—প্রতীকী চিত্র।
রাজনৈতিক সন্ত্রাস, হানাহানির বহু ইতিহাসের সাক্ষী ইন্দাস বিধানসভা কেন্দ্র। সিপিএম আমল পেরিয়ে ঘাসফুলের সময়েও তা নিয়ে অভিযোগের অন্ত নেই বিরোধীদের। এই আবহে মানুষ গণতান্ত্রিক অধিকার প্রয়োগের যথাযথ সুযোগ পেলে পদ্ম ফোটার সম্ভাবনা দেখছেন গেরুয়া শিবির। সরকারি নানা প্রকল্পের সুফল হিসেবে জয় দেখছে শাসকদলও।
বাম আমলে একচেটিয়া সিপিএমের দখলে থাকা এই তল্লাট ২০১১-এ রাজ্যে রাজনৈতিক পট পরিবর্তনের পরে দ্রুত বদলাতে থাকে। সিপিএমের একের পর এক পার্টি অফিস বন্ধ নয়তো বেদখল হতে শুরু করে। ২০১৮-র পঞ্চায়েত নির্বাচন পর্যন্ত এখানে বিরোধী দলের অস্তিত্ব সেভাবে ছিল না। ওই বছর ভোটেও ত্রিস্তরীয় পঞ্চায়েতে কোথাও বিরোধী প্রার্থী ছিলেন না। শাসক দলের বিরুদ্ধে বিরোধীরা সন্ত্রাস করে মনোনয়ন জমা দিতে না দেওয়ার অভিযোগ তুললেও পাল্টা তৃণমূল তাদের সাংগঠনিক দুর্বলতাকে দায়ী করে।
গত লোকসভা নির্বাচনে যদিও বিরোধী শক্তি হিসেবে ইন্দাসে মাথা তোলে বিজেপি। ইন্দাস বিধানসভায় প্রায় সাড়ে ১৩ হাজার ভোটে এগিয়ে যান বিজেপি প্রার্থী। ২০২১-এর বিধানসভা নির্বাচনেও বিজেপি ইন্দাসে জয় পায়। এলাকায় গেরুয়া দাপটের পিছনে ২০১৮-র পঞ্চায়েত ভোটে একচ্ছত্র আধিপত্য কায়েম করার চেষ্টাকেই দায়ী করেন তৃণমূলের একাংশ। ২০২৩-এর পঞ্চায়েত নির্বাচনে ফের যাতে সেই ‘ভুল’ না হয়, দাবি ওঠে। তার পরেও সব ক্ষেত্রে ত্রিস্তরীয় পঞ্চায়েতে লড়াই হয়নি। ইন্দাস ব্লকের ২২টি পঞ্চায়েত ও ন’টি পঞ্চায়েত সমিতির আসন ছাড়া কোথাও বিরোধী ছিল না। জেলা পরিষদের সব ক’টি আসনে লড়াই হলেও ইন্দাস বিধানসভা এলাকার আওতায় থাকা ত্রিস্তরীয় পঞ্চায়েতের কোনও আসনে পদ্ম ফোটেনি।
লোকসভা ভোটে তৃণমূলের এই ‘সন্ত্রাস’-কে হাতিয়ার করে প্রচারে নেমেছে বিজেপি। বিষ্ণুপুর কেন্দ্রের দলীয় প্রার্থী সৌমিত্র খাঁ-র অভিযোগ, “পঞ্চায়েতে মানুষকে ভোটাধিকার প্রয়োগ করতে না দিয়ে নিরঙ্কুশ ক্ষমতা পেয়ে এখন কার্যত লুটতরাজ চালাচ্ছে তৃণমূল। মানুষ ক্ষোভে ফুঁসছেন। তৃণমূলকে হটাতে পারি একমাত্র আমরাই। মানুষ এ বারও আমাদের পক্ষেই থাকবেন।” সিপিএমের জেলা কমিটির সদস্য ইন্দ্রানী মুখোপাধ্যায়ও বলছেন, “পানীয় জলের সমস্যা, হাসপাতালে পরিকাঠামোর অভাব রয়েছে। একশো দিনের কাজ-সহ পঞ্চায়েতের নানা কাজে যথেচ্ছ দুর্নীতি করেছে তৃণমূল। মানুষ তৃণমূলের পক্ষে
একেবারেই নেই।”
ভোটে ঘাসফুল ফোটানো নিয়ে যদিও আত্মবিশ্বাসী তৃণমূল শিবির। দলের ইন্দাস ব্লক সভাপতি সেখ হামিদ, পাত্রসায়রের তৃণমূল নেতা সুব্রত দত্তের দাবি, “মুখ্যমন্ত্রীর লক্ষ্মীর ভান্ডারের মতো প্রকল্পে গ্রামের মানুষের অর্থনীতি দৃঢ় হয়েছে। কেন্দ্রের বিজেপি সরকার একশো দিনের কাজটাই বন্ধ করে দিয়েছে। মূল্যবৃদ্ধিতে মানুষ জেরবার। লোকসভা নির্বাচনে সেই ক্ষোভ ইভিএমে প্রকাশ করতে তৈরি রয়েছেন মানুষজন।” এই এলাকায় নির্বাচন শান্তিতে করানোটাও প্রশাসনের কাছে বড় চ্যালেঞ্জ। জেলার এক পুলিশকর্তা বলেন, “আধা সেনারা ইন্দাস বিধানসভার প্রত্যন্ত এলাকায় টহল দিয়েছে। মানুষকে ভোটে যোগ দিতে ভরসা জোগানো হচ্ছে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy