Advertisement
Back to
PM Narendra Modi

মোদীর আত্মবি‌শ্বাস নিয়ে প্রশ্ন কংগ্রেসের

বিরোধীরা বলছেন, মোদীর এই ঘোষণার পরেই বিজেপি মহারাষ্ট্রের কংগ্রেস নেতা অশোক চহ্বাণকে দলে টেনে তাঁকে রাজ্যসভায় পাঠিয়েছে।

PM Narendra Modi.

প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। — ফাইল চিত্র।

প্রেমাংশু চৌধুরী
নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ২৪ ফেব্রুয়ারি ২০২৪ ০৭:০৪
Share: Save:

মুখে নরেন্দ্র মোদী ৩৭০টি আসন জয়ের আত্মবিশ্বাস দেখাচ্ছেন। কিন্তু সেই নরেন্দ্র মোদীর দলই গত লোকসভা ভোটে বিজেপির কাছে হেরে যাওয়া কংগ্রেস নেতাদের দলে টেনে রাজ্যসভায় পাঠাচ্ছে। অন্যান্য বিরোধী দলের নেতাদের বাড়িতে নিয়মিত সিবিআই-ইডি কড়া নাড়ছে। এ সব দেখে বিরোধীরা এ বার প্রশ্ন তুলল, নরেন্দ্র মোদী কি সত্যিই লোকসভা ভোটে জয়ের বিষয়ে আত্মবিশ্বাসী? বিজেপি শিবিরের পাল্টা জবাব, নরেন্দ্র মোদী এতটাই আত্মবিশ্বাসী যে তিনি লোকসভা ভোটের পরে নতুন সরকারের প্রথম একশো দিনের কাজ কী হবে, তার প্রস্তুতি শুরু করে দিয়েছেন।

গত লোকসভা নির্বাচনে ৩০৩টি আসনে জিতে আসার পরে নরেন্দ্র মোদী আগামী লোকসভা নির্বাচনের আগে সংসদে দাঁড়িয়ে ভবিষ্যদ্বাণী করেছিলেন, বিজেপি এ বার ৩৭০টি আসনে জিততে চলেছে। এনডিএ লোকসভার ৫৪৩টি আসনের মধ্যে ৪০০টি আসনে জিতবে।

বিরোধীরা বলছেন, মোদীর এই ঘোষণার পরেই বিজেপি মহারাষ্ট্রের কংগ্রেস নেতা অশোক চহ্বাণকে দলে টেনে তাঁকে রাজ্যসভায় পাঠিয়েছে। গত লোকসভা ভোটের সময় এই চহ্বাণকেই নানদেড় কেন্দ্রে বিজেপি সর্বশক্তি দিয়ে হারিয়েছিল। সে সময় চহ্বাণ মহারাষ্ট্রের প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি ছিলেন। এর পরে কমল নাথ রাজ্যসভায় যেতে না পেরে কংগ্রেস নেতৃত্বের উপরে ক্ষুব্ধ দেখে বিজেপি তাঁকে ও তাঁর ছেলেকেও দলে টানতে চেষ্টা করেছে। অথচ দু’তিন মাস আগেই মধ্যপ্রদেশে বিজেপি কমল নাথের নেতৃত্বেই কংগ্রেসকে বিধানসভা ভোটে হারিয়েছে।

কংগ্রেসের জনসংযোগ দফতরের চেয়ারম্যান পবন খেরার প্রশ্ন, “আমাদের যে সব নেতাদের নিশানা করে করে ওঁরা ভোটে জিতলেন, আজ তাঁদের সামনে হাত জোড় করে বিজেপি নিজেদের দলে নিতে চাইছে। যদি নরেন্দ্র মোদী নিজের জয়ের বিষয়ে এতই নিশ্চিত হন, তা হলে এত উদ্বিগ্ন দেখাচ্ছে কেন?” আজ আম আদমি পার্টির নেতা তথা দিল্লির অরবিন্দ কেজরীওয়াল সরকারের মন্ত্রী সৌরভ ভরদ্বাজ বলেন, “এটা স্পষ্ট যে বিজেপি উদ্বিগ্ন। তাই কংগ্রেসের সঙ্গে আসন সমঝোতা করলে অরবিন্দ কেজরীওয়ালকে গ্রেফতার করা হবে বলে হুমকি দেওয়া হচ্ছে।’’

কংগ্রেস-সহ বিরোধীদের অভিযোগ, কংগ্রেসের সঙ্গে ইন্ডিয়া-র শরিক দলগুলির আসন সমঝোতা আটকাতে বিরোধী দলের নেতাদের ঠিকানায় রোজ সিবিআই, ইডি হানা দিচ্ছে। কেজরীওয়ালকে গ্রেফতারির ভয় দেখানো হচ্ছে। ঝাড়খণ্ডে জেএমএম প্রধান হেমন্ত সোরেনকে জেলে পাঠানো হয়েছে। উত্তরপ্রদেশে জয়ন্ত চৌধরীকে এনডিএ-তে টানতে তাঁর পিতামহ চৌধরী চরণ সিংহকে ভারতরত্ন দেওয়া হয়েছে। এখন কংগ্রেসকে আর্থিক ভাবে দুর্বল করতে আয়কর দফতরকে কাজে লাগানো হচ্ছে। এ থেকে স্পষ্ট, নরেন্দ্র মোদী মুখে যাই বলুন, বিজেপি ৩৭০ আসন জয় দূরের কথা, লোকসভা ভোটে জয়ের বিষয়ে নিশ্চিত নয়।

বিজেপি নেতাদের অবশ্য পাল্টা যুক্তি, এ সব বিরোধী নেতাদের দিবাস্বপ্ন। দু’দিন আগেই
কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভার বৈঠকে নরেন্দ্র মোদী মন্ত্রীদের কাছে জানতে চেয়েছেন, লোকসভা ভোটের পরে নতুন সরকার গঠন করে প্রথম ১০০ দিনের কাজ কী হবে? তার রূপরেখা তৈরিরও নির্দেশ দিয়েছেন তিনি। আগামী ৩ মার্চ কেন্দ্রীয় মন্ত্রী পরিষদের বৈঠক ডাকা হয়েছে। ভোটের আগে শেষ মন্ত্রী পরিষদের এই বৈঠকে তৃতীয় মোদী সরকারের ভবিষ্যৎ কর্মসূচি নিয়ে বার্তা দেবেন প্রধানমন্ত্রী।

কংগ্রেস নেতাদের প্রশ্ন, মোদী যে ৩০৩টি আসন থেকে বাড়িয়ে বিজেপির ৩৭০টি আসন জেতার কথা বলছেন, সেই আসন বাড়বে কোথা থেকে? হিন্দি বলয়ে বিজেপি এমনিতেই যথেষ্ট আসনে জিতে রয়েছে। সেখানে খুব বেশি আসন বৃদ্ধির জায়গা নেই। দক্ষিণ, পূর্ব ভারতে বিজেপির আসন বাড়া কঠিন। তা হলে ৩৭০টি আসন কোথা থেকে আসবে? বিজেপি নেতারা মনে করিয়ে দিচ্ছেন, আগামী সপ্তাহেই নরেন্দ্র মোদী তামিলনাড়ু, কেরল, পশ্চিমবঙ্গ, মহারাষ্ট্র সফরে যাচ্ছেন। এই চার রাজ্যের ১৪৯টি আসন নরেন্দ্র মোদীর নজরে রয়েছে। এর মধ্যে পশ্চিমবঙ্গ ও মহারাষ্ট্রে বিজেপির আসন বাড়তে পারে।

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy