প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অধীর চৌধুরী। — ফাইল চিত্র।
শাসকদলের অঙ্গুলি হেলনে জেলা প্রশাসন তাঁর সাংসদ এলাকা উন্নয়ন তহবিলের কাজ আটকে দেওয়ার চেষ্টা করছে, বহরমপুরের সাংসদ অধীর চৌধুরী এমনই অভিযোগ তুলেছেন। তাঁর অভিযোগ, শাসক দলের কথায় জেলাশাসক এবং জেলা প্রশাসন নানা টালবাহানা করে তাঁর সাংসদ এলাকা উন্নয়ন তহবিলের অর্থ খরচে বাধা দিচ্ছে। শুধু তাই নয়, একাধিক প্রকল্প জেলাশাসক বিনা কারণে বাতিল করে দিয়েছেন বলে অভিযোগ তুলেছেন। ইতিমধ্যে অধীর জেলাশাসক থেকে শুরু করে কেন্দ্রের তথ্য ও পরিসংখ্যান ও কর্মসূচি রূপায়ণ মন্ত্রকে চিঠি দিয়ে এ বিষয়ে পদক্ষেপের আবেদন জানিয়েছেন। জেলাশাসক অবশ্য পরিষ্কার জানিয়েছেন, ‘‘সাংসদ ভুল বলছেন।’’
সূত্রের খবর, অধীর চৌধুরী তাঁর সংসদ এলাকা উন্নয়ন তহবিলের ২২ কোটি ৫০ লক্ষ টাকার মধ্যে ২২ কোটি ৪৯ লক্ষ ৬৩৯৪ টাকার প্রকল্পের প্রস্তাব জেলা প্রশাসনের কাছে জমা দিয়েছেন। তার মধ্যে প্রায় ১২ কোটি টাকার প্রকল্পের অনুমোদন দিয়েছে জেলা প্রশাসন। বাকি টাকার কাজের এখনও অনুমোদন দেয়নি।
তবে মঙ্গলবার সন্ধ্যায় মুর্শিদাবাদের জেলাশাসক রাজর্ষি মিত্র বলেন, ‘‘তিনি (বহরমপুরের সাংসদ) ভুল বলছেন। সাংসদ এলাকা উন্নয়ন তহবিলের অর্থ খরচের যে নিয়ম রয়েছে তা মেনে যে সব প্রকল্পের অনুমোদন দেওয়া যায় সেগুলোর অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। আর যেগুলির অনুমোদন দেওয়া যায় না, সেগুলির অনুমোদন দেওয়া হয়নি। ইচ্ছাকৃত ভাবে কোনও কাজ আটকে রাখার অভিযোগ ঠিক নয়।’’
জেলা তৃণমূল সভাপতি অপূর্ব সরকার বলেন, ‘‘এত দিন তাঁর সাংসদ এলাকা উন্নয়ন তহবিলের টাকা কোথায় ছিল? ভোট আসতে মনে পড়েছে? আমরা তো দেখছি তিনি প্রতিদিন ফিতে কেটে ছবি ছাড়ছেন। তা হলে বাধা দিল কোথায়?’’
দু’দিন আগেই সাংবাদিক বৈঠকে তাঁর সাংসদ এলাকা উন্নয়ন তহবিলের অর্থ খরচের নথিপত্র দেখিয়ে অধীর চৌধুরী বলেন, ‘‘আমার সাংসদ এলাকা উন্নয়ন তহবিলের কাজ আটকে দেওয়ার চেষ্টা হচ্ছে। বছরের পর বছর আটকানোর পরেও যখন আটকাতে পারছে না কোনও গ্রাউন্ডে, যখন আমি সাংসদ এলাকা উন্নয়ন তহবিলের নিয়ম মেনে বাধ্য করছি এখানকার প্রশাসনকে যে আইন মেনে আপনাদের কাজ করতেই হবে। তখন সেখানেও সেই আইনকে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়ে নানা রকমের টালবাহানা করে আমার কয়েক কোটি টাকা খরচ করতে দিচ্ছে না। অনেক কাজ এখানকার জেলাশাসক বাতিল (রিজেক্ট) করে দিয়েছেন।’’
অধীরের দাবি, ‘‘তৃণমূলের অঙ্গুলি হেলনে এই সব কাজ রিজেক্ট হচ্ছে। সাংসদ এলাকা উন্নয়ন তহবিলের টাকা মানুষের উন্নয়নের কাজে খরচ করতে হয়। সেই টাকা খরচ করবার অধিকারটাও আমার কাছ থেকে কেড়ে নেওয়া হচ্ছে। যখন আমি এই প্রশাসনকে বাধ্য করছি একের পর এক প্রকল্প স্থাপন করতে গিয়ে, এরা আতঙ্কে ভুগছে। এতদিন আমার টাকাটা জবরদস্তি আটকে রেখে প্রমাণ করার চেষ্টা করত, অধীর চৌধুরী কাজ করে না। সে অদক্ষ। আর যখন নিরুপায় হয়ে টাকা খরচ করতে হচ্ছে তখন তৃণমূলের অঙ্গুলি হেলনে নতুন নতুন বাহানা দিয়ে সেই কাজকে আটকানোর চেষ্টা করছে। এটা নিয়ে আমি নির্বাচন কমিশনের কাছে অভিযোগ জানাব। অনেক কাজ শুরু করে দিয়েছি, এখনও অনেক কাজ আটকে আছে। আজ না হয় কাল এই কাজ করব। নিয়ম হচ্ছে ৪৫ দিনের মধ্যে সব ক্লিয়ার করে দিতে হবে। আমি আড়াই মাস আগে প্রস্তাব দিয়েছি। কিন্তু অনুমোদন দিচ্ছে না।’’
জেলা প্রশাসনের এক আধিকারিক জানিয়েছেন, সাংসদ এলাকা উন্নয়ন তহবিলের টাকা খরচের জন্য প্রকল্প জমা দেওয়ার ৪৫ দিনের মধ্যে অনুমোদন দিতে হয়। সেই প্রকল্প পাওয়ার পর সেগুলি কতটা কার্যকরী তা দেখতে হয়। তিনি বহু জল প্রকল্পের জন্য প্রকল্প দিয়েছেন। আমরা জনস্বাস্থ্য কারিগরি দফতরকে দিয়ে খোঁজ নিয়ে দেখেছি অনেক জায়গায় জনস্বাস্থ্য কারিগারি দফতর জলপ্রকল্প করছে। ফলে যেখানে প্রয়োজন নেই জল প্রকল্পের সেখানে অনুমোদন দেওয়া হয়নি।
দাবি, সেই সঙ্গে তিনি প্রকল্পের প্রস্তাব দিলেও যেখানে প্রকল্প হবে সেখানকার জমির মালিকের এনওসি নেই। ফলে নিয়ম মেনেই তাঁর বহু প্রকল্পের যেমন অনুমোদন দেওয়া হয়েছে, তেমনই বেশ কিছু প্রকল্পের অনুমোদন দেওয়া হয়নি। সাংসদ যে অভিযোগ তুলেছেন সেটা ঠিক নয়।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy