বিষ্ণুপ্রসাদ শর্মা। —ফাইল চিত্র।
বিদ্রোহী হয়ে দার্জিলিং লোকসভা কেন্দ্রে বিজেপি প্রার্থী তথা বিদায়ী সাংসদ রাজু বিস্তার বিরুদ্ধে নির্দল হয়ে দাঁড়িছিলেন তিনি। ভোট মিটে যেতেই আবারও স্বাভাবিক নিয়ম মেনে বিজেপি বিধায়ক হিসাবে কাজ শুরু করে দিয়েছেন কালিম্পঙের বিধায়ক বিষ্ণুপ্রসাদ শর্মা। এর পরেই প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে, বিজেপি কি আদৌ দলবিরোধী আচরণের জন্য কালিম্পঙের বিধায়কের বিরুদ্ধে কোনও ব্যবস্থা নেবে?
বুধবার কলকাতায় এসেই বিষ্ণুপ্রসাদ গিয়েছিলেন বিধানসভায়। সেখান বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীর অফিসে যান তিনি। সেখানে গিয়ে তাঁর সাক্ষাৎ হয় বিজেপি পরিষদীয় দলের মুখ্যসচেতক মনোজ টিগ্গার সঙ্গে। মনোজ লোকসভা নির্বাচনে আলিপুরদুয়ারের বিজেপি প্রার্থী হিসাবে লড়াই করেছেন। সেখানে দীর্ঘ ক্ষণ কথা হয় দুই বিধায়কের মধ্যে। বিরোধী দলনেতার অফিসে নিজের প্রয়োজনীয় কাজ সেরে ফিরে আসনে কিড স্ট্রিটের বিধায়ক আবাসে। তিনি জানিয়েছেন, বিরোধী দলনেতার ঘরে গেলে স্বাভাবিক দিনের মতোই সেখানে থেকে কাজ করেছেন। কথাবার্তা হয়েছে সতীর্থ বিধায়কদের সঙ্গেও। তবে তাঁর নির্দল প্রার্থী হিসাবে ভোটে লড়াইয়ের বিষয়ে কেউ কোনও কথা বলেননি। তবে বিষ্ণুপ্রসাদের ধারণা, ৪ জুন লোকসভা ভোটের ফলাফল প্রকাশ পর তাঁর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে পারে বিজেপি। এ ক্ষেত্রে তাঁর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে পারেন কেন্দ্রীয় বিজেপি নেতৃত্ব।
কারণ, এই লোকসভা নির্বাচনে তিনি ছাড়াও আরও দু’জন বিজেপি নেতা দলের সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে গিয়ে ভোটে লড়ায় সাসপেন্ড হয়েছেন। বুধবারই ভোজপুরী সিনেমার ‘পাওয়ার স্টার’ নামে পরিচিত পবন সিংহকে সাসপেন্ড করেছে বিজেপি। তিনি বিহারের কারাকাট লোকসভা কেন্দ্রে নির্দল প্রার্থী হিসাবে লড়াই করছেন। দলের নির্দেশ উপেক্ষা করে ভোটে লড়াই করার কারণেই সাসপেন্ড করা হয়েছে এই চিত্রতারকাকে। অন্য দিকে, কর্নাটকের শিবমোগা আসন থেকে নির্দল হিসাবে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করার সিদ্ধান্তের পরে সে রাজ্যের প্রাক্তন উপমুখ্যমন্ত্রী কেএস ঈশ্বরাপ্পাকে ছয় বছরের জন্য বহিষ্কার করেছে বিজেপি। কিন্তু বিষ্ণুপ্রসাদের ক্ষেত্রে এমন কোনও ব্যবস্থা নেয়নি পদ্ম শিবির। তাই ভোট মিটলেই তাঁর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হতে পারে বলেই মনে করছে বাংলার রাজনীতির কারবারিরা।
বিধায়ক বিষ্ণুপ্রসাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিয়ে দ্বিমত রয়েছে রাজ্য বিজেপিতে। এক রাজ্য নেতার কথায়, ‘‘বিষ্ণুপ্রসাদ শর্মাকে গুরুত্ব দেওয়ার কোনও প্রয়োজন নেই। ওঁর সমর্থন ছাড়াই বিজেপি দার্জিলিং লোকসভায় জিতবে। দলের নেতারা তাঁকে অনুরোধ করেছিলেন, ভোটে না লড়তে। কিন্তু তিনি তা শোনেননি। বরং একরোখা মনোভাব দেখিয়ে নির্দল হিসাবে লড়াই করেছেন। ওঁর বিরুদ্ধে কোনও ব্যবস্থা নিলে ওঁকে গুরুত্ব দেওয়া হয়ে যাবে। তাই ওঁকে অগ্রাহ্য করাই উচিত বলে আমাদের মনে হয়।’’
তবে রাজ্য বিজেপি নেতৃত্বের অন্য একটি অংশ মনে করছেন, বিষ্ণুপ্রসাদকে এখনই দল থেকে বার করে দেওয়া উচিত। কারণ, বিজেপি শৃঙ্খলাপরায়ণ দল। ওই দলের প্রতীকে জিতে তিনি যে আচরণ করেছেন, তা কোনও ভাবেই মেনে নেওয়া যায় না। আগামী দিনে যাতে দলে থেকে এমন কাজ কেউ না করতে পারেন, সে জন্য বিষ্ণুপ্রসাদকে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দেওয়া আবশ্যিক। তবে কোনও ক্ষেত্রে এই সংক্রান্ত বিষয়ে মন্তব্য করে নারাজ রাজ্য বিজেপির নেতারা। তাদের কথায়, এ বিষয়ে যা বলার বলবেন বিজেপি শীর্ষ নেতৃত্ব।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy