য বিষয়গুলি:

Lok Sabha Election 2024 Kashipur TMC
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy