বিজেপি লোকসভা ভোটে লড়ার প্রস্তাব দিয়েছিল দেবকে? —ফাইল ছবি।
সুপারস্টার দেব গত ১০ বছরের তৃণমূল সাংসদ। এ বার ভোটের আগে রাজনীতি ছাড়বেন ছাড়বেন করেও শেষ পর্যন্ত ছাড়তে পারেননি। ফের ঘাটালেই লড়ছেন। এবং তৃণমূলের টিকিটেই। কিন্তু তাঁকে কি এ বার বিজেপি লোকসভা ভোটে লড়ার প্রস্তাব দিয়েছিল? আনন্দবাজার অনলাইনের সাক্ষাৎকার ভিত্তিক অনুষ্ঠান ‘দিল্লিবাড়ির লড়াই: মুখোমুখি’তে এই প্রথম সেই প্রশ্নের স্পষ্ট জবাব দিলেন তৃণমূলের প্রার্থী দেব।
বিজেপির প্রস্তাব সংক্রান্ত প্রশ্নে দেব হাসতে হাসতে বলেন, ‘‘আমি যদি ‘না’ বলি, তা হলে আমার অস্তিত্ব নিয়ে প্রশ্ন উঠবে। মনে হবে আমি কোথায় আছি?’’ দেব হয়তো বোঝাতে চেয়েছেন, এই দরাদরির রাজনৈতিক বাজারে তাঁকে যদি দেশের শাসকদল প্রস্তাবই না দেয়, তা হলে তাঁর দর আর কী রইল! তার পর ‘হ্যাঁ’ অথবা ‘না’-এ সরাসরি জবাব চাইলে ঘাটালের বিদায়ী তৃণমূল সাংসদ স্পষ্ট জানিয়েছেন, তাঁকে বিজেপি প্রস্তাব দিয়েছিল। কিন্তু তিনি যাননি। তিনি এ বারও তৃণমূলের প্রার্থী হিসেবেই লড়ছেন ঘাটাল থেকে।
গত দু’বছর ধরেই দেব বলছিলেন, তিনি রাজনীতি থেকে সরে যেতে চান। আর ভোটে লড়বেন না। বিগত লোকসভার অন্তিম অধিবেশনে সমাজমাধ্যমের একাধিক পোস্টে দেব স্পষ্ট করে দিয়েছিলেন, তিনি ভোটে দাঁড়াবেন না। কিন্তু ‘সম্ভাবনার শিল্প’ রাজনীতিতে দেব নিজের অবস্থানে অনড় থাকতে পারেননি। অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় এবং মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে বৈঠকের পর তাঁকে রাজনীতিতে থেকে যেতে হয়েছে। ভোটেও লড়তে হচ্ছে। কিন্তু তাঁর কি খারাপ লাগে না এই ভেবে যে, যা ছাড়তে চেয়েছিলেন, সেই কানাগলিতেই আবার ঢুকে পড়তে হল? দেব বলেন, ‘‘নির্বাচন এমন একটা লড়াই, সেখানে সব দলই চায় তাদের সেরা খেলোয়াড়দের মাঠে নামাতে। বিশ্বকাপে যদি বিরাট কোহলি বলতেন, আমায় ক্যাপ্টেন না করলে খেলব না, তা হলে কি চলত? আমিও চাইনি আমার জন্য দলের কোনও ক্ষতি হোক। এ-ও চাইনি কেউ বলুক, কঠিন সময়ে দেব দলকে ছেড়ে চলে গেল। বা দেবের সঙ্গে বিজেপির যোগাযোগ রয়েছে।’’
রাজনীতি থেকে সরে আসার ভাবনার নেপথ্যে কি বিজেপি এবং তৃণমূলের সঙ্গে ‘সমদূরত্বের ভাবনা’ কাজ করেছিল? দেব বলেন, ‘‘আমি দু’বছর আগে রাজনীতি থেকে সরে আসার কথা বলেছিলাম। সেই সময় কিন্তু আমাকে ইডি এবং সিবিআই কোনও নোটিসও পাঠায়নি।’’ ভিন্ন প্রসঙ্গে দেব এ-ও বলেছেন, ‘‘বাংলায় জিততে হলে ভালবাসা দিয়ে জিততে হবে। ভয় দেখিয়ে, এজেন্সি দেখিয়ে কিছু হবে না।’’ দেবকে পেতেও ভালবাসা দিতে হবে? এই প্রশ্নে অবশ্য হাসি ছাড়া আর কোনও অভিব্যক্তি ছিল না অভিনেতা-নেতার।
গরু পাচার মামলায় দুই কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা দেবকে ডেকেছিল। তিনি হাজিরাও দিয়েছিলেন। সেই প্রেক্ষাপটেই দেবের রাজনীতি ছাড়ার ইচ্ছাকে রাজনীতির কারবারিদের অনেকে জুড়ে দেখতে এবং দেখাতে চেয়েছিলেন। দেব স্পষ্ট করে দিয়েছেন, তিনি এমনিই রাজনীতি ছাড়তে চেয়েছিলেন। তার সঙ্গে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থার তলবের কোনও বিষয় ছিল না। কোনও রাজনৈতিক সমীকরণের কথাও তাঁর ভাবনার মধ্যে ছিল না।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy