Advertisement
Back to
Potato Price

চাহিদা-জোগানে ফারাক, আরও কি চড়বে আলু

আলু-ব্যবসায়ী, হিমঘর মালিক ও সংরক্ষণকারীরা জানাচ্ছেন, হিমঘরে আলু ঢোকার সময় বাজারে জলদি চাষের আলু (পোখরাজ, এস-ওয়ান) বাজারে ছিল।

—প্রতীকী চিত্র।

—প্রতীকী চিত্র।

সৌমেন দত্ত
বর্ধমান শেষ আপডেট: ২৮ মে ২০২৪ ০৮:৫২
Share: Save:

গত কয়েকদিন ধরে আলুর দাম কেজি প্রতি ২৭-২৮ টাকায় ঘোরাফেরা করছে। কিন্তু, ভোট-পর্ব মিটলে এই দাম আরও চড়বে না তো, এমন আশঙ্কার শরিক আলু ব্যবসায়ীরাও।

হিমঘরে আলু ঢোকার সময় বাজারে জ্যোতি আলুর কেজি ছিল ১৬-১৮ টাকা। হিমঘর বন্ধ হওয়ার পরে সেই দাম কেজিতে বেড়ে হয় ২২ টাকা। দাম বাড়তে থাকায় নির্দিষ্ট সময়ের ১৫ দিন আগে এপ্রিলের তৃতীয় সপ্তাহতেই হিমঘর খুলে যায়। তবে একমাস পেরিয়ে যাওয়ার পরেও আলুর দাম কমা তো দূর, বেড়েই চলছিল।

আলু-ব্যবসায়ী, হিমঘর মালিক ও সংরক্ষণকারীরা জানাচ্ছেন, হিমঘরে আলু ঢোকার সময় বাজারে জলদি চাষের আলু (পোখরাজ, এস-ওয়ান) বাজারে ছিল। তাতে আলুর দাম কম ছিল। হিমঘর বন্ধ হওয়ার সময় ওই প্রজাতির আলু বাজারে কমতে থাকে, জ্যোতি আলুর চাহিদা বাড়ে। সেই কারণে দামও ঊধর্বমুখী ছিল। খুচরো আলু ব্যবসায়ীদের দাবি, হিমঘর খোলার পরে আলুর দাম কমবে বলে মনে হয়েছিল। কিন্তু দেখা যাচ্ছে সংরক্ষণকারীরা আলু বাজারজাত করতে চাইছেন না। আরও লাভের আশায় আলু হিমঘরে রেখে দিচ্ছেন। ফলে, উত্তরপ্রদেশ-হিমাচল প্রদেশ থেকে এ রাজ্যে আলু আনতে হচ্ছে। তাতেই কেজিতে ৫-৬ টাকা দাম বেড়ে গিয়েছে। কৃষি দফতর সূত্রে জানা যায়, চলতি মরসুমের শুরুতেই বৃষ্টিতে প্রায় ৩০ হাজার হেক্টর আলু চাষের জমির ক্ষতি হয়েছে। একটা বড় অংশে দ্বিতীয় বারের জন্যে আলু চাষ করতে হয়েছে। তাতে চলতি বছর জেলায় আলু চাষের এলাকা কমে হয়েছে ৬৩ হাজার হেক্টরের মতো। চাষিদের দাবি, জেলায় গড়ে বিঘা প্রতি ৯০-১০০ বস্তা (৫০ কেজি) আলু উৎপাদন হয়। এ বছর বৃষ্টি, ধসা ও আবহাওয়ার খামখেয়ালিপনায় উৎপাদন অন্তত ৩৫% কম হয়েছে। গুণগত মানও খুব ভাল নয়।

কৃষি বিপণন দফতর সূত্রে জানা যায়, গত বছর জেলায় ১১ লক্ষ ৩০ হাজার ৫৫৮ টন আলু হিমঘরজাত হয়েছিল। এ বার উৎপাদন মার খাওয়ায় প্রায় ২ লক্ষ টন কম মজুত হয়েছে। ৯ লাখ ৪৩ হাজার ৫২৯ টন আলু হিমঘরে রেখেছেন সংরক্ষণকারীরা। কৃষি বিপণন দফতরেরও দাবি, যথেষ্ট আলু হিমঘর থেকে বাজারে আসছে না। এখনও পর্যন্ত ৫.৯% শতাংশ আলু হিমঘর থেকে বাইরে এসেছে। দফতরের কর্তারা মনে করছেন, ভিন্ রাজ্যে আলুর চাহিদা নেই। আবার অন্য রাজ্যের আলু এ বঙ্গে চলে আসায় হিমঘরের আলু বের করার ‘সাহস’ দেখাচ্ছেন না সংরক্ষণকারীরা। তাঁদের দাবি, একে আলুর গুণগত মান খারাপ। তার উপর জমি থেকেই প্রতি বস্তা (৫০ কেজি) আলু কিনতে হয়েছে ৪৫০ থেকে ৭৭০ টাকা পর্যন্ত। হিমঘরে আলু রাখতে গিয়ে অন্য বছরের চেয়ে বেশি খরচ হয়েছে। এরপরে আলুর গুণগত মান খারাপ থাকার ‘ভাল’, ‘মাঝারি’, ‘কাটপিস’, ‘ক্যাঁট’— চার রকমভাবে আলু বিক্রি করতে হচ্ছে। এরপরে অন্তত ৮% আলু হিমঘরে শুকিয়ে যাচ্ছে কিংবা নষ্ট হচ্ছে। সব মিলিয়ে প্রতি কেজিতে আলু রাখতেই খরচ হচ্ছে প্রায় ২৪ টাকা।

‘প্রগতিশীল আলু ব্যবসায়ী’ সংগঠনের জেলা সম্পাদক তথা রাজ্যের সভাপতি জগবন্ধু মণ্ডলের কথায়, “সংরক্ষণকারীরা কিন্তু এখনও পর্যন্ত আলু বাজারজাত করে লাভের মুখ দেখেননি।” সংরক্ষণকারীদের দাবি, কয়েক দিন আগেও প্রতি বস্তা আলু ১১৭০ টাকায় বিক্রি হচ্ছিল। সম্প্রতি দাম কিছু কমেছে। বিপণন দফতরের কর্তার দাবি, “পূর্ব বর্ধমানে আলুর দর ২৬ টাকা রাখা হয়েছে। এর চেয়ে দাম বাড়লেই টাস্ক ফোর্স অভিযান চালাবে।’’

অন্য বিষয়গুলি:

Bardhaman
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy