Advertisement
Back to
PM Narendra Modi

‘ঝোলা থেকে বেড়াল বেরিয়ে পড়েছে, এক দেশ, শূন্য নির্বাচন চান মোদী’, অভিযোগ বিরোধীদের

বিরোধীদের আপত্তি ছিল, এক দেশ, এক নির্বাচন অসাংবিধানিক। লোকসভার সঙ্গে বিধানসভা ভোট করাতে গিয়ে বিধানসভা মেয়াদ ফুরনোর আগে ভেঙে দেওয়া জনমতের বিরুদ্ধাচারণ।

PM Narendra Modi.

প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। — ফাইল চিত্র।

নিজস্ব সংবাদদাতা
নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ১৫ মার্চ ২০২৪ ০৮:১১
Share: Save:

‘এক দেশ, এক নির্বাচন’ নিয়ে বিরোধী দলগুলি আগেই আপত্তি তুলে বলেছিল, লোকসভা নির্বাচনের সঙ্গে সমস্ত রাজ্যের বিধানসভা নির্বাচন করানো অসাংবিধানিক। তা সত্ত্বেও আজ প্রাক্তন রাষ্ট্রপতি রামনাথ কোবিন্দের নেতৃত্বে উচ্চ পর্যায়ের কমিটি ‘এক দেশ, এক নির্বাচন’-এর পক্ষেই সুপারিশ করেছে। কোবিন্দ কমিটির বক্তব্য, মোট ৩২টি রাজনৈতিক দল লোকসভা ভোট ও রাজ্যগুলির বিধানসভা ভোট একসঙ্গে করা বা ‘এক দেশ, এক নির্বাচন’-এর পক্ষে সায় দিয়েছে। এর মধ্যে ২৬টি দলই বিজেপি নেতৃত্বাধীন এনডিএ-র শরিক। মোট ১৫টি রাজনৈতিক দল ‘এক দেশ, এক নির্বাচন’-এর বিরুদ্ধে মত দিয়েছে। এই ১৫টি দলের মধ্যে ১০টি দলই বিরোধীদের জোট ইন্ডিয়া-র শরিক।

কংগ্রেস আজও অভিযোগ তুলেছে, প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী ‘এক দেশ, শূন্য নির্বাচন’ চাইছেন। দলের প্রধান মুখপাত্র জয়রাম রমেশের অভিযোগ, ‘‘প্রধানমন্ত্রীর লক্ষ্য খুবই স্পষ্ট। উনি লোকসভায় দুই-তৃতীয়াংশ সংখ্যাগরিষ্ঠতা চাইছেন। সেই কারণেই তিনি ৪০০ আসনের লক্ষ্য স্থির করেছেন। তবে ঝোলা থেকে বেড়াল বেরিয়ে পড়েছে। বিজেপি আসলে বাবাসাহেব অম্বেডকরের সংবিধান পুরোপুরি ধ্বংস করে দিতে চাইছে। তার একটাই লক্ষ্য, দেশে আর কোনও নির্বাচন হবে না।’’

বিরোধীদের আপত্তি ছিল, এক দেশ, এক নির্বাচন অসাংবিধানিক। লোকসভার সঙ্গে বিধানসভা ভোট করাতে গিয়ে বিধানসভা মেয়াদ ফুরনোর আগে ভেঙে দেওয়া জনমতের বিরুদ্ধাচারণ। কোবিন্দ কমিটি যুক্তি দিয়েছে, সংখ্যাগরিষ্ঠতার অভাব, রাজনৈতিক অস্থিরতার মতো নানা কারণেই লোকসভা বা বিধানসভা সময়ের আগে ভেঙে দেওয়া হয়েছে। সংবিধানের ৮৩ ও ১৭২-তম অনুচ্ছেদে বলা হয়েছে, লোকসভা বা বিধানসভার মেয়াদ পাঁচ বছর হবে। তার বেশি হতে পারে না। পাঁচ বছরের কম হবে না, এমন কথা বলা নেই। একসঙ্গে লোকসভা ও বিধানসভার নির্বাচন মানুষের মৌলিক অধিকারে হস্তক্ষেপ করছে না। সংবিধানের ১৪, ১৯ ও ২১-তম অনুচ্ছেদেও হস্তক্ষেপ করছে না।

বিরোধীদের দাবি ছিল, এক দেশ, এক নির্বাচন গণতান্ত্রিক নীতির বিরুদ্ধে। কোবিন্দ কমিটি বলেছে, এই ব্যবস্থায় অবাধ ও নিরপেক্ষ নির্বাচনে বাধা পড়ছে না। বিরোধীদের অভিযোগ ছিল, লোকসভা ও বিধানসভা নির্বাচন একসঙ্গে করা যুক্তরাষ্ট্রীয় কাঠামো, রাজ্যের অধিকারের বিরুদ্ধে। কোবিন্দ কমিটি যুক্তি দিয়েছে, সংবিধানের ৩২৭ ও ৩২৮-তম অনুচ্ছেদে সংসদ ও রাজ্যকে নির্বাচন সংক্রান্ত ক্ষমতা দেওয়া হয়েছে, একসঙ্গে লোকসভা, বিধানসভার ভোট হলে সেই অধিকারে হাত পড়বে না।

কংগ্রেস থেকে তৃণমূল, সিপিএম থেকে ডিএমকে-র মতো প্রধান বিরোধী দলগুলি লোকসভা নির্বাচনের সঙ্গে সমস্ত রাজ্যের বিধানসভা নির্বাচন আয়োজনের বিরুদ্ধে ছিল। সরকারি পরিসংখ্যান অনুযায়ী, যে ২৬টি এনডিএ-র শরিক দল ‘এক দেশ, এক নির্বাচন’ চেয়েছে, তারা ২০১৯-এর লোকসভা ভোটে মিলিত ভাবে ৪৮.৩ শতাংশ ভোট পেয়েছিল। ‘ইন্ডিয়া’ জোটের যে ১০টি দল এক দেশ, এক নির্বাচনর বিরোধিতা করেছে, তারা মিলিত ভাবে গত লোকসভা ভোটে ৩৫.৯ শতাংশ ভোট পেয়েছিল।

কোবিন্দ কমিটি সুপ্রিম কোর্টের চার জন প্রাক্তন প্রধান বিচারপতির মত নিয়েছিল। প্রাক্তন প্রধান বিচারপতি দীপক মিশ্র, রঞ্জন গগৈ, শরদ অরবিন্দ বোবদে, উদয় উমেশ ললিত—চার জনই এক দেশ, এক নির্বাচনের পক্ষে সায় দিয়েছেন। হাই কোর্টের মোট ১২ জন অবসরপ্রাপ্ত প্রধান বিচারপতি তাঁদের মত জানিয়েছিলেন। তাঁদের মধ্যে মাত্র তিন জন, দিল্লি হাই কোর্টের প্রাক্তন প্রধান বিচারপতি এ পি শাহ, কলকাতা হাই কোর্টের প্রাক্তন প্রধান বিচারপতি গিরিশচন্দ্র গুপ্ত ও মাদ্রাজ হাই কোর্টের প্রাক্তন প্রধান বিচারপতি সঞ্জীব বন্দ্যোপাধ্যায় এর বিরোধিতা করেছেন।

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy