Advertisement
Back to
Mamata banerjee in Bankura

জোড়া লক্ষ্যেই কি খাতড়ায় সভা

রাজনীতির কারবারিদের একাংশের দাবি, এই পরিস্থিতিতে জঙ্গলমহল তৃণমূলের কাছে কার্যত শাঁখের করাত হয়ে উঠেছে। এলাকায় কুড়মি ও আদিবাসী— দুই সম্প্রদায়ের ভাল ভোটার থাকায় সতর্ক তৃণমূল নেতৃত্ব।

মুখ্যমন্ত্রীর ছবিতে ছয়লাপ বাঁকুড়ার পথঘাট।

মুখ্যমন্ত্রীর ছবিতে ছয়লাপ বাঁকুড়ার পথঘাট। —নিজস্ব চিত্র।

নিজস্ব সংবাদদাতা
শেষ আপডেট: ২৬ ফেব্রুয়ারি ২০২৪ ০৯:১০
Share: Save:

নবান্নে কুড়মি ও জনজাতি সম্প্রদায়ের বিভিন্ন সংগঠনের সঙ্গে সম্প্রতি বৈঠকে করে উন্নয়নের বার্তা দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তার এক সপ্তাহের মধ্যে মুখ্যমন্ত্রীর সভার জন্য বেছে নেওয়া হল বাঁকুড়া জেলার জনজাতি ও কুড়মি অধ্যুষিত খাতড়াকে। লোকসভা নির্বাচনের মুখে কুড়মি ও আদিবাসী ভোট ব্যাঙ্কের লক্ষ্যই তৃণমূল নেত্রীর এই সফরের অন্যতম কারণ বলে মনে করছে রাজনৈতিক মহলের একাংশ।

এক দিকে কুড়মিদের জাতিসত্তার দাবিতে আন্দোলন করছে আদিবাসী কুড়মি সমাজ। অন্য দিকে, অ-আদিবাসীদের যাতে আদিবাসী স্বীকৃতি না দেওয়া হয়, সেই দাবিতে সুর চড়িয়েছে আদিবাসী সংগঠনগুলি। রাজনীতির কারবারিদের একাংশের দাবি, এই পরিস্থিতিতে জঙ্গলমহল তৃণমূলের কাছে কার্যত শাঁখের করাত হয়ে উঠেছে। এলাকায় কুড়মি ও আদিবাসী— দুই সম্প্রদায়ের ভাল ভোটার থাকায় সতর্ক তৃণমূল নেতৃত্ব। গত বছর পঞ্চায়েত নির্বাচনের আগে জাতিসত্তার আন্দোলন আরও দৃঢ় করার লক্ষে খাতড়ায় বৈঠক করেন কুড়মি সমাজের (পশ্চিমবঙ্গ) সভাপতি রাজেশ মাহাতো ও আদিবাসী কুড়মি সমাজের মূল মানতা (মুখ্য উপদেষ্টা) অজিতপ্রসাদ মাহাতো। ওই বৈঠকের পরেই নবজোয়ার কর্মসূচিতে বাঁকুড়ার জঙ্গলমহলে এসে কুড়মিদের আন্দোলনের মুখে পড়ে মেজাজ হারান তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। পুরুলিয়াতেও কুড়মিদের বাধার মুখে পড়েন তিনি। ঝাড়গ্রামে অভিষেকের সফরে থাকা মন্ত্রী বিরবাহা হাঁসদার গাড়িতে হামলার অভিযোগে নাম জড়ায় কুড়মি নেতাদের। কুড়মিরা তৃণমূলের বিরুদ্ধে গিয়ে পঞ্চায়েত ভোটে পৃথক ভাবে লড়াই করে।

তৃণমূলের একাংশ মনে করেন, খাতড়া মহকুমায় পঞ্চায়েত স্তরে কুড়মিদের নির্দল প্রার্থীদের জন্য বহু আসন হারাতে হয় তৃণমূলকে। সেই সুযোগে বিজেপি ও সিপিএম পঞ্চায়েতে বেশ কিছু আসন পায়। আসন্ন নির্বাচনে ফের কুড়মিদের পাশে না পেয়ে তৃণমূলের পক্ষে চাপ হতে পারে। দক্ষিণ বাঁকুড়ার এক ব্লক তৃণমূল সভাপতির কথায়, “একদিকে কুড়মিদের জাতিসত্তার লড়াই, অন্যদিকে আদিবাসী সংগঠনগুলির বিরোধিতায় আমরা মুশকিলে পড়ছি। দু’পক্ষকেই ভুল বুঝিয়ে রাজনৈতিক ভাবে এর ফায়দা তুলছে বিজেপি। এমন অবস্থায় আমাদের কাছে মমতা ম্যাজিকই বড় ভরসা। তাই তাঁর খাতড়ায় সভা হওয়াটা দরকার ছিল।”

দলের বাঁকুড়া সাংগঠনিক জেলা সভাপতি অরূপ চক্রবর্তী বলেন, “জঙ্গলমহলের প্রত্যন্ত এলাকার মানুষকে উন্নয়নের আলো দেখিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রীই। লক্ষ্মীর ভান্ডার থেকে কন্যাশ্রী, সবুজশ্রী, জয় জোহারের মতো প্রকল্প উল্লেখযোগ্য। পথশ্রী প্রকল্পেও জঙ্গলমহলের প্রত্যন্ত এলাকায় পাকা রাস্তা হচ্ছে। বিজেপি যতই ভুল বোঝানোর চেষ্টা করুক, মানুষের সমর্থন আমাদের পাশেই আছে।’’

বিজেপির বাঁকুড়া সাংগঠনিক জেলা সভাপতি সুনীলরুদ্র মণ্ডলের পাল্টা দাবি, “তৃণমূল নেত্রী আদিবাসী ও কুড়মিদের ভুল বুঝিয়ে এতদিন ভোট আদায় করেছেন। এ বার তাঁরা তৃণমূল নেত্রীর মিথ্যাচার ধরে ফেলেছেন। তাই ফের তাঁদের ভুল বোঝাতে তিনি খাতড়ায় সভা করতে আসছেন।’’

অন্য বিষয়গুলি:

bankura Khatra
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy