বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। —ফাইল ছবি।
যে নন্দীগ্রামে দাঁড়িয়ে এক সময় সংখ্যালঘুদের প্রতি ‘জেহাদি’ মন্তব্য করে বিতর্ক তৈরি করেছিলেন বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী, সেই নন্দীগ্রামেই ভোটের আগে তাঁর মুখে শোনা গেল ধর্মীয় সহিষ্ণুতার বার্তা। বিজেপি আদপেই শুধু হিন্দুদের দল নয় এবং প্রধানমন্ত্রীর যাবতীয় কল্যাণমূলক প্রকল্প কখনও শুধু হিন্দু জনতার জন্য নয় বলে এ দিন মঞ্চ থেকে প্রচার করেন শুভেন্দু।
বিশেষজ্ঞদের মতে, নির্বাচনে নন্দীগ্রাম থেকে অন্তত ১০ হাজার লিড না পেলে বিজেপির মুখ থাকবে না বলে কর্মিসভায় জানিয়েছিলেন শুভেন্দু। সংখ্যালঘুদের ভোট ছাড়া যে ওই ‘লিড’ পাওয়া অসম্ভব, বুঝতে পেরে সুর বদলেছেন বিরোধী দলনেতা। মঙ্গলবার সকালে নন্দীগ্রামে সামসাবাদে বিজেপি সংখ্যালঘু মোর্চার কর্মিসভায় শুভেন্দু দাবি করেছেন, ‘‘প্রধানমন্ত্রী যে সমস্ত প্রকল্প করেছেন তা কোনও নির্দিষ্ট বর্ণ বা ধর্মের জন্য নয়। সকলের জন্য। সেই প্রকল্পে কোন হিন্দু বা মুসলিমের বিভেদ নেই। মোদিজী গোটা ভারতবাসীর জন্য ভাবেন।’’
তাঁর আরও বক্তব্য, ‘‘তৃণমূল ভোটব্যাঙ্ক রক্ষা করার জন্য একটা প্রাচীর তৈরি করেছিল। হিন্দু আর মুসলমান। বিজেপি হিন্দুদের দল আর মুসলমানদের হামদরদী দল তৃণমূল। কিন্তু আমি মনে করি, যাঁরা ভারতে জন্মেছেন সেই সব সংখ্যালঘুরা রাষ্ট্রবাদী এবং ভারত মাতার যাঁরা সুসন্তান তাঁদের অভিনন্দন জানাবো।"
রাজনৈতিক মহলের একাংশের দাবি, বিজেপি বুঝতে পেরেছে বেশি আসন পেতে হলে সংখ্যালঘুদের প্রয়োজন। কারণ তৃণমূলের আসল ভোটব্যাঙ্ক হল সংখ্যালঘুরা। নন্দীগ্রামের জেলা পরিষদের তৃণমূল সদস্য শেখ শামসুল ইসলামের কথায়, “ঠ্যালায় না পড়লে বিড়াল গাছে ওঠে না। হিন্দু এলাকায় শুভেন্দুর প্রভাব কমে যাচ্ছে, সেটা শুভেন্দু বুঝতে পারছেন। তাই চেষ্টা করছেন মুসলিম ভোটারদের নিজেদের দিকে টানার। যে মুসলিমদের জেহাদি বলে আক্রমণ করতেন, এখন তাঁদের ভারত মাতার সন্তান বলতে হচ্ছে।”
যদিও এর পাল্টা বিজেপির তমলুক সাংগঠনিক জেলার সম্পাদক মেঘনাথ পাল দাবি করেন, ‘‘গত বিধানসভা ভোটে সংখ্যালঘুদের ৪০০ ভোট পেয়েছিলেন শুভেন্দু অধিকারী। তাতেই জিতেছিলেন। ভোট পেতে তাঁকে কিছু বলতে হয় না। জাতি ধর্ম নির্বিশেষে যাঁরা প্রকৃত ভারতমাতার সন্তান, বিজেপি সবসময় তাঁদের সঙ্গেই থাকে।’’
মঙ্গলবার দুপুরে নন্দীগ্রামে তমলুকের বিজেপি প্রার্থী অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়ের সমর্থনে বিজেপি সংখ্যালঘু মোর্চার ‘সংকল্প সভা’ হয়। সেখানে শুভেন্দু অভিযোগ করেন, কিছু ইমাম তৃণমূলের হয়ে প্রচার করছেন। এই সূত্রেই উঠে আসে রউসউদ্দিন নামে এক জনের নাম। বিরোধী দলনেতার কথায়, “এই রইসউদ্দিন পুরকাইত সাহেব একটা লিফলেট ছেড়েছেন। আমি এই ইমাম সাহেবকে বলি, ২০২১ সালের পরে সংখ্যালঘু কিংবা মুসলিমদের উপর যে অত্যাচারগুলো পশ্চিমবঙ্গ সরকার করেছে, সেগুলি নিয়ে কেন মুখ খোলেননি?” এই অত্যাচারের খতিয়ান তুলে ধরতে গিয়ে শুভেন্দু তুলে আনেন আনিস খানের মৃত্যু, গার্ডেনরিচে বহুতল ভেঙে পড়া এবং বগটুইকাণ্ডের কথা।
এ দিন সকালে শুভেন্দু অধিকারী সামসাবাদ যাওয়ার সময় রাস্তায় তৃণমূল কর্মী, সমর্থকেরা ‘চোর চোর’ স্লোগান দেন। আবার হলদিয়ার ৮ নম্বর ওয়ার্ডে নির্বাচনী প্রচার করার সময় বিক্ষোভের মুখে পড়েন হলদিয়ার বিজেপি বিধায়ক তাপসী মণ্ডল। বিক্ষোভকারীদের অভিযোগ, এলাকার উন্নয়নের কাজে তাঁকে দেখা যায়নি। যদিও তাপসী দাবি করেন, ‘‘পুরোটাই তৃণমূলের চক্রান্ত।"
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy