—প্রতীকী ছবি।
রাজ্যের আরও তিন লোকসভা আসনে প্রার্থী ঘোষণা করল কংগ্রেস। বামফ্রন্টের শরিক দলের জন্য নির্দিষ্ট আসনে কংগ্রেসের প্রার্থী দেওয়া ঘিরে বাড়ল জটিলতাও!
বামফ্রন্ট এখনও পর্যন্ত রাজ্যে ২৯টি আসনে প্রার্থী দিয়েছে। এআইসিসি-র তরফে রবিবার বনগাঁ কেন্দ্রে প্রদীপ বিশ্বাস, উলুবেড়িয়ায় প্রদেশ যুব কংগ্রেস সভাপতি আজ়হার মল্লিক এবং ঘাটাল আসনে পাপিয়া চক্রবর্তীর নাম ঘোষণা করা হয়েছে। সব মিলিয়ে ১৩ আসনে কংগ্রেস প্রার্থীদের নাম ঘোষণা হল। তবে ঘাটালে দু'দিন আগেই বামফ্রন্টের তরফে সিপিআই প্রার্থীর নাম ঘোষণা হয়েছে। এই নিয়ে তিনটি আসনে বাম শরিকদের সঙ্গে কংগ্রেসের টানাপড়েন থাকল। কোচবিহারে বামফ্রন্টের তরফে ফরওয়ার্ড ব্লক প্রার্থীর নাম ঘোষণার পরেও কংগ্রেস সেখানে প্রার্থী দিয়েছে। পুরুলিয়ায় আবার কংগ্রেস প্রার্থী দেওয়ার পরে ফ ব সেই আসনে লড়তে অনড়। এর পাশাপাশি, ভগবানগোলা বিধানসভা কেন্দ্রে উপনির্বাচনের জন্য কংগ্রেস প্রার্থী করেছে আঞ্জু বেগমকে।
রাজ্যে মোট ৪২ আসনের মধ্যে দক্ষিণ ২৪ পরগনার জয়নগর এবং পূর্ব মেদিনীপুরের কাঁথি আসনে এখনও বাম ও কংগ্রেস, কেউই প্রার্থী দেয়নি। জয়নগরে সচরাচর লড়াই করে আরএসপি। তার পাশের আসন মথুরাপুরে লড়তে আগ্রহী ছিল কংগ্রেস। কিন্তু সেখানে সিপিএম শনিবারই প্রার্থী ঘোষণা করে দিয়েছে। এই প্রেক্ষিতে জয়নগর ও কাঁথিতে কী হবে, কংগ্রেস শেষ পর্যন্ত কত আসনে প্রার্থী দেবে বা কোথাও দাবি ছাড়বে কি না, সে সব প্রশ্নে ধোঁয়াশা রয়ে যাচ্ছে।
এআইসিসি-র এই দফার প্রার্থী ঘোষণার পরেও বামফ্রন্টের অন্দরে নতুন করে জলঘোলা শুরু হয়েছে। ঘাটাল নিয়ে জটিলতার বিষয়টি রাজ্য সিপিআই নেতৃত্ব তাঁদের দলের কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব এবং রাজ্য সিপিএম নেতৃত্বের নজরে এনেছেন। তার পরেই সিপিআইয়ের কেন্দ্রীয় সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্য পল্লব সেনগুপ্ত বলেছেন, ‘‘এআইসিসি-র তরফে যে প্রার্থী তালিকা ঘোষণা করা হয়েছে, তার মধ্যে ঘাটাল আসনও রয়েছে। এটা সত্যিই খুব অনভিপ্রেত। নির্বাচনের রাজনৈতিক পরিপ্রেক্ষিত ভুলে গিয়ে বেছে বেছে শরিক দলের আসনে প্রার্থী দেওয়া মানে বামফ্রন্টের মধ্যে অবিশ্বাসের বাতাবরণ তৈরি করা। এখনও যদি কংগ্রেস সংশোধন না করে, তা হলে আমাদেরও ভাবতে হবে!’’ দেশ জুড়ে বিজেপির বিরুদ্ধে মূল লড়াইয়ের সময়ে কংগ্রেস নেতা রাহুল গান্ধী কেন ফের কেরলের ওয়েনাড়ে প্রার্থী হয়েছেন, যেখানে তাঁকে মুখোমুখি লড়তে হবে বামেদের সঙ্গে— এই প্রশ্নে কংগ্রেস এবং সিপিআইয়ের সংঘাত চলছেই। ওয়েনাড়ে রাহুলের বিরুদ্ধে প্রার্থী সিপিআই নেত্রী অ্যানি রাজা। যিনি দলের সাধারণ সম্পাদক ডি রাজার স্ত্রী। বাংলায় কংগ্রেসের পদক্ষেপ এই টানাপড়েনে নতুন মাত্রা যোগ করেছে। কংগ্রেসের এক নেতার অবশ্য বক্তব্য, ‘‘আমাদের দলকেও নিজের স্বার্থ দেখতে হবে। তবে ভুল বোঝাবুঝি থাকলে আলোচনায় মিটে যাবে বলে আশা করা যায়।’’
সর্বভারতীয় স্তরে সিপিএম এবং সিপিআই সব ক্ষেত্রেই একসঙ্গে রয়েছে। অন্য দুই বাম শরিক ফ ব এবং আরএসপি-র বিষয়টি ঠিক তেমন নয়। সিপিআইয়ের আসনে কংগ্রেস প্রার্থী দেওয়ায় সিপিএম নেতৃত্বও অসন্তুষ্ট। সিপিএমের এক পলিটব্যুরো সদস্যের কথায়, ‘‘বামফ্রন্ট কোন আসনে প্রার্থী দিয়েছে, সবই জানানো হয়েছে কংগ্রেস নেতৃত্বকে। তার পরেও ঘাটালে এই প্রার্থী দেওয়া অবাঞ্ছিত। কোচবিহারেও আগে একই ব্যাপার হয়েছে। বিষয়টি নিয়ে আলোচনা হওয়া দরকার।’’ ফ ব-র রাজ্য সম্পাদক নরেন চট্টোপাধ্যায় আজ, সোমবার সাংবাদিক বৈঠক ডেকেছেন। সেখানে তিনি ফের কংগ্রেসের বিরুদ্ধে তোপ দাগলে পরিস্থিতি আরও জটিল হতে পারে বলে বাম শিবিরে আশঙ্কা।
কোথায় দলের প্রার্থী থাকা উচিত, সেই সংক্রান্ত নানা দাবি-দাওয়ার জেরে কংগ্রেসের অন্দরের পরিস্থিতিও ঘোরালো। সংগঠন, রাজনৈতিক কর্মকাণ্ড কিছুই চোখে পড়ার মতো না থাকলেও বহু জেলা সভাপতি লোকসভা ভোটে আসন পাওয়ার জন্য উদগ্রীব। এমতাবস্থায় এআইসিসি-র পর্যবেক্ষক গুলাম আহমেদ মীর এবং স্ক্রিনিং কমিটির নেতা রানা কে পি সিংহের আজ প্রদেশ কংগ্রেসের সদর দফতর বিধান ভবনে দলের নেতাদের সঙ্গে বৈঠকে বসার কথা।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy