শ্যামবাজারের রোড-শোয়ে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। ছবি: পিটিআই।
লোকসভা নির্বাচনের শেষ দফায় প্রচারে রাজ্যে এসে প্রধানমন্ত্রী হিসেবে প্রথম বার কলকাতায় রোড-শো করলেন নরেন্দ্র মোদী। সারদা দেবী, সুভাষচন্দ্র বসু ও স্বামী বিবেকানন্দকে ছুঁয়ে এক দিকে তিনি যেমন বাঙালি অস্মিতাকে ছোঁয়ার চেষ্টা করেছেন, তেমনই হিন্দুত্বের হাওয়া তোলারও চেষ্টা করেছেন বলে মনে করছে রাজনৈতিক শিবিরের একাংশ।
অশোকনগর ও বারুইপুরে দলীয় প্রার্থীর সমর্থনে সভা শেষ করে মিনিট দশেকের জন্য রাজভবনে বিশ্রাম। তার পরে বাগবাজারে সারদা দেবীর বাড়িতে শ্রদ্ধা জানিয়ে শ্যামবাজার পাঁচ মাথার মোড়ে সুভাষচন্দ্র বসুর মূর্তিতে শ্রদ্ধা অর্পণ করেন মোদী। সন্ধ্যা সাড়ে ৭টা নাগাদ সেখান থেকে রোড-শো শুরু করেন প্রধানমন্ত্রী। দু’কিলোমিটার পথ পেরিয়ে সিমলা স্ট্রিটে স্বামী বিবেকানন্দের বাড়িতে যখন পৌঁছেছেন, তখন সওয়া ৮টা। সেখানে গিয়ে তিনি স্বামী বিবেকানন্দকে শ্রদ্ধা জানান। সম্প্রতি মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ‘সাধু’ সংক্রান্ত মন্তব্যের জেরে বিতর্ক তৈরি হয়েছিল। রাজনৈতিক শিবিরের ব্যাখ্যা, রাজ্যে এসে মঙ্গলবার সারদা দেবী ও বিবেকানন্দের বাড়ি ছুঁয়ে তার পাল্টা বার্তা দেওয়ার চেষ্টাই মোদী করেছেন।
রোড-শো’য় তাঁর মোদীর সঙ্গে গাড়িতে ছিলেন বিজেপির রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদার, বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী, কলকাতা উত্তর ও দমদমের দুই দলীয় প্রার্থী তাপস রায় ও শীলভদ্র দত্ত। রোড-শো শেষে তাপস বলেন, ‘‘আমি কৃতজ্ঞ। এই প্রথম তিনি রোড-শো করলেন। তা-ও আমার জন্য।’’ রোড-শো’র গোটা পথের দু’দিকে ছিল চোখে পড়ার মতো ভিড়। তাদের ছোড়া ফুলের পাপড়িতে রাস্তার চেহারা বদলে যায়। এক সময়ে ভিড়ের চাপে ভেঙে যায় ব্যারিকেড। কোনও মতে জনতাকে ঠেকাতে পুলিশ-কর্মীদের কালঘাম ছুটে যায়।
বিজেপির পরিকল্পনা ছিল, মোদীর যাত্রাপথে ৪০টি মঞ্চ করে ছৌ নাচ থেকে সাওতালি নৃত্য, রবীন্দ্র ও নজরুল সঙ্গীতের মাধ্যমে বাংলার কৃষ্টি, সংস্কৃতির নিদর্শন রাখা। কিন্তু পুলিশি নিষেধাজ্ঞার কারণে শেষ পর্যন্ত সব মঞ্চ করা সম্ভব হয়নি। তবে রাস্তাতেই মহিলা ঢাকিরা ঢাক বাজান, সাঁওতালি নৃত্য পরিবেশিত হয়। যন্ত্রে বেজে ওঠে রবীন্দ্রসঙ্গীতও। কিন্তু তা ছিল সাময়িক। বাকি সময় জুড়ে ছিল হিন্দি ভাষায় রাম গান ও রামের নামে স্লোগান। সেই সঙ্গে অন্যান্য হিন্দু দেব-দেবী নিয়ে গানবাজনা। গোটা কর্মসূচিতে মাত্র কয়েক মিনিট প্রাক্তন বিজেপি সাংসদ বাবুল সুপ্রিয়ের গাওয়া ‘এই তৃণমূল আর না’ গানটি ছাড়া ছিল না কোনও রাজনৈতিক স্লোগান কিংবা বিপক্ষ দলকে রাজনৈতিক আক্রমণ। পুরো কর্মসূচিটি কেন্দ্রীভূত ছিল ‘রাম নামে’র মাধ্যমেই।
উত্তর কলকাতার ভোটারদের একটি বড় অংশ হিন্দিভাষী। সারদা দেবী, বিবেকানন্দের বাড়ি হয়ে মোদীর এ দিনের কর্মসূচির মাধ্যমে বাঙালি আবেগের পাশাপাশি হিন্দিভাষীদের মন ছোঁয়ারও চেষ্টা হয়েছে বলে বিজেপি সূত্রের ব্যাখ্যা। তবে প্রকাশ্যে অন্তত বিজেপির নজর ছিল বাঙালি মনেই। কর্মসূচি জুড়ে ছিল মোদী সরকারের বিভিন্ন জনমুখী প্রকল্পের বিশাল বিশাল হোডিং। যার তলায় লেখা ছিল ‘বাঙালির মনে মোদী’।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy