—প্রতীকী চিত্র।
প্রথম থেকে প্রার্থী নির্বাচন নিয়ে টালবাহানা। বেশ কিছুটা দেরি করে প্রাক্তন আইপিএসকে প্রার্থী মনোনীত করলেও, নথিগত সমস্যার কারণে তাঁর মনোনয়ন বাতিল হওয়া। শেষ মুহূর্তে নতুন করে প্রার্থী ঠিক করে মনোনয়ন করালেও, প্রচারে পিছিয়ে থাকা, ঢিলেঢালা সংগঠন। বীরভূম আসনে কি অনেকটা পিছিয়ে গেল দল, ভোটের ঠিক আগে এই প্রশ্ন ঘুরছে বীরভূম বিজেপির অন্দরে।
বিজেপি নেতা-কর্মীদের এক বড় অংশ বলছেন, এখনও দেওয়ালে দেওয়ালে রয়েছে বাতিল হয়ে যাওয়া প্রার্থী দেবাশিস ধরের নাম। বীরভূমে লোকসভা কেন্দ্রে নতুন প্রার্থী দেবতনু ভট্টাচার্যের নামে দেওয়াল লিখন ও ছাপানো পোস্টার সাঁটানো হয়েছে। কিন্তু, সেই এলাকাতেও দেবাশিসের নামে দেওয়াল লিখন রয়ে গিয়েছে। ফলে ভোটারদের মধ্যে বিভ্রান্তি বাড়ার আশঙ্কায় কাঁটা কর্মীরা। তাঁদের কথায়, ‘‘নতুন প্রার্থী তো ভোটারদের সঙ্গে পরিচিত হওয়ার সুযোগটুকুও সে-ভাবে পেলেন না!’’
বিজেপির এই বিভ্রান্তির সুযোগ নিতে ছাড়ছে না তৃণমূল কংগ্রেস। বুধবার দুবরাজপুর পথিকৃত ময়দানের নির্বাচনী সভা থেকে পুরমন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম জনতার উদ্দেশে প্রশ্ন করেন, ‘‘আচ্ছা ওদের (বিজেপি) প্রার্থীটা কে? এক পুলিশ অফিসার দাঁড়িয়েছে নাকি! ওই শীতলখুচি।’’ জনতা উত্তর দেয়, ‘‘না তিনি নন, দেবতনু।’’ তার পরেই ফিরহাদের কটাক্ষ, ‘‘দেওয়ালে দেখি একটা, পোস্টারে দেখি একটা, তা হলে প্রার্থী কে। ভারী ঝামেলা!’’
এরই মধ্যে বিজেপির বিড়ম্বনা বাড়িয়ে বৃহস্পতিবার সিউড়ি শহরে বর্তমান প্রার্থী নিয়ে বিভ্রান্তিকে নিশানা করে দলের নেতা কালোসোনা মণ্ডলের নামাঙ্কিত পোস্টার ছড়িয়ে পড়ায় বিতর্ক তৈরি হয়েছে। তাতে লেখা ছিল, ‘বীরভূমের স্বার্থে বিজপির বিরুদ্ধে গেলাম।’ পাশাপাশি অভিযোগ তোলা হয়েছে, বীরভূম তাচ্ছিল্যের শিকার। কালোসোনা নিজে এমন পোস্টার দেওয়ার অভিযোগ অস্বীকার করে দলের একাংশের বিরুদ্ধে যড়যন্ত্রের অভিযোগ তুলেছেন। কিন্তু, পোস্টার-কাণ্ডে দলের বিভ্রান্তি ও দ্বন্দ্ব নতুন করে সামনে এসেছে।
বিজেপি নেতা-কর্মীদের একাংশ আড়ালে জানাচ্ছেন, তৃণমূলের প্রার্থী প্রচারে অনেক এগিয়ে। অথচ এই বীরভূম আসনে বিজেপি-র জেতার সম্ভাবনা যথেষ্টই ছিল। কারণ হিসাবে তাঁদের দাবি, এ বারে কংগ্রেসের প্রার্থী মিল্টন রশিদ আছেন। ফলে, সংখ্যালঘু ভোট ভাগাভাগি হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। অনুব্রত মণ্ডল জেলে রয়েছেন। প্রধানমন্ত্রী থেকে শুরু করে তারকা নেতারা প্রচার করেছেন জেলায়। কিন্তু, দিনের শেষে প্রার্থী নিয়ে এই বিভ্রান্তিতে সেই সুযোগটাই হয়তো কাজে লাগানো যাবে না বলে মনে করছেন বিজেপি-র ওই কর্মীরা। তাঁদের প্রশ্ন, ‘‘দেবতনুই যদি প্রার্থী, তা হলে আগে থেকে কেন ঘোষণা হল না? দেবাশিস ধরের ক্ষেত্রেও কেন সতর্ক হল না দল?’’
তৃণমূলের জেলা সহসভাপতি মলয় মুখোপাধ্যায়ের দাবি, ‘‘ধারেভারে, সবেতেই এগিয়ে আমাদের প্রার্থী শতাব্দী রায়। আগের চেয়ে বেশি ব্যবধানে জয়ী হবেন তিনিই।’’ সিপিএমের জেলা সম্পাদক গৌতম ঘোষের আবার দাবি, ‘‘আসলে বিজেপি আর তৃণমূলের মধ্যের বোঝাপড়া রয়েছে। অন্তত বীরভূমের দু’টি আসনের ক্ষেত্রে তা চোখের সামনে দেখা যাচ্ছে।’’ যদিও বিজেপির বীরভূম সাংগঠনিক জেলার সহ সভাপতি বাবন দাস বলছেন, ‘‘এটা দেশ গঠনের ভোট। প্রার্থী নয়, ভোট হবে পদ্মচিহ্ন ও নরেন্দ্র মোদীকে দেখে। হতাশাগ্রস্ত কিছু লোক থাকে। তাঁরা নানা কথা বলেন, খুঁত খোঁজেন। মানুষ বিজেপিকে ভোট দেওয়ার জন্য মুখিয়ে আছেন।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy