Advertisement
Back to
Lok Sabha Election 2024

‘একাধিপত্যে’ কি বাড়ছে ফাটল, প্রশ্ন তৃণমূলেও

বামেদের কাছে বেশ কয়েক বার হারার পরে ২০০৬ সালে পূর্বস্থলী দক্ষিণ কেন্দ্রে প্রথম জেতেন স্বপন দেবনাথ। তার পর থেকে পূর্বস্থলী দক্ষিণ কেন্দ্র তাঁরই খাসতালুক।

—প্রতীকী চিত্র।

—প্রতীকী চিত্র।

কেদারনাথ ভট্টাচার্য
পূর্বস্থলী শেষ আপডেট: ০৩ মে ২০২৪ ০৮:১৬
Share: Save:

তৃণমূল তখন সবে মাথা তুলছে। ১৯৯৮ সালে পূর্বস্থলী ১ পঞ্চায়েত সমিতিতে জোট বেঁধে ক্ষমতায় এসেছিল দুই ফুল। সমুদ্রগড়, নসরতপুরের মতো বেশ কিছু পঞ্চায়েতেও জোট ছিল বিজেপি-তৃণমূলের। ২০০৩ থেকে অবশ্য পথ একেবারেই আলাদা হয়ে যায়। বামেদের আধিপত্য কমার পরে সেই পূর্বস্থলীতে পদ্মই প্রতিপক্ষ তৃণমূলের।

বামেদের কাছে বেশ কয়েক বার হারার পরে ২০০৬ সালে পূর্বস্থলী দক্ষিণ কেন্দ্রে প্রথম জেতেন স্বপন দেবনাথ। তার পর থেকে পূর্বস্থলী দক্ষিণ কেন্দ্র তাঁরই খাসতালুক। দলের একাংশের দাবি, মাঠে-ঘাটে মন্ত্রীর দাপট এতটাই যে বিরোধীদের তেমন কর্মসূচিও দেখা যায় না। যদিও বিজেপির দাবি, মন্ত্রীর রাশ এ বার কমছে। দলের ‘দ্বন্দ্ব’, তাঁতশিল্পীদের দুর্দশার মতো নানা বিষয়ে তাঁর উপর আস্থা হারাচ্ছেন মানুষ। তৃণমূল অবশ্য এ সব মানতে নারাজ।

এই কেন্দ্রের মধ্যে রয়েছে ১১টি পঞ্চায়েত। পূর্বস্থলী ১ ব্লকে রয়েছে ৫টি এবং কালনা ১ ব্লকে রয়েছে ৬টি পঞ্চায়েত। ২০১৬ সালে এই আসনে তৃণমূল এগিয়েছিল ৩৭,৬৬৬ ভোটে। ২০১৯ সালের লোকসভা ভোটে ২১,৯০৮ ভোটে এগিয়ে থাকে তৃণমূল। ২০২১ সালে বিধানসভায় তৃণমূলের ব্যবধান কিছুটা কমে দাঁড়ায় ১৭,৪১০। তবে সংগঠন, ভোট পরিচালনা থেকে দলের কর্মসূচি— সবেই স্বপনই শেষ কথা। সারা বছর বিভিন্ন কর্মসূচিতে এলাকায় ছুটতে দেখা যায় তাঁকে। খালবিল উৎসব, কৃষি মেলা, শিশুদের, বৃদ্ধাশ্রমের দুর্গাপুজোর মতো অরাজনৈতিক কর্মসূচিও করেন দু’দশক ধরে। তৃণমূল সূত্রে জানা গিয়েছে, কালনা ১ ব্লক সভাপতি শান্তি চালের সঙ্গে মন্ত্রীর অনুগামীদের ‘দ্বন্দ্ব’ রয়েছে।

সম্প্রতি দলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় কালনায় বৈঠকে এসে এক সঙ্গে কাজ করার বার্তাও দেন তাঁদের। আপাতত বাড়ি বাড়ি সরকারি প্রকল্পের প্রচার, চাটাই বৈঠক, স্বনির্ভর গোষ্ঠীর সদস্যদের নিয়ে বৈঠকে জোর দিয়েছেন তাঁরা। তবে মন্ত্রীর ‘একাধিপত্য’ অনেকেই মানতে পারছেন না বলে দলের একাংশের দাবি। যদিও সে কথা উড়িয়ে পূর্বস্থলী ১ ব্লকের তৃণমূল নেতা দিলীপ মল্লিক বলেন, ‘‘মন্ত্রীর পরামর্শে ভোটের প্রচার-সহ যাবতীয় কাজ করা হচ্ছে।’’

এই কেন্দ্রের বড় অংশ তাঁতশিল্পের উপরে নির্ভরশীল। বিরোধীদের দাবি, করোনা পরিস্থিতির পরে বহু তাঁতঘরে তালা পড়েছে। যন্ত্রচালিত তাঁতে বিনিয়োগ করেও লাভের মুখ দেখেননি অনেকে। শাড়ি বুনে লাভ না হওয়ায় বহু শিল্পী ভিন্ রাজ্যে নানা কাজে গিয়েছেন। গ্রামে ঘুরে ভাঙাচোরা জিনিস কেনাবেচার কাজেও নেমেছেন অনেকে। কৃষি অধ্যুষিত এলাকাগুলিতেও সারের দাম বৃদ্ধি, ফসলের লাভজনক দর না পাওয়া নিয়ে ক্ষোভ রয়েছে। ধাত্রীগ্রাম, নসরৎপুর, সমুদ্রগড়ের মতো পঞ্চায়েতে বিজেপির সংগঠন বরাবর ভাল। গত লোকসভা ভোটে বিজেপি ৪১ শতাংশ ভোট পেয়েছিল। বিজেপি প্রার্থী অসীম সরকার কবিগান গেয়ে সভা করছেন সেখানে।

এই কেন্দ্রের বিজেপির আহ্বায়ক তরুণ মল্লিকের দাবি, ‘‘এলাকার বিধায়ক তথা মন্ত্রীর প্রতি মানুষের আশা-ভরসা ছিল বলে এতদিন এই কেন্দ্রে তৃণমূল জিতেছে। এখন আশাভঙ্গ হয়েছে।’’ বর্ধমান পূর্ব কেন্দ্রের সিপিএম প্রার্থী নীরব খাঁয়েরও দাবি, ‘‘তাঁত শিল্প পূর্বস্থলীতে ধুঁকছে। বহু শিল্পী পরিযায়ী শ্রমিক হয়ে গিয়েছেন। ফসলের দাম নেই। এর জন্য কেন্দ্র ও রাজ্য সরকার দায়ী।’’

স্বপন দেবনাথ অবশ্য বিচলিত নন। কর্মীদের প্রতি তাঁর বার্তা, ‘‘সরকার যে প্রকল্প করেছে, তা নিয়ে বাড়ি-বাড়ি গেলেই সুফল মিলবে।

অন্য বিষয়গুলি:

Lok Sabha Election 2024 Purbasthali TMC BJP
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy