অমিত শাহ। —ফাইল চিত্র।
পশ্চিমবঙ্গে কত লোকসভা আসনে জিততে হবে, রাজ্যের বিজেপি নেতৃত্বকে সেই লক্ষ্যমাত্রা বেঁধে দিয়েছিলেন অমিত শাহ। ২০২৩ সালে বীরভূমের সিউড়িতে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেছিলেন, ‘‘৩৫ আসনে জয় চাই।’’ গত নভেম্বরে কলকাতার ধর্মতলার সভা থেকে বলেছিলেন, ৩৫ টপকে যেতে হবে। আর সম্প্রতি বাংলা সফরে এসে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী বলে গিয়েছেন, ‘‘৪২টি আসনেই পদ্ম ফোটাতে হবে।’’ কিন্তু দলের ‘অভ্যন্তরীণ হিসাব’ কী বলছে? কত আসনে জিততে পারে পদ্মশিবির? সেই সংখ্যা প্রকাশ করলেন স্বয়ং শাহ। বৃহস্পতিবার একটি সংবাদমাধ্যমে সাক্ষাৎকারে সেই সংখ্যা বলে দিয়েছেন তিনি।
দেশে এবং পশ্চিমবঙ্গে বিজেপি কেমন ফল করবে জানাতে গিয়ে শাহ জানান, তিনি ইতিমধ্যেই ১৬৩টি আসনে সফর করেছেন। তার অভিজ্ঞতা জানিয়ে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘‘দেশের কোণে কোণে নরেন্দ্র মোদীকে সমর্থন দেওয়ার জন্য মানুষ অপেক্ষায় রয়েছেন। তার ভিত্তিতেই বলছি, ৩৭০ আসনে আমরা জিতব। ৪০০ পার করবে এনডিএ। এই লক্ষ্য বাস্তবিক তো বটেই সেই সঙ্গে দেশবাসীকে বলব, আপনাদের মনে যে ভালবাসা রয়েছে, তা ভোটে দেখিয়ে দিন। দেখতে দেখতে ৪০০ পার হয়ে যাবে।’’
সাক্ষাৎকারে দেশের নানা প্রসঙ্গ এলেও বেশি সময়ই শাহ খরচ করেছেন বাংলা নিয়ে। সন্দেশখালি প্রসঙ্গে কথা বলার সময়েই তিনি বলেন, ‘‘আমি গোটা দেশকে বলব, বাংলার পাশে দাঁড়ানো দরকার। বাংলার মতো একটা সীমান্তবর্তী রাজ্যকে গুরুত্ব দিয়ে দেখা দরকার।’’ সেই সঙ্গেই তিনি বলেন, ‘‘গত ভোটে আমরা ১৮টায় জিতেছিলাম। এ বার ২৫ আসন পার করে এগিয়ে যাব। আমাদের দু’জন বিধায়ক ছিলেন। এখন ৭৭ হয়েছে। আমরা মজবুত বিরোধীর ভূমিকায় রয়েছি। পশ্চিমবঙ্গে দুর্নীতির সরকার চলছে। পশ্চিমবঙ্গে ধর্মের ভিত্তিতে তোষণের সরকার চলছে। দেশের সুরক্ষার জন্যই পশ্চিমবঙ্গে বদল দরকার।’’
কেন বাংলার সুরক্ষা বিঘ্নিত, তা বোঝাতে গিয়ে শাহ ব্যাখ্যা করে বলেন, ‘‘বাংলা একটি সীমান্তবর্তী রাজ্য। আমরা সবাই জানি, অনুপ্রবেশের সমস্যা এখন দেশের একটি রাজ্যেই রয়ে গিয়েছে। আমি পুরো বিশ্বাস এবং তথ্য অনুযায়ী বলছি, বাংলায় সরকারি মদতে অনুপ্রবেশ চলছে। এ নিয়ে কোনও দ্বিমত নেই। নিজেদের ভোট ব্যাঙ্ক মজবুত রাখতে, ভোট ব্যাঙ্ক বড় করতে জাতীয় সুরক্ষার পরোয়া করা হচ্ছে না। এটা খুব বড় সমস্যা। বাংলার মানুষও সেটা জানেন।’’
সন্দেশখালিতে ইডির উপরে হামলা প্রসঙ্গেও রাজ্য সরকারের নিন্দা করেন শাহ। তিনি বলেন, ‘‘আপনাদের মুখোশ খুলে গিয়েছে! আপনারা আইনের সঙ্গে থাকছেন না, কারও কোনও কিছু বলার থাকলে আদালতে গিয়ে রক্ষাকবচ নিয়ে আসুন। তদন্তে সহযোগিতা করুন।’’
বাংলা-সহ গোটা দেশেই বিরোধীদের অভিযোগ বিজেপি ইডি, সিবিআইকে রাজনৈতিক কারণে ব্যবহার করছে। এর জবাব দিতে গিয়ে শাহ বৃহস্পতিবার বলেছেন, ‘‘জনতা সব দেখছে। বাংলায় কারও ঘর থেকে ৫২ কোটি টাকা পাওয়া গেল, ঝাড়খণ্ডে কারও বাড়িতে নগদ ৩৫৫ কোটি টাকা পাওয়া গেল! টাকা গুনতে গুনতে ২৫টা মেশিন গরম হয়ে গিয়েছিল। তার পরেও বলবে আমাদের বিরুদ্ধে পদক্ষেপ কোরো না!’’
সন্দেশখালি প্রসঙ্গে শাহ আক্রমণ করতে ছাড়েননি বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কেও। তিনি বলেন, ‘‘সন্দেশখালির ঘটনা বাংলার সরকারের মুখোশ ১০০ শতাংশ খুলে দিয়েছে। এক জন মহিলা মুখ্যমন্ত্রীর শাসনে যে ভাবে ধর্মের ভিত্তিতে মহিলাদের শোষণ হয়েছে, তা সহ্য করা যায় না। আমরা লড়ব, বাংলায় পরিবর্তন এনে ছাড়ব।’’ এর পরেই তিনি ভোট চাওয়ার ভঙ্গিতে বলেন, ‘‘মোদীজিকে রাজ্য থেকে বেশি শক্তি দিন। আমরা সোনার বাংলা বানাব।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy